নিরপরাধ হাজতিরা জড়িয়ে পড়ছেন অপরাধে!

বিচারাধীন কারাবন্দির দিক থেকে এশিয়ায় শীর্ষে বাংলাদেশ। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা কমনওয়েলথ হিউম্যান রাইটস ইনিশিয়েটিভ সিএইচআরআইয়ের গবেষণায় উঠে এসেছে এমন তথ্য। তারা বলছে, দেশের ৬৮টি কারাগারে মোট বন্দির ৮০ শতাংশই বিচারাধীন আসামি। এ জন্য মামলাজট ও রাজনৈতিক সংকটকে দায়ী করছেন আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মীরা।

বন্দিতে ঠাসা দেশের কারাগারগুলো। দিনকে দিন বাড়ছে কারাবন্দির সংখ্যা। যার মধ্যে আদালত থেকে দণ্ডিত দাগি কয়েদি যেমন রয়েছেন, তেমনি বিচারের অপেক্ষায় নিরপরাধ হাজতিরাও রয়েছেন।

সিএইচআরআইয়ের গবেষণা বলছে, বিচারাধীন বন্দির সংখ্যায় এশিয়ার মধ্যে শীর্ষে বাংলাদেশ, বিশ্বে যা পঞ্চম। তারা বলছেন, কারাগারে সর্বোচ্চ ৩৪ শতাংশ বিচারাধীন বন্দি থাকার নিয়ম থাকলেও বাংলাদেশে তা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮০ শতাংশে।

হাজতি বন্দির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার পেছনে মামলাজট এবং রাজনৈতিক সংকটকে দায়ী করেছেন আইনজীবীরা।

কোর্টের আইনজীবী শাহীনুজ্জামান শাহীন বলেন, পুলিশ প্রশাসনের তদন্ত কার্যক্রম নির্দিষ্ট সময়ে হলে এত সংখ্যক বন্দি থাকার কথা নয়।

অপরাধ প্রমাণের আগে দোষী বলা যায় না–আইনে এমনটি বলা আছে। মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, নিরপরাধ হাজতিরা দাগি আসামির সংস্পর্শে থাকার কারণে বাইরে এসে অপরাধে জড়িয়ে পড়ছেন–এমন ঘটনা ঘটছে অহরহ।

এ বিষয়ে মানবাধিকারকর্মী ও আইনজীবী ফৌজিয়া করিম ফিরোজ বলেন, লিগ্যাল সিস্টেমে দেখা যাচ্ছে যে মানবাধিকারটা লঙ্ঘন করা হচ্ছে। কোনো না কোনোভাবে আসল দোষী ঠিকই বেরিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু নিরপরাধ ব্যক্তি বের হতে পারছেন না!

সাবেক উপ-কারা মহাপরিদর্শক শামসুল হায়দার সিদ্দিকীর মতে, বিচারক ও আদালতের সংখ্যা বাড়ালে কমবে হাজতির সংখ্যা।

তিনি বলেন, দেখা যাচ্ছে যে একই মামলা মাসের পর মাস, বছরের পর বছর ধরে চলতে থাকে। বিচার প্রক্রিয়ার এই দীর্ঘসূত্রতার কারণে জটিলতা বাড়ছে।

দ্রুততম সময়ে ন্যায়বিচার পাওয়া নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। তাই নির্ধারিত সময়ে মামলার বিচারকাজ নিষ্পত্তির তাগিদ বিশেষজ্ঞদের।

এসএইচ-১২/২৪/২২ (অনলাইন ডেস্ক, সূত্র : সময়)