সরকার নির্ধারিত মূল্যে চিনি বিক্রি করছেন না ব্যবসায়ীরা

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বেঁধে দেয়া দামে চিনি বিক্রি করছেন না পাইকার ও খুচরা বিক্রেতারা। রাজধানীর বাজারে নির্ধারিত দামের চেয়ে কেজিপ্রতি ৬ টাকা বেশি দামে চিনি বিক্রি হচ্ছে। এ বিষয়ে বিক্রেতারা বলেন, পাইকারি বাজারে দাম না কমায় খুচরা বাজারে কমেনি। তবে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর বলছে, দাম বেশি রাখা বেআইনি। এ ক্ষেত্রে আইনের ব্যত্যয় ঘটলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আর্থিক জরিমানাসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বৃহস্পতিবার  ভোক্তা পর্যায়ে চিনির দামের লাগাম টানতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দাম নির্ধারণ করে দেয়। তাতে প্রতি কেজি খোলা চিনির দাম ৮৪ টাকা ও প্যাকেটজাত চিনির দাম ৮৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়। রোববার  থেকে এ নির্দেশনা কার্যকরের কথা থাকলেও খুচরা বাজারে তার প্রভাব পড়েনি।

বিক্রেতাদের দাবি, পাইকারদের কাছ থেকে কেজিপ্রতি খোলা চিনি ৮৮ টাকায় ও প্যাকেটজাত চিনি ৯২ টাকায় কেনায় বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। আবার কেউ কেউ বলছেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত দামে চিনি বাজারে না আসায় তারা দাম কমাতে পারছেন না।

এ বিষয়ে একজন খুচরা বিক্রেতা বলেন, ‘খোলা চিনি আমরা ৮৭ টাকা দিয়ে কিনি। এ ছাড়া ৯২ টাকা দরে ডিলার থেকে প্যাকেটজাত চিনি কিনি আর বিক্রি করি ৯৫ টাকায়। গায়ের মূল্যও ৯৫ টাকা। আমার কাছে স্লিপ আছে।’

বেশি দামে চিনি বিক্রি করার বিষয়ে এক চিনি বিক্রেতা বলেন, ‘আমাদের আগের কেনা পণ্য এখনো আছে। সেগুলো তো বেশি দাম দিয়ে কেনা। এখন আগের দামেই তো আমাদের বিক্রি করতে হবে। এ ছাড়া প্যাকেটজাত চিনির দাম এখনও কমেনি। আগেও গায়ের মূল্য ৯৫ টাকা ছিল। এখনও তা-ই আছে।’

আরেক খুচরা বিক্রেতা বলেন, ‘শনিবার রাতে পাইকারি দরে আমি প্রতি কেজি চিনি ৮৮ টাকায় কিনেছি। তাহলে আমি ৯০ টাকার কমে কীভাবে বিক্রি করব। আমার তো ২ টাকা লাভ করতে হবে।’

এদিকে পাইকাররা বলছেন, মৌলভীবাজারে দাম না কমায় তাদের পক্ষেও কম রাখা সম্ভব হচ্ছে না। এ প্রসঙ্গে এক পাইকারি চিনি বিক্রেতা বলেন, ‘খোলা চিনি কিনতে পাইকারিতেই ৮৮ টাকা পড়ছে। প্যাকেটজাত চিনির দাম পাইকারিতে ৯১ টাকা। সে ক্ষেত্রে আমাদের পক্ষে সরকার নির্ধারিত দরে চিনি বিক্রি করা সম্ভব নয়।’

এ অবস্থায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত দাম মনিটরিংয়ে রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে অভিযান চালায় ভোক্তা অধিদফতর। তারা বলছেন, দাম সমন্বয়ে আরও দু-এক দিন লাগতে পারে। যেসব প্যাকেটের গায়ে দাম বেশি, তা সরিয়ে ফেলতে বিক্রেতাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

অভিযানকালে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মাগফুর রহমান বলেন, ‘আগের কেনা পণ্য দ্রুত সরকারি নির্ধারিত মূল্যে বিক্রির নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আমরা আজ ব্যবসায়ীদের সতর্ক করেছি। তারা যদি সরকার নির্ধারিত মূল্যের বেশি দামে চিনি বিক্রি করেন, তাহলে তাদের লাইসেন্স প্রত্যাহার, দোকান বন্ধ করার পাশাপাশি আইনানুগ পদক্ষেপ নেয়া হবে।’

নির্ধারিত দামের চেয়ে কেউ যাতে বেশি দরে চিনি বিক্রি করতে না পারে, সে জন্য অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানায় ভোক্তা অধিদফতর।

এসএইচ-০৬/২৫/২২ (অনলাইন ডেস্ক)