বৈশাখকে ঘিরে রাজশাহীতে উৎসবের আমেজ

রাত পোহালেই বাঙ্গলা ও বাঙ্গালীর সার্বজনীন লোক উৎসব পহেলা বৈশাখ। ১৪৩০ বাংলা বর্ষবরণের প্রস্তুতি শেষ প্রান্তে। বাঙ্গালী ঐতিহ্যের নানান রং আর রূপ নিয়ে বৈশাখ দুয়ারে কড়া নাড়ছে। ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথেই নানা বয়সের মানুষ বেরিয়ে পড়বেন উৎসবকে বর্ণিল করে তোলার জন্য। পুরাতন বছরের জীর্ণতা আর ক্লান্তির অবসান ঘটিয়ে নতুন উদ্যোমে আরেকটি নতুন বছরের পথ চলা শুরু করবেন সকলে।

জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের রয়েছে নানা আয়োজন। উৎসবে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও। এরইমধ্যে রাজশাহীকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে। সর্বাত্মক সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।

দিনটির জন্য নিজেকে সতন্ত্র ও নতুন ভাবে উপস্থাপন করতে ব্যাকুল হয়ে পড়েছে তরুণ-তরুণীরা এমনকি শিশুসহ ছেলে-বুড়ো সবাই। ঈদ ও পূজোর মতোই নতুন কাপড় কেনার ধুম পড়েছে দোকান গুলিতে। বাংলার ঐতিহ্য কুলা, ঢেঁকি, মাথল, ডুগি, তবলা, একতারা অংকন করা লালপেড়ে সাদাশাড়ি, ফতুয়া, পাঞ্জাবী ও গামছা কিনতে প্রধান প্রধান মার্কেটগুলিতে যেন ঢল নেমেছে। এদিক থেকে মাঝ বয়সিরাও পিছিয়ে নেই বৈশাখী উৎসবের আয়োজন থেকে। তারাও কিনছেন সাধ্যমত পোশাক।

সবমিলিয়ে বৈশাখকে বরণকে উৎসবে পরিনত করতে অনেকটাই প্রস্তুত বিভিন্ন এলাকা। বিনোদন বেন্দ্রগুলোও প্রস্ততি নিয়েছে দর্শনার্থীদের উৎসবে যেনো কোন ধরনের সমস্যায় না পড়েন। বিশেষ করে শহীদ জিয়া শিশু পার্ক, শহীদ এএই্চএম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা, পদ্মা নদীর পাড়ের বিভিন্ন রেস্তরায় বিনোদন পিপাসুদের ভিড় জমবে।

বৈশাখকে ঘিরে মার্কেটগুলো পুরুষের চাইতে নারীদের বেশি দেখা গেছে। কাপড়ের দোকান, ফুলের দোকান ও জুতার দোকানে নারী ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। মানুষের ভিড়ে সাহেব বাজারে ব্যাপক যানযটের সৃষ্টি হয়। দীর্ঘ সময় মানুষকে যানযটের মধ্যে আঁটকা পড়ে থাকতে হয়। ক্রেতারা বাংলা নববর্ষকে স্বাগত জানাতে পছন্দের ফুল ও পোশাক কিনছেন। পিছিয়ে ছিল না শিশুরাও বড়দের পাশাপাশি ছোট শিশুরাও বাবা-মায়ের সাথে বাজারে গিয়ে পছন্দের পোশাক কিনেছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদ ও এবারের বৈশাখে বেচাবিক্রি মোটামুটি ভালই হচ্ছে। রঙ্গ ও কাপড়ের বুননের উপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে ক্রেতারা। এই সময়টায় গরম থাকে আবার নতুন বছরের উৎসব বলে কথা। এসব বিবেচনা করে বৈশাখের রং লাল-সাদার পাশাপাশি, কমলা, মেরুন, গোলাপি, আকাশি, পেস্ট, জাফরান, রাণী গোলাপী, সবুজ, হলুদ প্রভৃতি রং প্রাধান্য পাচ্ছে। তবে বিগত সময়ের তুলনায় দাম কিছুটা বেশী।

মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে  বলা হয়, বর্ষবরণ উপলক্ষে এবার মহানগর এলাকায় তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এ লক্ষ্যে কাজ করছে। এছাড়া মহানগর এলাকায় সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বড় অনুষ্ঠানগুলোতে পুলিশ নির্দিষ্ট করা হয়েছে এবং শহরে ছোটখাটো অনুষ্ঠানগুলোতে ভ্রাম্যমাণ পুলিশ, র‌্যাব ও আনসার বাহিনী নজরদারি করবে। এছাড়া অনুষ্ঠানে আয়োজকদের নিজস্ব ভলেন্টিয়ার এবং সম্ভব হলে সিসি ক্যামেরা ব্যবহারের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

এসএইচ-০১/১৩/২৩ (সুমন হাসান)