আসছে ৩০ লাখ ডোজ ফাইজার ভ্যাকসিন, দেওয়া হবে ৪র্থ ডোজ

নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ প্রতিরোধী ৩০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন আসছে দেশে। বৈশ্বিক ভ্যাকসিন বিতরণের উদ্যোগে কোভ্যাক্সের আওতায় ১১ মে’র মধ্যে কোভিড-১৯ এর সর্বশেষ ভ্যারিয়েন্ট প্রতিরোধী ফাইজারের এই ভ্যাকসিন দেশে আসবে। এরই মাঝে দেশে এসে পৌঁছেছে ১১ লাখ ৫ হাজার ৯২০ ডোজ ভ্যাকসিন। আর তাই খুব দ্রুতই দেশে সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা চতুর্থ ডোজের ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু করা হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর ডা. সাঈদ জামান বলেন, “আমাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বৈশ্বিক টিকাদান কর্মসূচির আওতায় কোভ্যাক্স বাংলাদেশকে ইতোমধ্যেই প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে। প্রাথমিকভাবে ১ কোটি ১০ লাখ ৫ হাজার ৯২০ ডোজ ফাইজারের টিকাপ্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে এখন পর্যন্ত। এর মাঝে ১১ মে’র মধ্যে মোট ৩০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন আসবে।”

তিনি বলেন, ‘এই ৩০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিনের মাঝে ইতোমধ্যেই দুই চালানে দেশে ভ্যাকসিন এসে পৌঁছেছে। রোববার দুই ধাপে ৯২ হাজার ১৬০ ভায়েল ভ্যাকসিন আমরা রিসিভ করেছি। একটা ভায়েলে ছয় জনকে অর্থাৎ ছয় ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়া সম্ভব হবে। পাঁচ লাখ ৫২ হাজার ৯৬০ ডোজ করে দুই ধাপে সর্বমোট ১১ লাখ পাঁচ হাজার ৯২০ ডোজ ভ্যাকসিন দেশে এসেছে জার্মানি থেকে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভ্যাকসিন আসার পরে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরে সংশ্লিষ্ট কিছু কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে থাকেন। সেগুলো যাচাইবাছাই শেষে খুব দ্রুতই আবার চতুর্থ ডোজ ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।’

ডা. সাঈদ বলেন, ‘ভ্যাকসিন প্রয়োগের জন্য আমাদের আলাদাভাবে প্রস্তুতি নেওয়ার কিছু নেই। এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ- পরিকল্পনা-প্রস্তুতি সবই নেওয়া আছে। তারপরেও যদি বিশেষজ্ঞরা মনে করেন ট্রায়াল রান দেওয়া প্রয়োজন তবে সেই হিসেবে পরিকল্পনা করা হবে। এই ভ্যাকসিন দিয়ে শুধু চতুর্থ ডোজই দেওয়া হবে।’

তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯ সংক্রমণের নানা রকম ভ্যারিয়েন্টের বিষয়ে আলোচনা হয়ে থাকে। এর ফলে অনেকেই ভ্যারিয়েন্ট পাল্টালে ভ্যাকসিন কার্যকর থাকবে কিনা সে বিষয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে থাকেন। আর তাই ভ্যারিয়েন্টের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিশ্বব্যাপী ভ্যাকসিনেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। আমাদের নতুনভাবে আসা ফাইজারের এই ভ্যাকসিনগুলো ভ্যারিয়েন্ট স্পেসিফিক অর্থাৎ সর্বশেষ ধরনের বিরুদ্ধে কার্যকর। এটা ফাইজারের সর্বশেষ নতুন ধরন যা আমরা পাছি কোভ্যাক্সের মাধ্যমে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট সবল কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে চতুর্থ ডোজ দেওয়ার সময়সীমার ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে সবাইকে জানানো হবে। কেন্দ্রগুলোতেও নির্দেশনা চলে যাবে। আশা করছি খুব দ্রুতই আমরা সেই তারিখ ঘোষণা করে জানিয়ে দেবো।’

এর আগে, ২৭ ফেব্রুয়ারি মজুদ শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে ১ মার্চ থেকে দেশে নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ প্রতিরোধী ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজ (তৃতীয় ও চতুর্থ) সাময়িকভাবে স্থগিত করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। জানানো হয়, কোভ্যাক্স থেকে ভ্যাকসিন আসা সাপেক্ষে আবারও এ কার্যক্রম শুরু হবে। তবে কবে নাগাদ এই ভ্যাকসিন এসে পৌঁছাবে সেই বিষয়ে নিশ্চিত কোনো কিছু জানানো হয়নি।

এমন অবস্থায় বিপাকে পড়ে চতুর্থ ডোজ ভ্যাকসিন নিতে আগ্রহীরা। মোবাইলে এসএমএস পেলেও ভ্যাকসিন না থাকার কারণে কেন্দ্রে গিয়েও ফেরত আসতে হয় অনেককে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার পর্যন্ত দেশে করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ পেয়েছেন ১৫ কোটি সাত লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৬ ডোজ ভ্যাকসিন। এই সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৮৮.৫০ শতাংশ।

এর মাঝে ১৩ কোটি ৯৭ লাখ ৮১ হাজার ৪১২ ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে। ছয় কোটি ৭৪ লাখ ৬৮ হাজার ২৬৬ ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়া হয় তৃতীয় ডোজ বা প্রথম বুস্টার হিসেবে। এছাড়া ৩১ লাখ ৫৭ হাজার ৭৫ ডোজ ভ্যাকসিনের চতুর্থ ডোজ হিসেবে প্রয়োগ করা হয়েছে।

এসএইচ-০২/০২/২৩ (অনলাইন ডেস্ক)