শিগগিরই গরম থেকে রেহাই মিলছে না

People take rest under a shed during a countrywide heat wave amid power cuts in Dhaka, Bangladesh, June 6, 2023.REUTERS/Mohammad Ponir Hossain

বাংলাদেশের ওপর দিয়ে ভয়াবহ তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এতে চলতি সপ্তাহে দেশটিতে প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ হয়ে গেছে। সেই সঙ্গে ঘন ঘন লোডশেডিং হচ্ছে। ফলে নিজেদের ঠাণ্ডা করতে ফ্যান চালাতে পারছেন না বাসিন্দারা। তাতে তাদের পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে।

আবহাওয়া কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছেন, শিগগিরই এ গরম থেকে রেহাই মিলছে না। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এতে বলা হয়, ১০ দিন আগে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেখান থেকে বেড়ে বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০৫ দশমিক ৮ ফারেনহাইট)।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সতর্ক করে বলেছে, শিগগিরই গরম কমছে না। বিজ্ঞানীরা বলছেন, গ্রীষ্মের মাসগুলোতে এদেশে আরও ঘন ঘন, তীব্র ও দীর্ঘতর তাপপ্রবাহে অবদান রাখছে জলবায়ু পরিবর্তন।

ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, আরও দুই সপ্তাহ বিদ্যুৎ বিভ্রাটের মুখোমুখি হতে পারে বাংলাদেশ। কারণ, জ্বালানি সংকটে কয়েকটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে। এর মধ্যে কয়লা চালিত সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্রও রয়েছে।

নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে জ্বালানি সংকট এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা বাজারে নজিরবীহিন ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমরা অপ্রত্যাশিত লোডশেডিংয়ের মুখোমুখি হচ্ছি।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে প্রায়শই বিদ্যুৎ বিভ্রাটে বাংলাদেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে পোশাক খাত, যা দেশটির মোট রপ্তানির ৮০ শতাংশ।

ঢাকার দোকানদার মিজানুর রহমান নামের বলেন, আবহাওয়ার চরম গরম। উপরন্তু দিনে কয়েক ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। এতে আমাদের অবস্থা আরও শোচনীয় হয়েছে।

তীব্র গরমে অসুস্থ হয়ে অনেকে চিকিৎসার শরণাপন্ন হচ্ছেন। দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের চিকিৎসক শফিকুল ইসলাম বলেন, এখন আমরা অনেক রোগী পাচ্ছি। যাদের অধিকাংশই হিট স্ট্রোকে ভুগছেন। এছাড়া তাপমাত্রাজনিত অন্যান্য সমস্যাও আছে।

এরই মধ্যে নাগরিকদের ঘরের মধ্যে থাকতে উৎসাহিত করেছেন কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে পান পানের পরামর্শ দিয়েছেন তারা। তবে দেশের অনেক স্থানে পানি স্বল্পতা দেখা গেছে।

৫২ বছর বয়সী রিকশাচালক মোহাম্মদ সুলতান বলেন, পানির অভাব ও তাপে আমাদের দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কোথাও গাছের পাতাও নড়ছে না। কোনো জায়গায় ছায়া নেই। ফলে রিকশা চালানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে।

৩৭ বছর বয়সী মুরগি বিক্রেতা মোহাম্মদ সুমন বলেন, অতিরিক্ত তাপমাত্রায় একদিনে আমার ২০টি মুরগি মারা গেছে। এক-দুই ঘণ্টা পর পর বিদ্যুৎ যাচ্ছে। আমি ঘুমাতেও পারছি না। এ অবস্থায় অসহায় হয়ে পড়েছি।

এসএইচ-০৫/০৭/২৩ (অনলাইন ডেস্ক)