নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করতে এবার ২৫ বছর মেয়াদি চুক্তি করতে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ। নেপালের বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের এক কর্মকর্তা এমনটি জানিয়েছেন। বাংলাদেশ থেকে নেপালের এই বিদ্যুৎ আসবে ভারত হয়ে। যখন ভারত-বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে এ নিয়ে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি সম্পাদিত হবে; তখনই নেপাল-বাংলাদেশ বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তিটি সই হবে। নেপালি সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্ট রোববার এ তথ্য জানিয়েছে।
এর আগে, মে মাসের মাঝামাঝি নেপাল ইলেক্ট্রিসিটি অথরিটি, বাংলাদেশ পাওয়ার ডেবেলপমেন্ট বোর্ড এবং ভারতের এনভিভিএন সচিব পর্যায়ে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি সইয়ের বিষয়ে সম্মত হয়। সেই সময় ভারতও নেপাল থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়ে নিজেদের সদিচ্ছার বিষয়ে মত দিয়েছিল। নেপালের প্রধানমন্ত্রী দহলের ভারত সফরের সময় এমন ইঙ্গিত দিয়েছিল নয়াদিল্লি।
বিদ্যুতের দাম নিয়ে দুই পক্ষ এখনো কোনো আলোচনা না করলেও, চুক্তির মেয়াদ চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এ কর্মকর্তা। এরমাধ্যমে দীর্ঘ সময়ের জন্য— বাংলাদেশে নেপালের বিদ্যুৎ রপ্তানির বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে।
নেপাল ইলেকট্রিসিটি অথরিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কুল মান ঘিসিং কাঠমান্ডু পোস্টকে বলেছেন, ‘আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে ২৫ বছর মেয়াদি বিদ্যুৎ চুক্তিতে সম্মত হয়েছি। বাংলাদেশের কাছে আমাদের প্রস্তাবের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
নেপাল ইলেকট্রিসিটি অথরিটির, শক্তি বাণিজ্য পরিচালক প্রবাল অধিকারী জানিয়েছেন, নেপালের প্রস্তাবের ভিত্তিতে বাংলাদেশ প্রথমে পাঁচ বছর মেয়াদি নবায়নযোগ্য চুক্তি করতে চেয়েছিল। বিদ্যুৎ খাতের অনিশ্চয়তার কারণে দীর্ঘ মেয়াদির বদলে স্বল্প মেয়াদি চুক্তিতে আগ্রহ দেখিয়েছিল ঢাকা।
তবে বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত ২৫ বছর মেয়াদি চুক্তি করতে সম্মত হয় বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কুল মান ঘিসিং। তিনি বলেছেন, ‘দাম ব্যতিত, অন্য সবকিছু নিয়ে আমরা সম্মত হয়েছি।’
অথরিটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ প্রথমে— বিদ্যুতের দাম বাদে— কারিগরি ও বাণিজ্যিক বিষয়গুলো নিয়ে সমাধানের আগ্রহ দেখায়। পরবর্তীতে দুই দেশ সেসব বিষয় নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছায়।
বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের নিদর্শন হিসেবে— বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ নিয়ে নেপাল আলোচনার পথ খোলা রেখেছে বলে জানিয়েছেন কুল মান ঘিসিং। তিনি বলেছেন, ‘বন্ধুত্বের অংশ হিসেবে আমরা ভালো একটি দাম প্রস্তাবের পরিকল্পনা করছি। কারণ এটি সরকার থেকে সরকারে মধ্যে একটি চুক্তি হবে। বর্তমানে বাংলাদেশে বিদ্যুতের যে দাম রয়েছে সেটি একটি উদাহরণ হিসেবে নেওয়া যেতে পারে। তবে দাম এখনো নির্ধারিত হয়নি।’
অপরদিকে ট্রান্সমিশন এবং সার্ভিস ফি— বাংলাদেশ সরাসরি ভারতের বিদ্যুত ভায়াপার নিগম লিমিটেডের (এনভিভিএন) কাছে প্রদান করবে বলে জানিয়েছেন প্রবাল অধিকারী।
তিনি আরও জানিয়েছেন, বর্তমানে ভারতের বিদ্যুৎ সরবরাহকারীরা এ সংস্থাটিকে যে পরিমাণ ফি দিয়ে থাকে বাংলাদেশকেও ওই একই অর্থ দিতে হবে। বর্তমানে যে পরিমাণ ফি নির্ধারিত আছে— সেটি অনুযায়ী ট্রান্সমিশনের জন্য বাংলাদেশকে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের জন্য ৪০ থেকে ৫৫ পয়সা (ভারতীয় রুপি) দিতে হতে পারে।
বাংলাদেশ-ভারত-নেপালের মধ্যকার এ ত্রিপক্ষীয় চুক্তিতে এনভিভিএনকেও রাখা হবে বলে জানিয়েছেন এ কর্মকর্তা।
এসএইচ-০৬/০৯/২৩ (অনলাইন ডেস্ক)