বেশ কিছুদিন ধরেই পাল্টাপাল্টি রাজনৈতিক কর্মসূচিতে উত্তাল রাজপথ। নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে দুই দলের অবস্থান দুই মেরুতে। ফলে নির্বাচনকে ঘিরে প্রতিনিয়ত বড় দুই রাজনৈতিক শক্তির সংঘাতের সম্ভাবনা বাড়ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ধরনের সংঘাত আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। এ কারণে আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক সমঝোতার তাগিদ তাদের।
একাদশ সংসদের মেয়াদ প্রায় শেষ। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকায় এ বছরের নভেম্বর থেকে আগামী বছরের জানুয়ারির মধ্যে হতে হবে নির্বাচন। ইসি বলছে, অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে। আর ভোট হতে পারে ডিসেম্বরের শেষ অথবা জানুয়ারির শুরুতে।
নির্বাচনকে সামনে রেখে এরই মধ্যে নিজেদের প্রস্তুতি শুরু করেছে রাজনৈতিক দলগুলো। আগের তুলনায় গত কয়েকদিনে রাজপথে বিএনপির উপস্থিতিও বেড়েছে। এরই মধ্যে রাজধানীতে দুটি বড় সমাবেশ করেছে দলটি। বিএনপির পাশাপাশি আওয়ামী লীগও রাজপথে তাদের শক্তি জানান দিচ্ছে।
এরমধ্যে, সরকারের পদত্যাগের একদফা দাবিতে আন্দোলনের অংশ হিসেবে গত শনিবার রাজধানীর প্রবেশমুখ গুলোতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। কর্মসূচি পালনের সময় পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়ায় বিএনপির নেতাকর্মীরা। এতে, ধালাইখাল ও মাতুয়াইল পরিণত হয় রণক্ষেত্রে। বিক্ষুব্ধ বিএনপি সমর্থকরা এ সময় কয়েকটি বাসে অগ্নিসংযোগও করেন।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ ধরনের সংঘাত আসন্ন নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে পারে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ বলেন, ‘এই অগ্নি সন্ত্রাস, এই হত্যা এই অগণতান্ত্রিক যে ভাংচুর ও ধ্বংসাত্মক কাজকর্ম এগুলো বাংলাদেশের মানুষ পছন্দ করেনা।’
এটি যদি অব্যাহত থাকে তাহলে সংঘর্ষ-সংঘাত অনিবার্য। এটি, আমার মনে হয়, আগামীতে আমাদের যে নির্বাচন আছে সেটিকে অবশ্যই প্রভাবিত করবে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আল মাসুদ হাসানুজ্জামান বলেন, ‘এটি যদি অব্যাহত থাকে তাহলে সংঘর্ষ-সংঘাত অনিবার্য। এটি, আমার মনে হয়, আগামীতে আমাদের যে নির্বাচন আছে সেটিকে অবশ্যই প্রভাবিত করবে।’
এরআগেও, ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ও পড়ে বিএনপির আন্দোলনের সময় সারাদেশে ব্যাপক ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। সেই নির্বাচনে বিএনপি শেষ পর্যন্ত অংশ নেয়নি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নানা কারণে বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনের দিকে নজর গোটা বিশ্বের। আন্তর্জাতিক চাপে নয়, দেশের স্বার্থেই রাজনৈতিক দলগুলোকে সংলাপে বসার তাগিদ তাদের।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক আক্তার হোসেন বলেন, ‘গতবারের ভোটের সময় দেখবেন কামাল হোসেনের নেতৃত্বেও কিন্তু সংলাপ হয়েছে। তারপর একটি আন্ডাস্ট্যান্ডিংয়ের পর নির্বাচন হয়েছে। ফর্মাল হোক বা ইনফর্মাল হোক, সংলাপ বা আলোচনা অবশ্যই হতে হবে।’
শনিবারের সংঘর্ষের ঘটনায় আহত বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে আপ্যায়ন করেছে ডিবি। এছাড়া কর্মসূচি চলার সময় অসুস্থ্য হয়ে পড়া আরেক বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমানের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেন প্রধানমন্ত্রী। এসব ঘটনাকে অনন্য উদাহরণ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকেরা।
এসএইচ-১৬/৩০/২৩ (অনলাইন ডেস্ক)