নারী খেলোয়াড়রা যৌন হেনস্থার শিকার

আফগানিস্তানের ক্রীড়া কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন যে নারী ফুটবলাররা যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। আর এটা শুধু ফুটবলেই সীমাবদ্ধ নয়।কোচ কিংবা অন্য কর্মকর্তাদের দ্বারা হেনস্থার বিষয়ে বেশিরভাগ নারী খেলোয়াড়রই প্রকাশ্যে কিছু বলছেনা ।

গার্ডিয়ান পত্রিকায় প্রকাশিত এক খবরে নারী ফুটবলারদের উপর পুরুষ সহকর্মী এমনকি দেশটির ফুটবল ফেডারেশনের প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধেও যৌন নিগ্রহের অভিযোগ তোলা হয়।দেশটির প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি এই ঘটনাকে খুবই ‘জঘন্য’ উল্লেখ করে যত দ্রুত সম্ভব পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন। এমনকি এই ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটিও গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

তবে সেখানকার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও বলছেন, এই সমস্যা শুধু ফুটবলেই না। আরো অন্যান্য খেলাতেও রয়েছে। কঠোর মানসিকতা আর জঙ্গিবাদের সঙ্গে লড়াই করে মেয়েরা এই পর্যায়ে এসেছে। আর সেখানেও তারা যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।বিগত কয়েকদিনে এই সব স্ক্যান্ডাল সামনে এসেছে। সেখানকার অ্যাটর্নি জেনারেলও বলেছেন তারা তদন্ত চালাবেন।

শুক্রবার ফিফা জানিয়েছে, জাতীয় মহিলা ফুটবল দলের একজন খেলোয়াড়ের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে তারা বিষয়টি তদন্ত করছে। পরে দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস থেকেও ঘটনার তদন্তের ঘোষণা দেয়া হয়। সোমবার বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি নিজেও।

ড্যানিশ প্রতিষ্ঠান হামেল ইতোমধ্যেই আফগান ফুটবল ফেডারেশনের স্পন্সরশিপ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সায়েদ আলিরেজা আকাজাদা ও তার সভাপতি কেরামুদ্দিন করিম। যদিও তারা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তার দাবি মেয়েদের যৌন হয়রানির কোনো ঘটনাটিই ঘটেনি।

সোমবার পার্লামেন্টের উভয় কক্ষেই বিষয়টি উঠে এসেছে। এরপর আরও বিস্ময়কর বক্তব্য দিয়েছেন আফগান অলিম্পিক কমিটির প্রধান হাফিজুল্লাহ রাহিমি। তিনি বলেন, যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটছে। এটা শুধু ফুটবলেই নয় অন্য ফেডারেশনগুলোতেও। আমাদের এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।

আর অভিযোগের বেশিরভাগই এসেছে আফগান নারী ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক খালিদা পপালের কাছ থেকে। তালেবান আমলে কিশোরী বয়সে ফুটবল খেলতে গিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়েছিলেন তিনি। পরে মৃত্যুর হুমকি পেয়ে দেশ ছেড়ে ডেনমার্কে বসবাস করতে শুরু করেন তিনি।

তিনি জানান, তিনি মেয়েদের কোচ ও ফেডারেশনের কর্মকর্তাদের দ্বারা শারীরিক ও যৌন হয়রানির শিকার হতে দেখেছেন। অনেক মেয়েই বিষয়টি তাকে জানিয়েছে। আর এ হয়রানির মধ্যে ধর্ষণ, যৌন স্পর্শ কিংবা হয়রানি সবই ছিলো।

তিনি বলেছেন দুজন কোচের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগের প্রমাণ সংগ্রহের পরেও কিছু না হওয়ায় তিনি হতাশ হন। তিনি জানান, তাদের শাস্তি দেয়ার বদলে প্রমোশন দেয়া হয়েছে। আফগানিস্তানে থাকা কয়েকজন স্বীকার করেছেন যৌন হয়রানির তিক্ত অভিজ্ঞতা তাদের হয়েছে। আর ঘটনাগুলো ঘটছে জাতীয় দলে জায়গা পাওয়ার লড়াইকে কেন্দ্র করে।

সম্প্রতি মেয়েদের ফুটবলকে উন্নত করার চেষ্টা করছে আফগানিস্তান। চার বছর আগে পুরোপুরি মেয়েদের একটি ফুটবল দল তৈরি করে তারা, যেটা পুরুষ ফুটবলারদের পাশাপাশি খেলবে। কিন্তু ২০১৭ সালে আবার ফান্ডের অভাবে এককোণে পড়ে যায় নারী ফুটবল টিম।

এসএইচ-১৮/০৬/১২ (স্পোর্টস ডেস্ক)