ওয়ানডে সিরিজি শুরু রোববার

দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করেছে বাংলাদেশ। স্বাভাবিকভাবেই ওয়ানডে সিরিজের আগে দলের আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে। সেই আত্মবিশ্বাসকে পুঁজি করেই রোববার বাংলাদেশ শুরু করতে যাচ্ছে ওয়ানডে সিরিজ। তবে এই দিবা-রাত্রির প্রথম ওয়ানডে নিয়ে বাংলাদেশের পরিকল্পনাটা একটু চমকপ্রদই। শনিবার ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা স্পষ্ট ইঙ্গিত দিলেন, বাংলাদেশ প্রথম ওয়ানডেটা খেলতে নামছে তিন পেসার নিয়ে।

ওয়ানডে ম্যাচে তিন পেসার হরহামেশাই খেলায় বাংলাদেশ। তারপরও এবারের এই তিন পেসার ‘থিউরী’টা একটু অন্য রকম লাগছে। কারণটাও স্পষ্টই-সদ্য শেষ হওয়া টেস্ট সিরিজ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চট্টগ্রামের প্রথম টেস্টটা বাংলাদেশ খেলেছে এক পেসার আর তিন স্পিনার নিয়ে। ঢাকায় দ্বিতীয় টেস্টে সেই ‘এক পেসারের আনুষ্ঠানিকতা’ও দেখায়নি। মিরপুরে খেলেছে ইতিহাসে প্রথম বারের মতো ৪ স্পিনার নিয়ে।

তাতে অবিশ্বাস্য সাফল্যও মিলেছে। ইতিহাসে প্রথম বারের মতো বাংলাদেশ পেয়েছে ইনিংস ব্যবধানে জয়ের স্বাদ। সেই একই প্রতিপক্ষ। সেই একই ভেন্যু। ফরম্যাট শুধু আলাদা। টেস্টের পরিবর্তে ওয়ানডে। তাতেই পরিকল্পনা পুরো বিপরীত। শুন্য পেসারের পরিবর্তে তিন পেসার! মাশরাফি তিন পেসার ফর্মূলার ব্যাখ্যাটাও দিয়েছেন। আর সেই ব্যাখ্যায় কারণ হিসেবে তিনি সামনে নিয়ে আসলেন ‘ডিউ ফ্যাক্টর’ তথা শিবিরের বিষয়টি।

ম্যাচটা যেহেতু দিবা-রাত্রির। উইকেটে শিবির পড়বেই। আর শিশিরের মধ্যে স্পিন তেমন সহায়ক নয়। মাশরাফি সবিস্তারে তুলে ধরলেন সেটাই, ‘আসলে যখন ডিউ (শিশির) থাকবে, তা কতটা প্রভাব ফেলবে সেটি কিন্তু বড় ব্যাপার। এই সময়ে দিবা-রাত্রির ম্যাচে শিবিরের প্রভাবটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। স্পিনাররা কতটা সাহায্য পাবে, সেটিই দেখার বিষয়।’

তিন পেসার নিয়ে যে বাংলাদেশ অনেক সাফল্য পেয়েছে, সেই যুক্তিও তুলে ধরলেন মাশরাফি, ‘আমাদের পেস বোলারও ভালো সাহায্য করছে। সেই ২০১৫ সাল থেকে দেখেন, আমরা একটা ছন্দে খেলছি। আমরা সব সময়ই তিন পেসার নিয়ে খেলেছি। এমনকি কখনো কখনো ৪ পেসার নিয়েও খেলেছি। তাছাড়া টেস্ট ম্যাচের উপর নির্ভর করে তো আপনি ওয়ানডে খেলতে পারবেন না। আমরা তিনজন পেসার খেলাতে চাই, এটা নিশ্চিত।’

এখানেই শেষ নয়। তিন পেসার পরিকল্পনার পেছনে মাশরাফি যুক্তি দিয়েছেন আরও। এখন ওয়ানডেতে ৪০ ওভার পর্যন্ত পাওয়ার প্লে থাকে। সে কথাও মনে করিয়ে দিলেন মাশরাফি, ‘একটা সুবিধা হলো, আমরা তিন পেসার নিয়ে ফ্ল্যাট উইকেটেও ভালো করেছি। আর ওয়ানডেতে স্পিনের অসুবিধা হলো, এখন ৪০ ওভার পর্যন্ত পাওয়ার প্লে থাকে। ফাস্ট বোলিং থাকলে হয় কী, আপনি একটা জায়গা আটকে রেখে বল করতে পারেন। ওয়ানডেতে সবাই শট খেলতে চাইবে, রান করতে চাইবে। তা যাই হোক। সাকিব-মিরাজ অসাধারণ করছে। অপুও (নাজমুল ইসলাম) ভালো করছে। কিন্তু একটু খেয়াল করলে দেখবেন, এমনকি ফ্ল্যাট উইকেটেও কিন্তু আমাদের সাফল্যের হার পেস বোলারদেরই বেশি।’

বোঝাই যাচ্ছে ‘তিন পেসার’ পরিকল্পনায় অধিনায়ক মাশরাফি অটল। তবে কোন তিনজন খেলবেন, সেটা স্পষ্ট করেননি মাশরাফি। ওয়ানডের জন্য ঘোষিত ১৬ সদস্যের দলে স্পেশাল্টি পেসার ৪ জন। মাশরাফি, মোস্তাফিজ, রুবেল ও আবু হায়দার রনি। তাদের সঙ্গে আছেন পেস অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। তবে ধারণা করা হচ্ছে অধিনায়ক মাশরাফির সঙ্গে মোস্তাফিজ ও রুবেলের খেলার সম্ভাবনাই বেশি।

এসএইচ-১০/০৮/১২ (স্পোর্টস ডেস্ক)