ক্রিকেটার চামেলী হাসপাতলের ছাড়পত্র পেয়েছেন, ফিরছেন মঙ্গলবার

বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের সাবেক খেলোয়াড় চামেলী খাতুনকে ভারতের ব্যাঙ্গালুরুর স্পর্শ বেসরকারি অর্থপেডিক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ছাড়পত্র দিয়েছেন। শনিবার তাঁকে এই ছাড়পত্র দেয়া হয়। আগামী ১১ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বেসরকারি বিমান জেট এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে বিকেল নাগাদ তিনি দেশে ফিরবেন। পরের দিন বুধবার সকালে ফিরবেন নিজ শহর রাজশাহীতে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন চামেলীর ভাগ্নি মুশফিকা রোজি।

তিনি ডা. প্রশান্ত তেজওয়ানি বরাত দিয়ে জানান, রোগির সকল বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন। বর্তমানে পায়ের পরিস্থিতি উন্নতির দিকে রয়েছে। তবে সেলাই কাটতে আরো দুই সপ্তাহ সময় লাগবে। স্থানীয়ভাবে তা করার ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছেন ডা. প্রশান্ত। পুরোপুরি সেরে উঠতে আরও ছয় মাস লাগবে। এক বছরের মধ্যে মাঠে ফিরতে পারবেন পদ্মা পাড়ের মেয়ে চামেলী। এ সময়ের মধ্যে তাঁকে নিয়মিত ওষুধ সেবন করতে হবে। সেই সাথে কিছু ফিজিওথেরাপি করাতে বলেছে তা নিতে হবে।

রোজি জানান, আগামী ১০ ডিসেম্বর রাজশাহী ফেরার কথা থাকলেও প্লেনের টিকেট কনফার্ম না হবার কারনে তা হচ্ছে না। ১১ ডিসেম্বর মঙ্গলবার তাঁরা ব্যাঙ্গালুর ছাড়বেন সকাল ৮ টা ২০মিনিটে। এ দিন বিকেল নাগাদ দেশের ঢাকা হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে পৌছাবেন। পরের দিন ১২ ডিসেম্বর বুধবার সকাল সাড়ে ১১টার নাগাদ রাজশাহী হযরত শাহমুখদুম বিমান বন্দরে পৌছাবেন। এই কয়দিন সোয়েতা গেস্ট হাউজে থাকবেন তারা।

চামেলী জানান, তিনি আগের তুলনায় অনেক সুস্থ্যবোধ করছেন। চিকিৎসকের পরামর্শে ধীরে ধীরে চলাফেরার চেষ্টাও করছেন এবং পারছেন। তাঁর সঙ্গে ভারতে অবস্থান করছেন তার বড় বোনের মেয়ে মুশফিকা রোজি এবং বোনের ছেলে মোহাম্মদ রায়হান।

ভারতের ব্যাঙ্গালুরুর শীর্ষ পর্যায়ের স্পর্শ বেসরকারি অর্থপেডিক হাসপাতালে রাজশাহীর মেয়ে চামেলীর ডান পায়ের লিগামেন্টের অস্ত্রোপচার হয়েছে সপ্তাহ খানেক আগে। অস্ত্রোপচার শেষে হাসপাতালের ঠিক দক্ষিণে দুই মিনিটের হাঁটা পথে সোয়েতা গেস্ট হাউজে থেকেই প্রতিদিনের ড্রেসিং আর এই কয়দিনের সুষ্ঠু চিকিৎসা নেন।

উল্লেখ্য, চামেলীর পায়ের লিগামেন্ট ছিঁড়ে যাওয়ায় দীর্ঘদিন থেকে অবস্থান করছিলেন রাজশাহী মহানগরীর দরগাপাড়ার জরাজীর্ণ একটি ঘরে। বিষয়টি পদ্মানিউজ২৪সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে অনেকেই তার পাশে এসে দাঁড়ান। এ সময় তার চিকিৎসার সকল দায়িত্ব নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ২ নভেম্বর রাজশাহী থেকে ঢাকা নিয়ে ভর্তি করা হয় জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতালে) ২১৬ নং কেবিনে।

সেখানে প্রাথমিক পর্যায়ের পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে হাসপাতালেই চিকিৎসার প্রস্তুতি শরু হয়। কিন্তু চামেলী দাবি করেন ভারতে চিকিৎসার জন্য। তার দাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয় ভারতে।

বাংলাদেশ জাতীয় নারী দলের হয়ে ১৯৯৯ থেকে ২০১১ পর্যন্ত মাঠ মাতিয়ে বেড়িয়েছেন চামেলী খাতুন। ২০১০ সালের এশিয়া কাপের রানার আপ হওয়া দলের হয়ে মাঠ মাতান এই দাপুটে ক্রিকেটার। এর বাইরে ঢাকা বিভাগে খেলেছেন টানা। দুই মৌসুম শেখ জামালের ক্যাপ্টেন হিসেবে সামনে থেকে টেনে নিয়ে গেছেন দলকে। সেই তিনিই পরাস্ত হন ইনজুরিতে। এখন তাঁর চিকিৎসা চলছে।

আরও পড়ুন : মাঠে ফেরার স্বপ্ন বুকে আঁকছেন চামেলী

এসএইচ-১১/০৮/১২ (সুমন হাসান)