অনিল কুম্বলে ভারতের কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেন ২০১৬ সালের জুন মাসে। কিন্তু পরের বছরের জুনে হাঠৎ করেই সরে দাঁড়ান তিনি। অথচ তার অধীনে দারুণ সাফল্য পাচ্ছিল দল। কুম্বলে সময়ে খেলা ১৭ টেস্টের মধ্যে মাত্র একটিতে হেরেছিল ভারত। কিন্তু হঠাৎ করেই দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান তিনি।
বিষয়টি সাম্প্রতিক সময়ে ভারতীয় ক্রিকেটের সবচেয়ে বিতর্কিত ঘটনা। সেসময় গুঞ্জন উঠেছিল অধিনায়ক বিরাট কোহলির কারণেই ইস্তফা দিতে বাধ্য হয়েছিলেন কুম্বলে।
কুম্বলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেরকমই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। সরাসরি অবশ্য কিছু বলেননি সাবেক এই ভারতীয় স্পিনার। সেসময় এক পোস্টে কুম্বলে বলেছিলেন, ‘বোর্ড কোচ ও অধিনায়কের মধ্যকার ভুল-বোঝাবুঝি মেটানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু মনে হচ্ছে, এটি আর হওয়ার নয়।’
তারপর ভারতীয় দলে শুরু হয় রবি শাস্ত্রির অধ্যায়। শাস্ত্রি-কোহলি জুটিতেও ভালো সময়ই পার করছে ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ডের পর টেস্ট জিতেছে অস্ট্রেলিয়ায়ও। এশিয়ার প্রথম অধিনায়ক হিসেবে এ তিন দেশেই টেস্ট জিতলেন কোহলি। অ্যাডিলেড টেস্ট জয়ের পর পরবর্তী মিশন পার্থে।
কিন্তু তার আগেই বিতর্কে কোহলি। সেটি অবশ্য বর্তমান সময়ের ভূমিকার জন্য নয়। কুম্বলের কোচের পদ থেকে সরে যাওয়ায় কোহলির হাত ছিল বলে যে গুঞ্জনটা ছিল তাই সত্য প্রমাণিত হচ্ছে। আর এ বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছেন বিসিসিআই কমিটি অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটরস (সিওএ) সদস্য ডায়না এডুলজি।
এডুলজি অবশ্য কোহলিকে লক্ষ্য করে বিষয়টি তুলে আনেননি। বলা যায় প্রসঙ্গ ক্রমে উঠে এসেছে ঘটনাটি। ভারতের নারী দলের হেড কোচ নিয়োগে অ্যাডহক কমিটি নিয়োগের বিষয়টি নিয়ে বিনোদ রাইয়ের সঙ্গে যুক্তি-পাল্টা যুক্তি চলছে এডুলজির।
ভারতীয় নারী দলের অধিনায়ক হারমনপ্রীত কাউর ও সহ অধিনায়ক স্মৃতি মান্দানা বর্তমান কোচ রমেশ পাওয়ারকেই কোচ হিসেবে আবার চান। বিসিসিআই এবং কমিটি অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটরসকে তারা এ বিষয়ে অনুরোধও করেছেন। কিন্তু রাইয়ের যুক্তি, খেলোয়াড়রা কোচ নিয়োগের বিষয়ে মতামত দিতে পারে না। কিন্তু এডুলজি দাঁড়ান খেলোয়াড়দের পক্ষে। রাইকে পাঠানো এক ইমেইলে এ বিষয়ে কিছু যুক্তিও দেন তিনি।
সেই ই-মেইলটিই ফাঁস হয়ে যায়। সেখান থেকেই বেরিয়ে আসে কুম্বলের পদত্যাগের হাড়ির খবর। এডুলজি লিখেছেন, ‘নারী ক্রিকেটারদের কোচ বাছাইয়ের ব্যাপারে মতামতে আমি দোষের কিছু দেখি না। ওরা তো নিজেদের মতামত সোজাসুজি জানাচ্ছে। বিরাট কোহলির মতো তো আর সিইও (রাহুল জোহরি)-র কাছে ঘন ঘন এসএমএস করছে না। কোহলির এই এসএমএসের ভিত্তিতেই তো কাজ (কুম্বলেকে বিদায়) করা হয়েছিল। বদলানো হয়েছিল কোচ।’
এডুলজির এই বক্তব্যে জানা গেল কোহলি প্রতিনিয়ত এসএমএস পাঠিয়ে কুম্বলের বিরুদ্ধে জোহরির কান ভারী করতেন। ই-মেইলে তিনি আরো দাবি করেছেন, অধিনায়কের পছন্দে রবি শাস্ত্রিকে কোচ বানিয়ে বিসিসিআইয়ের নিয়মই ভাঙা হয়েছে। সে সময় বিষয়টির প্রতিবাদও করেছিলে এডুলজি, ‘তখনও আমি প্রতিবাদ করেছিলাম। আমার সেই প্রতিবাদ নথিভুক্তও রয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোচ হতে চেয়ে আবেদন করেননি রবি শাস্ত্রি। তার জন্য আবেদনের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছিল। এটারও প্রতিবাদ করেছিলাম।’
এসএইচ-১০/১৩/১২ (স্পোর্টস ডেস্ক)