সিলেটে চলছে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে। প্রথমে ব্যাট করে ওপেনার শাই হোপের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশকে ১৯৯ রানের লক্ষ্য দিয়েছে সফরকারীরা।
শুক্রবার টসে নামার মধ্য দিয়ে নতুন এক রেকর্ড গড়লেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। হাবিবুল বাশার সুমনকে ছাড়িয়ে বাংলাদেশেকে সবচেয়ে বেশি ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দেওয়ার রেকর্ড এখন তার। বাংলাদেশের অধিনায়ক হিসেবে এটি তার ৭০তম ম্যাচ। হাবিবুল বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ৬৯ ওয়ানডেতে।
শুধু তাই নয় বাংলাদেশের জার্সি গায়ে এটি মাশরাফির ২০০তম ওয়ানডে। যদিও তিনি মোট ওয়ানডে খেলেছেন ২০১টি। একটি ওয়ানডে খেলেছেন তিনি এশিয়া একাদশের হয়ে। নিজের এই মাইলফলকের ম্যাচটি শুরু করেছেন তিনি টস জিতে।
আর টস জিতেই ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানান ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। এরপর শুরু হয় মেহেদী হাসান মিরাজের ঘূর্ণির জাদু। ২১ বছর বয়সী এই অফ স্পিনার এদিন তুলে নিয়েছেন ৪ উইকেট। পরে তাতে যোগ দেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দীন, সাকিব আল হাসান ও মাশরাফি। সাইফউদ্দীন ১ ও সাকিব আর মাশরাফি ২টি করে উইকেট নিয়েছেন।
এদিন টাইগার বোলারদের দাপটের মুখের অবিচল ব্যাট করেছেন শাই হোপ। কোনভাবেই আউট করা যায়নি তাকে। এদিনও সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন হোপ। মিরপুরে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও ২৫ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যানের কাছে হারে মেনেছিল বাংলাদেশ। সেদিন অপরাজিত ১৪৬ রান করেছিলেন তিনি। যেটি ছিল তার দ্বিতীয় ওয়ানডে সেঞ্চুরি। সিলেটেও অপরাজেয় পাহাড় হয়ে দাঁড়ান টাইগারদের সামনে।
শুক্রবার সিরিজে টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নিলে তিনি। এদিন অপরাজিত ১০৮ রান করেন তিনি। অর্থাৎ এদিন ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোরে হোপ একাই যোগ করেন ১০৮ রান। আর অন্য ব্যাটসম্যানরা মিলে করেন ৯০ রান।
এদিন দিনের শুরুতে আঘাত হানেন মিরাজ। ক্যারিবীয় ওপেনার চন্দরপল হেমরাজকে মোহাম্মদ মিঠুনের তালুবন্দি করেন তিনি।এদিন ম্যাচের চতুর্থ ওভারের পঞ্চম বলে ব্যক্তিগত ৯ রানে আউট হন হেমরাজ।
এরপর তিন নম্বরে নামা ব্রাভোকে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন শাই হোপ। তবে ব্রাভোকে বোল্ড করে ৪২ রানেই এই জুটি থামিয়ে দেন মিরাজ। ব্যক্তিগত ১০ রানে আউট হন ব্রাভো। আর দলীয় ৫৭ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় সফরকারীরা।
এরপর মারলন স্যামুয়েলসকে নিয়ে আরেকটি জুটি গড়ার চেষ্টা করেন হোপ। দুইজন মিলে দলকে শতরানের দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু তাতে বাধ সাধেন পেস অল রাউন্ডার সাইফউদ্দীন। বোল্ড করেন স্যামুয়েলসকে (১৯)। ওয়েস্ট ইন্ডিজের দলীয় রান তখন ৯৬।
স্যামুয়েলস আউট হলে ব্যাট করতে নামেন শিমরন হেটমেয়ার। কিন্তু হেটমেয়ারকে এদিন রানের খাতা খুলতে না দিয়ে নিজের তৃতীয় শিকারের পরিণত করেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ চতুর্থ উইকেট হারায় ৯৭ রানে।
আর দলীয় ৯৯ রানের মাথায় অধিনায়ক রভম্যান পাওয়েলকে (১) হারায় ক্যারিবীয়ানরা। মিরাজের চতুর্থ শিকার তিনি।
দলীয় ৯৯ রানে অধিনায়ক রভম্যান পাওয়েল আউট হলে চেজকে নিয়ে দলকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে হোপ। কিন্তু হোপ-চেজ জুটিটি ৩৪ রানে থামিয়ে দেন সাকিব। তাকে তুলে মারতে গিয়ে ব্যক্তিগত ৮ রানে সৌম্য সরকারের ক্যাচে পরিণত হন চেজ। এরপর ৮ নম্বরে নামা অ্যালেনকে (৬) ডিপ স্কয়ার লেগে মোহাম্মদ মিঠুনের তালুবন্দি করেন তিনি।
এরপর উইকেট শিকারে যোগ দেন অধিনায়ক মাশরাফি। দেশের হয়ে নিজের ২০০তম ম্যাচে তুলে নেন ২টি উইকটে। প্রথমে আউট করেন করেন কেমো পলকে। ব্যক্তিগত ১২ রানে মাশরাফির বলে বোল্ড হন তিনি। এরপর মাশরাফির এলবিডাব্লুর ফাঁদে পড়েন ক্রেমার রোচ (৩)।
সবশেষে দেবেন্দ্র বিশুকে নিয়ে ৫০ ওভার পর্যন্ত ব্যাট করে হোপ দলকে নিয়ে যান ১৯৮ রানে। এর মধ্যে পূর্ণ করেন তিনি ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি। অসামান্য এই ইনিংসের পথে একটি ছক্কা ও ৯টি চার মারেন হোপ। বিশু অপরাজিত থাকেন ৬ রানে।
এসএইচ-১২/১৪/১২ (স্পোর্টস ডেস্ক)