রেকর্ডের মালায় ম্যাথিউজ-মেন্ডিসের জুটি

WELLINGTON, NEW ZEALAND - DECEMBER 18: Angelo Mathews and Kusal Mendis of Sri Lanka are applauded by New Zealand players as they leave the field at the end of play on day four of the First Test match in the series between New Zealand and Sri Lanka at Basin Reserve on December 18, 2018 in Wellington, New Zealand. (Photo by Hagen Hopkins/Getty Images)

স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়েলিংটনে ২৭৬ রানে পিছিয়ে থেকে মঙ্গলবার চতুর্থ দিনের ব্যাটিংয়ে নেমে কুশল মেন্ডিস ও অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ মিলে ২৪৬ রানের জুটি গড়ে অবিচ্ছিন্ন থাকেন। দু’জনই শতক তুলে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেন। মেন্ডিস ১১৬ ও ম্যাথিউজ ১১৭ রানে অপরাজিত থেকে শেষ দিনের ব্যাটিংয়ে নামবেন। চতুর্থ দিন কোনো উইকেটই হারায়নি লঙ্কানরা।

এর আগে ওয়েলিংটনে টস হেরে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৮২ রান তোলে শ্রীলঙ্কা। জবাবে প্রথম ইনিংসের ব্যাটিংয়ে নেমে টম ল্যাথামের রেকর্ড ২৬৪ রানের ইনিংসে ভর করে সব উইকেট হারিয়ে ৫৭৮ রান তোলে স্বাগতিকরা। তাতেই ২৯৬ রানের বিশাল লিড নেয় কিউইরা। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩ উইকেট হারিয়ে শ্রীলঙ্কা ২৫৯ রান তুলেছে।

২২- ২২তম বারের মতো টেস্ট ক্রিকেটের একটি দিন প্রতিপক্ষের বোলাররা উইকেট শূন্য থাকেন। টেস্টের ইতিহাসে ১৯২৫ সালের ১ জানুয়ারি অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের মধ্যকার টেস্টের তৃতীয় দিন প্রথমবার এমনটি ঘটেছিল। আর সবশেষ এরকম দিন যায় ১০ বছর আগে। ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথমদিন বাংলাদেশের বিপক্ষে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা ৪০৫ রান তুলে কোনো উইকেট হারায়নি।

২৩৯- ম্যাথিউজ-মেন্ডিস মিলে আজ তুলেছেন ২৩৯ রান। ১৯৮৬ সালে মুম্বাই টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে স্বাগতিক ভারত পুরো দিন ব্যাটিং (চতুর্থ দিন) করে কোনো উইকেট হারায়নি, দীলিপ ভেঙ্কশর-রবি শাস্ত্রী স্কোরবোর্ডে তুলেছিলেন ২৩৫ রান। তাতে ভেঙ্কশর ১৬৪ এবং শাস্ত্রী ১২১ রানে অপরাজিত থাকেন।

২৪৬*- ম্যাথিউজ-মেন্ডিস মিলে ২৪৬ রানের পার্টনারশিপ গড়ে অবিচ্ছিন্ন আছেন। দ্বিতীয় ইনিংসে এর চেয়ে বেশি জুটি গড়তে পারেননি আর কোনো লঙ্কান। ১৯৮৬ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে গুরুসিংহ এবং অর্জুনা রানাতুঙ্গা মিলে ২৪০ রানের জুটি গড়ে অবিচ্ছিন্ন ছিলেন।

** তৃতীয় বা চতুর্থ ইনিংসে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ম্যাথিউজ-মেন্ডিসের জুটি পঞ্চম সেরা। তবে, বিদেশি কোনো দলের জন্য এটি দ্বিতীয় সেরা। তৃতীয় ইনিংসে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ৪৬৭ রানের জুটি গড়েছিলেন স্বাগতিকদের মার্টিন ক্রো-অ্যান্ড্রু জোনস। ১৯৯১ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তারা টেস্টের তৃতীয় ইনিংসে এই জুটি গড়েন। ২০১৪ সালে ভারতের বিপক্ষে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের ব্রেন্ডন ম্যাককালাম-ওয়াটলিং জুটি তৃতীয় ইনিংসে গড়েছিলেন ৩৫২ রানের জুটি। এর পরের বছর ৩৬৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েছিলেন নিউজিল্যান্ডের ওয়াটলিং-উইলিয়ামসন জুটি। ২০০২ সালে বিদেশি দল হিসেবে খেলতে গিয়ে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে তৃতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ডের অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফ-গ্রাহাম থর্ম গড়েছিলেন ২৮১ রানের জুটি। ১৬ বছর পর বিদেশি দল হিসেবে খেলতে গিয়ে ম্যাথিউজ-মেন্ডিস গড়ছেন ২৪৬* রানের জুটি। দলীয় ১৩ রানে তৃতীয় উইকেট হারানোর পর আর কোনো উইকেট হারায়নি লঙ্কানরা, চতুর্থ দিন শেষে তাদের সংগ্রহ ২৫৯/৩।

** পঞ্চমবারের মতো শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যানরা টেস্টের পুরো একটি দিন ব্যাটিং করে কাটিয়ে দিয়েছেন প্রতিপক্ষের বোলারদের উইকেট শূন্য রেখে। ১৯৮৬ সালে নিজেদের মাটিতে পি.সারা স্টেডিয়ামে আসানকা গুরুসিংহে এবং অর্জুনা রানাতুঙ্গা পাকিস্তানের বোলারদের পুরো একটি দিন খাটিয়ে নিজেদের উইকেট বিলিয়ে দেননি। ১৯৯৭ সালে ভারতের বিপক্ষে সনাথ জয়সুরিয়া-রোশন মহানামা সারাদিন ব্যাটিং করেছিলেন। সেই ম্যাচে লঙ্কানরা ৬ উইকেট হারিয়ে ৯৫২ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করেছিল। সেটিই এখনও টেস্টের কোনো দলের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের বিশ্বরেকর্ড হয়ে আছে। ম্যাচটিতে জয়সুরিয়া ৩৪০, মহানামা ২২৫, ডি সিলভা ১২৬, রানাতুঙ্গা ৮৬, জয়াবর্ধনে ৬৬ রান করেছিলেন। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৫৭৬ রান তুলেছিলেন জয়সুরিয়া-মহানামা।

** ম্যাথিউজ-মেন্ডিসের সেঞ্চুরির মধ্যদিয়ে এশিয়ার বাইরে খেলতে গিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো দুই লঙ্কান দ্বিতীয় ইনিংসে একসঙ্গে সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন। ১৯৯৫ সালে ডুনেডিনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সবশেষ এমনটি ঘটেছিল লঙ্কানদের জন্য। সেবার দ্বিতীয় ইনিংসে সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন গুরুসিংহে এবং হাসান তিলকারত্নে। তবে, দ্বিতীয় ইনিংসে এ নিয়ে ১১বারের মতো দুই লঙ্কান দ্বিতীয় ইনিংসে এক সঙ্গে সেঞ্চুরির দেখা পেলেন।

এসএইচ-০৫/১৮/১৮ (স্পোর্টস ডেস্ক)