ম্যাশদের হারিয়ে সাকিবদের হ্যাটট্রিক জয়

হতে হতে যেন হলো না। ঢাকার ছুড়ে দেয়া রানের পাহাড়ের চূড়ায় উঠতে উঠতে যেন হাফিয়ে গেছে রংপুর রাইডার্স। রুশো-মিঠুনের যৌথ ঝড়ো ইনিংসে জয়ের স্বপ্ন দেখা রংপুর হেরে মাঠ ছেড়েছে ২ রানে। ম্যাশ বাহিনীকে হারিয়ে টানা তিন জয় পেয়েছে সাকিবের ঢাকা ডায়নামাইটস।

ঢাকা শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে ঠাসা উত্তেজনায় ভরা হাইভোল্টেজ ম্যাচটি শ্বাসরুদ্ধকরভাবে জিতে নিয়েছে ঢাকা। ব্যাটিং নেমে ১৮৩ রানের টার্গেট ছুড়ে দেয় সাকিবরা। অন্যদিকে আশা তুলে বেদনার হারে হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে ম্যাশদের।

দলে যখন গেইল তখন রানের পাহাড়কে ছোট মনে হতে পারে। ঢাকার ছুড়ে দেয়া বিশাল সংগ্রহ টপকাতে টি-টুয়েন্টি ফরম্যাটের সবচেয়ে বড় ফেরিওয়ালা ক্রিস গেইল ক্রিজে। মাঠে ঠাসা দর্শক। ছয়ের বন্যা ছুটবে এমন আশাই ছিল ক্রিকেট ভক্তদের। ঢাকার ছুড়ে দেয়া রানের পাহাড় টপকাতে এমন বিধ্বংসী ইনিংসই দরকার ছিল রংপুরের। ছয় মেরে যাত্রা শুরু করে ভক্তদের হতাশ করে ফিরেছেন গেইল।

২৫ রানের মধ্যে সাজঘরে ফিরেন মেহেদী মারুফও। ক্রিজে তখন রাইলি রুশো আর মিঠুন। এই দ্বৈতই যেন ঢাকার ঘাম ছোটালেন। পোলার্ডের ঝড়ের জবাব দিলেন ব্যাটে। ৪৪ বলে ৮৩ রানের উপভোগ্য ইনিংস খেলে আল উদীয়মান আল ইসলামের বলে ধরা খেয়ে স্টাম্পিংয়ের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরলেন। ১৪৫ রানে রুশো বিদায় নেয়ার পরেই যেন তাসের ঘরের মতো দুমড়ে-মুচড়ে ভাঙতে থাকে রংপুরের উইকেট। এই আসরে ধারাবাহিক বোপারাও ফিরলেন তিন রান যোগ করে।

এক রানের ফিফটির আক্ষেপ নিয়ে মিঠুনের বিদায়ের পর যেন আরও নাজুক অবস্থা হয় ম্যাশবাহিনীর। ক্রিজে আসলেন ম্যাশ নিজেই। রংপুর ভক্তদের হতাশ করে প্রথম বলেই স্টাম্পিংয়ের শিকার হয়ে ফিরলেন কোনও রান যোগ না করেই। ফরহাদ ও সোহাগ গাজীরও রানের খাতায় শূন্য।

থিতু হওয়া মিঠুন ফরহাদ আর মাশরাফিকে আউট করে এই বিপিএল আসরের প্রথম হ্যাটট্রিক তুলেন নেন নবাগত আল ইসলাম। ম্যাচ ঘুরিয়ে দিয়েছেন তিনি একাই। ম্যাচ অবশ্য গড়িয়েছে শেষ ওভার পর্যন্ত শফিউলের বদান্যতায়। ৪ বলে ১২ রান করে রংপুরের জয়ের হাতছানি তুলেও হলো না।

শেষ বলে জিততে লাগে চার রান। হলো এক রান। আর তাতেই নিশ্চিত হলো ২ রানের জয়। ঢাকার হ্যাটট্রিক জয়। আল ইসলাম একাই শিকার করেন চার উইকেট। নারাইন দুটি ও সাকিব, শুভাগত ও রাসেল নেন একটি করে উইকেট।

এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৮৩ রানের সংগ্রহ করে ঢাকা ডায়নামাইটস। ম্যাচের শুরুতে ৩৩ রানে যখন ঢাকার ৩ উইকেট উধাওয়ে খাদের কিনারায় হাল ধরেন সাকিব।

রানের পাহাড় তোলার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় অবদানটা দিতে হবে পোলার্ডকে। ২৬ বলে ৬২ রানের ঝড়ো ইনিংসে এই বড় লক্ষ্য দাঁড় করাতে সক্ষম হয়েছে ঢাকা। চারটি চার আর পাঁচটি ছয়ে চোখ ধাঁধানো ইনিংস উপহার দিয়েছে এই টি-টিয়েন্টির ফেরিওয়ালা। ব্যাটিং স্তম্ভ ধরে রেখেছে এক প্রান্ত থেকে সাকিব। ৩৭ বলে ৩৬ রানের গুরুত্ব এ জায়গায়। পোলার্ড সাজঘরে ফিরে যাওয়ার পর নিস্তার পায়নি রংপুর। এবার তার সতীর্থ আন্দ্রে রাসেলের ছোট ঝড়। রানের পালে বাতাস বলে যায় হয় আরকি। ১৩ বলে ২৩ রান করে শফিউলের বলে ক্রিজ ছাড়েন এই ইন্ডিজ তারকা। ছোট সংগ্রহ আসে রনি (১৮) ও মিজানের (১৫) কাছ থেকেও।

শফিউল একাই নিয়েছেন তিনটি উইকেট। গাজী ও হাওয়েল তুলে নিয়েছেন দুটি করে উইকেট। রানের গতি কমিয়ে ২২ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়েছে ম্যাশ। ফরহাদ রেজাও পেয়েছেন একটি উইকেট।

নিজেদের প্রথম ম্যাচে চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে জয় পায়নি মাশরাফি বিন মর্তুজার দল রংপুর রাইডার্স। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে খুলনাকে ৮ রানে হারিয়েছে তারা। আর নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে কুমিল্লার বিপক্ষে ৯ উইকেটের বড় জয় তুলে নিয়েছে মাশরাফিরা।

অন্যদিকে, নিজেদের প্রথম ম্যাচে রাজশাহীর বিপক্ষে ও দ্বিতীয় ম্যাচে খুলনা টাইটানসের বিপক্ষে জয় তুলে নিয়েছে সাকিবের ঢাকা ডায়নামাইটস। এ জয়ে তিন ম্যাচে ৯ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের চূড়ার আসনে সাকিবের দল। অন্যদিকে এ ম্যাচে পয়েন্ট খুইয়ে চার পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে রংপুর।

এসএইচ-০৯/১১/১৯ (স্পোর্টস ডেস্ক)