এমবাপেকে পটাবেন জিদান!

কখনো কখনো গুরুত্বপূর্ণ কথাও বলা হয় মজার ছলে, কৌতুক করে। তাতে লাভ দুটো। গুরুত্বপূর্ণ বার্তাটা সংশ্লিষ্ট পক্ষকে জানানোও গেল, আবার বাইরের লোকজন কিছু মনেও করল না। মজার ছলে বলা কথাটাকে কৌতুক ভেবে উড়িয়েই দিল।

রিয়াল মাদ্রিদ সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজও হয়তো এই চালাকিটাই করতে চেয়েছিলেন। গণমাধ্যমের সামনে কৌতুক করে বলে ফেলেছেন, তার বিশ্বাস কিলিয়ান এমবাপেকে পটিয়ে রিয়ালে ভেড়াতে পারবেন জিনেদিন জিদান!

তিনি হয়তো ভেবেছিলেন, মজা করে বলা এই কথাটাকে বাইরের কেউ গুরুত্ব দেবে না। কিন্তু তার চালাকিটা খাটেনি। বরং তার কথাটা বেশ গুরুত্বের সঙ্গেই নিয়েছে ইউরোপের গণমাধ্যম। এমনকি গণমাধ্যমের সূত্র তার সেই মজার বিষয়টি পৌঁছে গেছে এমবাপের ক্লাব পিএসজির কানেও। জবাবে ফরাসি ক্লাবটির কোচ টমাস টাচেল পাল্টা প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছেন।

রিয়াল সভাপতি অন্য কাউকে নিয়ে মজাটা করলে হয়তো মজা হিসেবেই নিত সবাই। কিন্তু এমবাপের প্রতি রিয়ালের অতি আগ্রহের বিষয়টি সবারই জানা। গত মৌসুমেই ফরাসি এই বিস্ময় বালককে কেনার জন্য কোমড় বেধে মাঠে নেমেছিল রিয়াল। ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর যোগ্য বিকল্প হিসেবে রিয়ালের সমর্থকরাও চান এমবাপেকেই।

সমর্থকদের এই চাওয়ার সঙ্গে মিলে গেছে নতুন করে রিয়ালের কোচের দায়িত্ব নেওয়া জিদানের পছন্দও। গত সোমবার নতুন করে রিয়ালের কোচের দায়িত্ব নিয়েছেন জিদান। ব্যর্থতার দায়ে সান্তিয়াগো সোলারিকে বরখাস্ত করে কোচ করা হয়েছে জিদানকে। আর দায়িত্ব নিয়েই দুজনকে কেনার পাকা পরিকল্পনা নিয়ে ফেলেছেন জিদান। তার একজন চেলসির বেলজিয়ান মিডফিল্ডার-ফরোয়ার্ড এডেন হ্যাজার্ড। অন্যজন কিলিয়ান এমবাপে।

এই দুজনের মধ্যে আবার স্বদেশি এমবাপেই এক নম্বর পছন্দ জিদানের। আর এমবাপে যেহেতু জিদানের স্বদেশি, এই বিষয়টিই আশাবাদী করে তুলেছে রিয়াল সভাপতিকে। মঙ্গলবার নিজের এই আশাবাদের কথাটা ঘটা করে বলেও ফেলেছেন পেরেজ। গণমাধ্যম কর্মীদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি কৌতুকের সুরে বলেছেন, ‘জিদান একজন ফরাসি। আশা করি এমবাপের বিষয়ে সে কিছু একটা করতে পারবে।’

বিশ্বের সব তরুণ ফুটবলারদের কাছেই জিদান অনুপ্রেরণার নাম। একজন ফরাসি হিসেবে এমবাপে হয়তো কিংবদন্তি জিদানের প্রতি আরও বেশি দুর্বল। শুধু বিশ্বসেরা খেলোয়াড় হিসেবেই নয়, বিশ্বসেরা কোচ হিসেবেও নিজের নামটি প্রতিষ্ঠিত করেছেন জিদান। ফলে কোচ জিদানের সঙ্গে কাজ করাটাও এমবাপের মতো প্রতিভাবান ফুটবলারদের স্বপ্ন। হ্যাজার্ড যেমন শৈশবের নায়ক জিদানের সঙ্গে কাজ করতে মরিয়া।

সেই জিদান যখন স্বদেশি এমবাপেকে এক নম্বর টার্গেট বানিয়ে ফেলেছেন, পেরেজ আশাবাদী হতেই পারেন। কিন্তু সমস্যা হলো, জিদান এমবাপেকে কিছু বলার আগেই পেরেজের কৌতুক করে বলা কথাটা পিএসজির কানে পৌঁছে গেছে। না, পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পিএসজির জার্মান টাচেল তেমন কিছুই বলেননি। তবে খবরটি কানে যাওয়ায় পিএসজি যে ২০ বছর বয়সী এমবাপেকে ধরে রাখার বিষয়ে আরও সতর্ক হয়েছে, সেটি বোঝা গেছে।

জিদানের পছন্দ হিসেবে এমবাপের খবরটিই বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। তবে কৌতুক করে সেদিন কিন্তু এমবাপের সঙ্গে নেইমারের নামটিও উচ্চারণ করেছেন পেরেজ। নেইমারই ছিল রিয়ালের এক নম্বর টার্গেট। পেরেজ নিজেরও বিশেষ পছন্দ পিএসজির এই ব্রাজিলিয়ান তারকাকে। কিন্তু সেই নেইমারকে বাদ দিয়ে এমবাপেকে এক নম্বর টার্গেট বানানো কেন, সাংবাদিকদের এমন প্রম্নের উত্তরে পেরেজ বলে বসেন, ‘নেইমার ও এমবাপে, দুজনকেই পছন্দ আমাদের।’

পিএসজির কোচ তাই দুজনের বিষয়েই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন, ‘নেইমার ও কিলিয়ানের মতো খেলোয়াড়দের সব দলই পেতে চাইবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে মনে রাখতে হবে তারা পিএসজির খেলোয়াড়।’

এসএইচ-০৪/১৪/১৯ (স্পোর্টস ডেস্ক)