ভারতের টানা দ্বিতীয় জয়

অস্ট্রেলিয়াকে ৩৬ রানে হারিয়ে চলতি বিশ্বকাপে টানা টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিল ভারতে। ভারতের দেয়া পাহাড়সম ৩৫৩ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে সব কয়টি হারিয়ে ৩১৬ রান তুলতে সক্ষম হয় অজিরা।

রোববার ইংল্যান্ডের রাজধানী লন্ডনের দ্য ওভাল স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলি। ম্যাচটি শুরু হয় বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৩টায়।

টস জিতে শুরুটা দুর্দান্ত করে ভারতের দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও শিখর ধাওয়ান। মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্সদের দিশেহারা করে ১৯ ওভারেই শতরানের জুটি গড়েন এই দুই ব্যাটসম্যান। এর মাঝে ধাওয়ান ৫৩ বলে তুলে নেন ক্যারিয়ারের ২৭তম অর্ধশতক।

শতরানের জুটি হওয়ার পরের দুই ওভার পরই ৬১ বলে নিজের ব্যক্তিগত ৪৭তম অর্ধশতক তুলে নেন রোহিত। তবে ফিফটি করার পর ইনিংসটা বড় করতে পারেননি আগের ম্যাচের এ সেঞ্চুরিয়ান। ইনিংসের ২৩ তম ওভারে নাথান কল্টার নাইলের বল রোহিতের ব্যাটের কানায় লাগলে ক্যাচ ধরতে ভুল করেননি অজি উইকেটকিপার অ্যালেক্স ক্যারে। ৭০ বলে ৩ চার ও এক ছয়ে ৫৭ রান করে আউট হন এই ব্যাটসম্যান।

রোহিতে যেখানে শেষ করেছিলেন সেখান থেকেই যেন শুরু করলেন অধিনায়ক বিরাট কোহলি। দুর্দান্ত খেলতে থাকা ধাওয়ানকে যোগ্য সঙ্গ দেন তিনি। দুজন মিলে মাত্র ৩১ ওভারেই দলের সংগ্রহ দুইশতে নিয়ে যান।

প্রথম উইকেটের মতো এ উইকেটেও বড় সংগ্রহের দিকে এগুতে থাকে এ জুটি। এর মাঝেই ৯৬ বলে দারুণ এক সেঞ্চুরি তুলে নেন ধাওয়ান। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১৭তম ও বিশ্বকাপ ক্যারিয়ারে তৃতীয় সেঞ্চুরিটি (এর আগের দুটি ২০১১ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকা ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে) পেতে এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান খেলেছেন ৯৫ বল, বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন ১৩টি। ব্যক্তিগত ১১৭ রানে মিচেল স্টার্কের বলে ক্যাচ তুলে দিলে ১০৯ বলে ১৬টি চারে সাজানো ধাওয়ানের ইনিংসের ইতি ঘটে।

৩৯ ওভারে ২৩৬ রানের মাথায় দ্বিতীয় উইকেট হারানোর পর হার্দিক পান্ডিয়াকে নামিয়ে দেয় ভারত। যাতে করে তিনি দ্রুত গতিতে রান তুলতে পারেন। নামার সাথে সাথে সেই কাজটা করেও দেখিয়েছেন তিনি। তার ঝড়ো ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি অপর প্রান্তে ৫৩ বলে ফিফটি তুলে নেন কোহলি। এটি তার ক্যারিয়ারের ৫০তম অর্ধশতক।

দুজনের ৮১ রানের জুটিতে ৪৬ ওভারেই ৩০০ পার করে ফেলে ভারত। তার পরের বলেই কামিন্সের বলে ফিঞ্চের হাতে ক্যাচ দেন পান্ডিয়া। ২৭ বলে ৪ চার ও ৩ ছয়ে ৪৮ রানের ঝড়ো এক ইনিংস খেলেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান।

১৪ বলে ২৭ রানের ছোট ক্যামিও ইনিংস খেলেন ধোনি। ৩ চার ও ১ ছক্কায় সাজানো ইনিংসটির পাশাপাশি মাত্র ৩ বলে ১ ছক্কা ও চারে ১১ রানের ইনিংস খেলে দলকে ৩৫০ রানের কোটা পার করেন লোকেশ রাহুল। নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ভারতের সংগ্রহ দাাঁড়ায় ৩৫২ রান।

অজি বোলারদের মধ্যে ২ উইকেট পেয়েছেন মারকাস স্টোয়েনিস। আর ১টি করে উইকেট পেয়েছেন প্যাট কামিন্স, স্টার্ক ও কোল্টার-নাইল।

কোহলিদের ছুঁড়ে দেয়া ৩৫৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো করেন দুই অজি ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার আর অ্যারোন ফিঞ্চ। প্রথমে কিছুটা স্লো ব্যাটিং করলেও দু’জন মিলে ৬১ রানের জুটি গড়েন। ৩৫ বলে ৩৬ রান করে ফিঞ্চ রানআউট হয়ে গেলে বিপদ শুরু হয় অস্ট্রেলিয়ার। তবুও ডেভিড ওয়ার্নার আর স্টিভেন স্মিথ মিলে গড়েন ৭২ রানের দারুণ এক জুটি।

যদিও ওয়ার্নার আজ ছিলেন খুবই স্লো। নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি তিনি। ৮৪ বল খেলে তিনি করেছেন মাত্র ৫৬ রান। ৫টি বাউন্ডারি মারলেও কোনো ছক্কার মার নেই তার ব্যাটে।

স্মিথ ৭০ বল খেলেছেন। করেন ৬৯ রান। ভুবনেশ্বর কুমারের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফিরে যান তিনি। উসমান খাজা করেন ৩৯ বলে ৪২ রান। ম্যাক্সওয়েল মাঠে নেমেই চেষ্টা করেন ঝড় তোলার। ১৪ বলে ২৮ রান সে ইঙ্গিতই দিচ্ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভারতীয় স্পিনের সামনে কুলিয়ে উঠতে পারলেন না। ইয়ুজবেন্দ্র চাহালের বলে ক্যাচ দিতে বাধ্য হন।

মার্কাস স্টোইনিজ শূন্য রানে আউট হলেও উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান অ্যালেক্স ক্যারে দারুণ ব্যাটিং করেন। মাত্র ২৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ৩৫ বলে তিনি অপরাজিত থেকে যান ৫৫ রান করে। বাকি ব্যাটসম্যানরা ছিলেন কেবল আসা-যাওয়ার মিছিলে।

ভারতীয় পেসার ভুবনেশ্বর কুমার এবং জসপ্রিত বুমরাহ নেন ৩টি করে উইকেট। ২ উইকেট নেন ইয়ুজবেন্দ্র চাহাল। দুটি হলো রানআউট।

এসএইচ-৩১/০৯/১৯ (স্পোর্টস ডেস্ক)