শুধু কোহলির পছন্দের খেলোয়াড়রা সুযোগ পান দলে!

রোহিত, কোহলিদের চমৎকার ব্যাটিং লাইন আপ নিয়ে বিশ্বকাপে পাঠানো দলকে সব ক্রিকেট বিশ্লেষক এবং সাবেক ক্রিকেটাররা রেখেছিলেন সেমিফাইনালিস্টের তালিকায়। সেমিফাইনালে ওঠার পরে নিউজিল্যান্ডকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পাওয়ায় প্রায় সবাই ভারতীয় দলকে ফাইনালে দেখেছে এবং চ্যাম্পিয়ন হিসেবেও কেউ কেউ বলেছিলো। কিন্তু নিউজিল্যান্ডকে হালকাভাবে নিয়ে ভারতের আর যাওয়া হলো না ফাইনালে, ছোঁয়া হলো না বিশ্বকাপ।

ভারতের জাতীয় ক্রিকেট দলে একসময় তীব্র গ্রুপিং আর নোংরা রাজনীতির খেলা চলত। ক্রিকেটারদের সৌভাগ্য, সেই সময় সৌরভ গাঙ্গুলী নামের একজন অধিনায়ক ছিলেন, যিনি সব ঝামেলা এড়িয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। সেই নোংরা ভূতই আবার নাকি ফিরে এসেছে ভারতীয় দলে। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পরাজয়ের পর এমন তথ্যই ফাঁস হয়েছে আকাশে বাতাসে। ভারতের শীর্ষ কিছু মিডিয়ার রিপোর্ট বলছে, দলে তীব্র হয়েছে গ্রুপিং। একটা গ্রুপ শাসক শিবির অর্থাৎ কোহলির নেতৃত্বে, আর একটি বিরোধী শিবির রোহিত শর্মার।

নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে সেমিফাইনাল থেকে বিদায়ের পর বিশ্বকাপের দল নির্বাচন নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে। ইংল্যান্ডে থাকা সত্ত্বেও শিখর ধাওয়ান পরিবর্তে কেন অজিঙ্কা রাহানেকে চাওয়া হলো না? এছাড়া ৪ নম্বরে কোন যুক্তিতে অম্বাতি রায়াডুর জায়গায় সুযোগ পান বিজয় শঙ্কর বা ঋষভ পন্থ? সেমিফাইনালে ১৮ রানে ভারতের হারের পর আরও বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। দলের ভেতরের খবর হলো, অধিনায়ক ও সহ-অধিনায়কের মধ্যে বনিবনা নেই। গ্রুপিংয়ে এখন বিদীর্ণ টিম ইন্ডিয়া। রোহিতের গ্রুপের লোকেরা মনে করছেন, কোচ ও অধিনায়ক ইচ্ছামতো সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।

শোনা যাচ্ছে, বিরাট কোহলির কাছের লোকেদেরই বেশি সুযোগ দেওয়া হয়। ব্যর্থ হলেও তারা বাদ পড়েন না। মোটকথা দলে টিকতে হলে অধিনায়ককে তেল দিয়ে চলতে হবে। বিরোধিতা করলেই দল থেকে বাদ পড়ার ভয়। এই তৈল মর্দনের বিরোধী হলেও রোহিত শর্মা ও জসপ্রীত বুমরাহ পারফরম্যান্স ভালো করে দলে টিকে গেছেন। যে কারণে স্বাভাবিকভাবেই অধিনায়ক ও কোচের বিরাগভাজনরা চলে যাচ্ছেন রোহিতের শিবিরে। সূত্রের খবর, কোচ রবি শাস্ত্রী ও বোলিং কোচ ভরত অরুণকে নিয়ে দলের অধিকাংশ ক্রিকেটার খুশি নন।

২০১৭ সালে অনিল কুম্বলে যাওয়ার পর কোচ হয়েছিলেন শাস্ত্রী। কোহলির সঙ্গে মিলে তিনি দলে এমনটা একটা পরিস্থিতি তৈরি করে রেখেছেন যে, তাদের বিরুদ্ধে কেউ টুঁ শব্দ করতে পারবে না। সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত প্রশাসক কমিটির প্রধান বিনোদ রাইয়ের সমর্থনও পাচ্ছেন বিরাট কোহলি। এতেই যেন সাপের পাঁচ পা দেখেছেন তিনি। তার সিদ্ধান্তই এখন শেষ কথা। ক্রিকেটারদের একাংশ মনে করছে, দলে সুযোগ পেতে কোচ ও অধিনায়কের প্রিয়পাত্র হতে হবে। আর এটাই পছন্দ নয় সহ-অধিনায়ক রোহিত শর্মার। এ নিয়েই দলে দ্বন্দ্ব এখন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে।

এসএইচ-০৫/১৩/১৯ (স্পোর্টস ডেস্ক)