টেস্ট থেকে প্রত্যাহার করা হলো স্মিথকে

ইংল্যান্ড শিবিরে স্বস্তির পরশ বইছে। কারণ কী? কারণ হলো স্মিথের ইনজুরি। অস্ট্রেলিয়ার এমনকি বিশ্বের সেরা টেস্ট ব্যাটসম্যানকে মাঠে নামতে না হলে তা অবশ্যই প্রতিপক্ষের জন্য স্বস্তির খবর। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার হবে কী? অ্যাশেজে অস্ট্রেলিয়ান দলের একমাত্র ব্যাটসম্যান হলেন স্মিথ যিনি ইংল্যান্ড বোলারদের শাষণ করেছেন।

অ্যাশেজের প্রথম টেস্টের দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করা স্মিথ দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসেও অজিদের ত্রাণকর্তা হিশেবে আবির্ভূত হন। ব্যাটসম্যানদের আসা যাওয়ার মিছিলে একমাত্র স্মিথ বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে লড়াই করেন। কিন্তু জোফরা আর্চারের একটা বাউন্সার স্মিথের মাথায় আঘাত করলে আর ক্রিজে থাকতে পারেননি স্মিথ।

জোফরা আর্চারের বাউন্সারে মাথায় বেশ শক্ত আঘাতই লেগেছিল। সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে পড়ে যান স্টিভেন স্মিথ, কাতরাতে থাকেন ব্যথায়। তবে সাহস নিয়ে ব্যাটিংটা চালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক। ফিজিও তাকে বারণ করেন। অ্যাশেজে চলতি লর্ডস টেস্টের চতুর্থ দিনের ঘটনা।

ফিজিওর কথা শুনে স্মিথ ড্রেসিংরুমে ফিরে গিয়েছিলেন। কিন্তু তর সয়নি। একটু ভালো বোধ হওয়ায় আবারও ব্যাটিংয়ে নেমে যান, ৮০ রান নিয়ে। মাথায় আঘাত পাওয়া স্মিথ এরপর ইনিংসটা বেশিদূর টেনে নিয়ে যেতে পারেননি। সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ৮ রান দূরে থাকতে (৯২) ক্রিস ওকসের শিকার হন।

আগের টেস্টে জোড়া সেঞ্চুরি হাঁকানো স্মিথ টানা তৃতীয় সেঞ্চুরির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন। দ্বিতীয় ইনিংসে কি সুযোগ পাবেন? চাইলেও স্মিথ আর ব্যাটিংয়ে নামতে পারবেন না। মাথার ওই আঘাতেই যে লর্ডস টেস্ট থেকে ছিটকে পড়েছেন এই ব্যাটসম্যান। শুধু এই টেস্টেই নয়, হেডিংলিতে সিরিজের তৃতীয় টেস্টেও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছেন তিনি।

মাথায় আঘাত লেগে কোনো ক্রিকেটারের টেস্ট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সরে যাওয়ার ঘটনা এবারই প্রথম। স্মিথের বদলে এই টেস্টে শেষ দিনে ফিল্ডিং করছেন মার্নাস লাবুসচাগনে।

প্রাথমিক ‘কনকাসন টেস্টে’ উৎড়ে গেলেও স্মিথের অবস্থা এখন খুব একটা ভালো নয়। আইসিসির ম্যাচ রেফারি রঞ্জন মাদুগালের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া জানিয়েছে, ‘মাথাধরা, মাথা ঘুরানো, দুর্বল লাগা, চোখে ধোয়াশা দেখা, তন্দ্রাচ্ছন্নভাব’-কনকাসনের এই লক্ষণগুলো এখনও রয়ে গেছে স্মিথের। তাই তাকে আবারও স্ক্যানের নিচে যেতে হবে।

ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া জানিয়েছে, ‘পরিসংখ্যানে দেখা যায় অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটে ৩০ ভাগ কনকাসনের সমস্যা দেরিতে দেখা দেয়। হয়তো খেলোয়াড়রা পরীক্ষায় পাস করে গেলেন এবং ভালো বোধ করেন। কিন্তু ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টা পর আবারও সমস্যা দেখা দেয়। সামনের দিনগুলো দেখে বোঝা যাবে স্মিথ তৃতীয় টেস্টে খেলতে পারবেন কি না। তবে সেটার সম্ভাবনা কম। স্মিথের ফিটনেস নিয়মিতই পর্যব্ক্ষেণে রাখা হবে।’

এমনই এক বাউন্সারের আঘাতে মাথায় রক্ত জমে মৃত্যু হয়েছিল অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার ফিলিপ হিউজের। ২০১৪ সালের নভেম্বরে ঘটা ওই ঘটনাটি এখনও ভয় জাগায় ক্রিকেটারসহ ভক্ত-সমর্থকদের মনে। স্মিথকে নিয়ে তাই কোনো ধরনের ঝুঁকি নিতে নারাজ ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া।

এসএইচ-১৬/১৮/১৯ (স্পোর্টস ডেস্ক)