জয় দিয়ে সিরিজ যাত্রা শুরু বাংলাদেশের

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে ৩ উইকেটের জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের ছুড়ে দেয়া ১৪৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে বিপাকে পড়ে গেছে বাংলাদেশ। ম্যাচের শেষ ওভারের শেষ বলে ৪ হাঁকিয়ে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন সাইফউদ্দিন।

সাকিব, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহদের মত ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা যখন দারুণ হতাশার জন্ম দিল বাংলাদেশের ক্রিকেট সমর্থকদের হৃদয়ে, তখন সেটাকে নিমিষে দুর করে দিলেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। বয়স মাত্র ২০ ছুঁই ছুঁই। মোসাদ্দেক হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে এই বয়সে দলকে নিশ্চিত হার থেকে রক্ষা করলেন এই তরুণ।

আফিফ হোসেন ধ্রুবর সঙ্গে ৮২ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে অবিশ্বাস এক জয় এনে দিলেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতও। মাত্র ২৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন তিনি।

ব্যাট করতে নেমে দলীয় ২৬ রানেই চাতারার বলে বোল্ড হয়ে বিদায় নেন লিটন (১৯)। আর চতুর্থ ওভারে বিদায় নেন সৌম্য সরকার (৪)। এরপর জার্ভিসের করা ওই ওভারে অসাধারণ বাউন্সে ক্যাচ তুলে দিয়ে বিদায় নেন মুশফিকও। এরপর সাকিবকে বিদায় করে নিজের দ্বিতীয় উইকেট তুলে নেন চাতারা। ২৯ রানেই ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

এর আগে ‘অখ্যাত’ রায়ান বুর্লের ঝড়ো ফিফটিতে ১৮ ওভার শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৪৪ রান সংগ্রহ করেছে জিম্বাবুয়ে।

ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে শুক্রবার ঢাকা মিরপুরের শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে টসে জিতে ফিল্ডিং বেছে নেন বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। কয়েক দফা বৃষ্টির হানায় ম্যাচ শুরু হয়ে দেড় ঘণ্টা পর। বৃষ্টির কারণে ম্যাচের প্রতি ইনিংসের দৈর্ঘ্য কমিয়ে আনা হয় ১৮ ওভারে।

আফগানিস্তানের কাছে চট্টগ্রাম টেস্টে হারের পরই বাংলাদেশ ক্রিকেটের নখ-দন্ত বেরিয়ে পড়ে। এরপর জিম্বাবুয়ের কাছে বিসিবি একাদশের নামে একঝাঁক জাতীয় দলের ক্রিকেটারের হার চিন্তা বাড়িয়ে দিয়েছিল। তবুও আশা ছিল, মূল লড়াইয়ে সাকিব আল হাসানরা ঠিকই পারবে হয়তো।

কিন্তু জিম্বাবুয়েকে ১৪৪ রানে বেধে ফেলার পরও যখন মাত্র ৬০ রানেই ৬ উইকেটের পতন ঘটে, তখন তো নিশ্চিত হারের যন্ত্রণাই চেপে বসতে যাচ্ছিল। আরো একটি লজ্জাজনক পরাজয় তখন যেন দরজায় কড়া নাড়ছিল।

কিন্তু আফিফ হোসেন ধ্রুবর ওপর অনেকেরই আস্থা ছিল। মিরপুরের প্রেসবক্সেও সবাই বলাবলি করছিল, এই ছেলেটির মধ্যে প্রতিভা আছে। সেই পারে বাংলাদেশকে এই লজ্জা থেকে বাঁচাতে। সঙ্গে যদি মোসাদ্দেক তাকে যোগ্য সঙ্গ দিতে পারে!

শেষ পর্যন্ত সেটাই প্রতিফলিত হলো। আফিফ হোসেন ধ্রুব জিম্বাবুয়ে বোলারদেরকে নিজেদের ওপর চেপে বসতে দেননি। বরং, দেখিয়ে দিয়েছেন শন উইলিয়ামস, তেন্দাই চাতারা কিংবা কাইল জার্ভিসদের চেয়ে বাংলাদেশ এখন অনেক বেশি এগিয়ে। জিম্বাবুয়ে বোলারদের উইতেটের চারপাশে পিটিয়ে মাত্র ২৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করলেন তিনি। যাতে ছিল ৮টি বাউন্ডারি আর ১টি ছক্কার মার।

মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত জুটি তৈরিতে দারুণ সহযোগিতা করলেন। কোনো বাউন্ডারি নেই তার ৩০ রানের ইনিংসে। রয়েছে ২টি ছক্কা। শেষ পর্যন্ত বিজয়ীর বেশেই মাঠ ত্যাগ করলেন তিনি।

টস হেরে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ১৮ ওভারে বাংলাদেশের সামনে ১৪৫ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য ছুড়ে দেয় জিম্বাবুয়ে। দুই ওপেনার লিটন দাস আর সৌম্য সরকার মোটামুটি একটা ভালো শুরু দিয়েছিলেন; কিন্তু ৩ ওভারে ২৬ রান যোগ করেই তারা দু’জন সাজঘরের পথ ধরেন।

চাতারার করা ইনিংসের তৃতীয় ওভারের শেষ বলে বোল্ড হন লিটন ১৪ বলে ১৯। কাইল জার্ভিসের পরের ওভারের প্রথম বলেই তুলে মারতে গিয়ে বোকার মতো আউট সৌম্য সরকার ৭ বলে ৪।

এর তিন বলের ব্যবধানে মুশফিকুর রহীমকেও (০) উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানিয়েছেন জারভিস। এরপর ১ রান করে চাতার দ্বিতীয় শিকার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। এ সময় দলের রান মাত্র ২৯। উইকেট নাই ৪টি।

এরপর মাহমুদউল্লাহ আর সাব্বির রহমান কিছুটা আশার আলো জালান। ২৭ রানের জুটি গড়ার পর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ হয়ে যান এলবিডব্লিউ। ১৬ বলে তিনি করেন ১৪ রান। ৪ রান পরই, ১৬০ রানের মাথায় ফিরে যান সাব্বির রহমানও।

এসএইচ-২৫/১৩/১৯ (স্পোর্টস ডেস্ক)