স্মিথের অবিশ্বাস্য ব্যাটিংয়ের রহস্য উন্মোচন করলেন শচিন

বল টেম্পারিং কাণ্ডে এক বছরের নিষেধাজ্ঞা। টেস্টে ফিরতে কেটে গেলো ১৬ মাস সময়। অথচ মাঠে ফিরতেই এসবের বিন্দুমাত্র ছাপ পড়তে দিলেন না নিজের ব্যাটিংয়ে। ইনজুরির কারণে খেলতে পারেননি তিনটি ইনিংস। তবু বাকি চার ম্যাচের ৭ ইনিংসেই তিনটি করে সেঞ্চুরি ও হাফসেঞ্চুরি হাঁকিয়ে নামের পাশে যোগ করেছেন ৭৭৪ রান।

কোনো সন্দেহ ছাড়াই সিরিজের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তিনি। ২-২ ব্যবধানে ড্র হওয়া অ্যাশেজে রান সংগ্রহের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলেন বেন স্টোকস। যিনি পুরো পাঁচ ম্যাচের ১০ ইনিংস ব্যাট হাতে নেমেও করেছেন স্মিথের চেয়ে ৩৩৩ রান কম, ৪৪১। এতেই বোঝা যায় এবারের অ্যাশেজে ঠিক কতোটা অবিশ্বাস্য ব্যাটিং করেছেন স্মিথ।

এরই মধ্যে অনেকে তাকে আখ্যা দিয়েছেন স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের পরেই দ্বিতীয় সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে। কে জানে, হয়তো পুরো ১০ ইনিংস ব্যাট করতে পারলে স্যার ডনের এক সিরিজে করা ৯৭৪ রানের বিশ্বরেকর্ডটি ভেঙেও ফেলতে পারতেন স্মিথ। তা হয়নি ঠিক, তবে স্মিথের এমন ব্যাটিং ঘিরে শুরু হয়েছে নানান আলোচনা ও বিশ্লেষণ।

যাতে এবার যোগ দিয়েছেন ভারতীয় ব্যাটিং ঈশ্বর শচিন টেন্ডুলকার। এক ভিডিও বার্তায় শচিন চেষ্টা করেছেন স্মিথের ব্যাটিংয়ের রহস্য ভেদ করতে। যা সাড়া ফেলেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

সে ভিডিও বার্তায় শচিন বলেন, ‘অ্যাশেজের প্রথম টেস্টে স্মিথকে আউট করার জন্য ইংল্যান্ডের বোলাররা স্লিপ কর্ডন ব্যবহার করতে চেয়েছিল। যে কারণে উইকেটরক্ষকের পাশে ৩-৪ স্লিপের সঙ্গে গালি-পয়েন্টেও রাখা হয় ফিল্ডার। তখন স্মিথ চতুরতার পরিচয়র দিয়ে বারবার অফসাইডে সরে আসছিল এবং নিজের লেগস্টাম্প উন্মুক্ত করে দিচ্ছিল। এতে করে সে অফসাইডের বলগুলো সহজেই ছেড়ে দিতে পারছিল এবং অন্যান্য বল খেলার ক্ষেত্রে দারুণ বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছে।’

দ্বিতীয় টেস্টের ব্যাপার শচিন বলেন, ‘লর্ডসে স্মিথের পরিকল্পনা ধরতে পারে ইংল্যান্ড। ফলে জোফ্রা আর্চারকে দিয়ে টানা বাউন্সার করাচ্ছিলো তারা। একইসঙ্গে রাখা হয়েছিল একজন লেগস্লিপ। কারণ স্মিথ ব্যাকফুটে ভর করে বলের লাইনে যাচ্ছিলো। এসময় ব্যাটসম্যানের মাথার অবস্থান ঠিক রাখাটা জরুরি। এ কারণেই আর্চারের বাউন্সারে স্মিথ যখন পুল খেলা বন্ধ রাখতে চেয়েছে, তখনই বেকায়দায় পড়েছে। ফলে পরের ম্যাচগুলোতে সে নিজের পরিকল্পনায় বদল আনে এবং অফসাইডে সরে যাওয়া বন্ধ রাখে। এবার স্মিথ পেছনের পায়ে খেলার চেয়ে, সামনের পায়ে বেশি ভর দিতে থাকে। এতে পুনরায় সফলতা পায়।’

শচিন বলতে থাকেন, ‘স্মিথের ব্যাটিংয়ের ব্যাপারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি আমি লক্ষ্য করলাম, তা হলো যখনই একটা লেগ স্লিপ দেয়া হয়, সে তার বাম পা সরানো বন্ধ করে দেয়। এভাবে সে নিজের লেগস্টাম্প বাঁচিয়ে খেলতে থাকে। এমনটা শুরুতে দেখা যায়নি। একারণেই আমি বলি যে স্মিথ হলো খুবই জটিল টেকনিকের, তবে গোছালো মাইন্ডসেটের একজন ব্যাটসম্যান।’

এসএইচ-২৫/২০/১৯ (স্পোর্টস ডেস্ক)