ভনকে স্কুলে যাওয়ার পরামর্শ সাকিব ভক্তের

ছোট দলগুলোর বড় হয়ে ওঠা সহ্য করতে পারেন না বিশ্ব মোড়লরা। সেই মোড়লদের দেশ ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ভন তাই সাকিব আল হাসানকে আক্রমণ করার সুযোগটা হাতছাড়া করতে চাইলেন না। সাকিবের নিষিদ্ধ হওয়ার খবর আসতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে টুইট করেন ভন, যে টুইট নিয়ে রীতিমত যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে।

ম্যাচ ফিক্সিংয়ের তথ্য গোপন করে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন সাকিব। এর মধ্যে এক বছর শাস্তি স্থগিত রাখা হয়েছে। সাকিবের আচরণ দেখে ওই এক বছরের শাস্তি বিবেচনা করবে আইসিসি।

মঙ্গলবার সাকিবের এই শাস্তির ঘোষণা আসার পর বিশ্বজুড়ে শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা। যেহেতু সাকিব একটা ভুল করে ফেলেছেন, সমালোচকদের সংখ্যাই বেশি। তবে মাইকেল ভন বোধ হয় শুধু সমালোচনাতেই থেমে থাকতে চাননি। সাকিবকে একেবারে দুর্নীতিবাজ বানিয়ে ছেড়েছেন। অথচ সাকিব প্রস্তাব পেয়েছিলেন, ফিক্সিং করেননি।

সাকিবের শাস্তি নিয়ে ভনের প্রথম টুইট ছিল, ‘সাকিব আল হাসান যে শাস্তিই পাক না কেন, কোনো সমবেদনা নেই। এ যুগে খেলোয়াড়েরা কি করতে পারবে আর কি পারবে না, তা সব সময়ই বলা হয়। কি কি জনানো উচিত, সেটাও বলা হয় তাদের। দুই বছর যথেষ্ট নয়। আরও বড় শাস্তি হওয়া উচিত ছিল।’

ভনের এমন টুইট স্বভাবতই ভালোভাবে নিতে পারেননি সাকিব ভক্তরা। তারা সেই টুইটের নিচে ইংলিশ দলের সাবেক অধিনায়ককে ধুয়ে দিতে থাকেন। ভক্ত-সমর্থকরা তাদের আবেগ প্রকাশ করবেনই, কিন্তু ভনেরও যেন কোনো কাজ নেই। যে কমেন্টেই তার বিপক্ষে গেছে, উত্তর দেয়ার জন্য পাগল হয়ে গেছেন।

ভনের আগ্রাসী টুইটের জবাবে এক সাকিব ভক্ত কমেন্ট করেন একটি ছবি দিয়ে, যেখানে ভন ও সাকিবের ক্যারিয়ারের তুলনামূলক তথ্য-উপাত্ত ছিল। ওই ছবিতে ভক্তের কমেন্ট ছিল, ‘আগে সমপর্যায়ে এসো।’ ভন সেটার জবাবে লিখেন, ‘আমি গড়পড়তা ছিলাম তা মেনে নিচ্ছি। কিন্তু দুর্নীতিগ্রস্ত ছিলাম না।’

ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়কের এমন জবাবের পর আরও খেপে যান সাকিব ভক্তরা। যেহেতু সাকিবের বিরুদ্ধে অভিযোগটা ম্যাচ ফিক্সিংয়ের জন্য, প্রস্তাব গোপন করার। তাই তাকে দুর্নীতিগ্রস্থ বলা যায় না, বেশিরভাগেরই কমেন্ট ছিল এমন। কেউ কেউ আবার গালাগালিও করেছেন।

পরে এক টুইটে ভন আবারও লিখেন,‘যারা গালাগালি করছেন, তাদের প্রতি বলছি, দুর্নীতি নিয়ে আমার সহ্যক্ষমতা শূন্য। কোন দলে খেলছেন, সেটি কোনো বিষয় না। এখন ক্রিকেটাররা জানে কোন কাজটি করা যাবে, কোন কাজটি করা যাবে না। তারা আরও জানে, তেমন কিছু হলেই জানাতে হবে। সেটি না করার পরিণতিও তারা জানে।’

ভনের এমন টুইটে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘গার্ডিয়ান’-এ গত বছর প্রকাশিত এক সংবাদের লিংক দেন এক টুইট ব্যবহারকারী, আর লিখেন-‘এটার কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।’ যে সংবাদটির শিরোনাম ছিল, ‘স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িত ক্রিকেটারদের মধ্যে শীর্ষস্থানীয় ইংলিশ খেলোয়াড়েরা।’

আরেক সাকিব ভক্ত লিখেন, ‘সাকিব দুর্নীতিগ্রস্ত নয়, সে একটি ভুল করেছে, অপরাধ করেনি। ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড নিয়ে কথা উঠলেই পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করেন।’ সেই টুইটেরও জবাব দেন ভন। লিখেন, ‘গোটা বিশ্বকে দুর্নীতিগ্রস্ত ভেবে নেওয়া মনের ভুল।’

এরপর আরেকজন ভনকে আক্রমণ করে লিখেন, ‘আইসিসিকে না জানানোটা দুর্নীতি নয়, ভুল। এ দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে না পারলে আবার স্কুলে যাওয়া শুরু করুন।’ ভন এ টুইটেরও জবাব দেন। তিনি লিখেন, ‘বাচ্চাদের দিয়ে আসতে আমি প্রতিদিনই স্কুলে যাই। এখন সব খেলোয়াড়ই নিয়ম জানে। প্রস্তাব পেলে জানিয়ে দাও। সে তা করেনি। সে দুর্নীতিগ্রস্ত।’

ভনের সেই টুইটেও হামলে পড়েন সাকিব ভক্তরা। পরে অবশ্য তিনি আর জবাব দেননি। তবে আগে যা করেছেন, সামনে আরও কিছু জবাব নিয়ে হাজির হলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। তেমন হলে এই যুদ্ধ চলতেই থাকবে।

এসএইচ-১৭/৩১/১৯ (স্পোর্টস ডেস্ক)