যেমন ছিল জাদুকর ম্যারাডোনার ৮৬’র বিশ্বকাপ?

৮৬’র মেক্সিকো বিশ্বকাপ। যে আসরে ফুটবল বিশ্ব পেয়েছিল এক জাদুকরকে। গ্রুপ পর্বে তেমন আলো ছড়াতে না পারলেও নক-আউট পর্বে নিজের জাত চিনিয়েছিলেন দিয়েগো ম্যারাডোনা। ইংলিশদের বিপক্ষে করেন ইতিহাসের সেরা দু’টি গোল। কোয়ার্টারেও বাজিমাত। মহাতারকার প্রস্থানের দিনে আরেকবার ফিরে দেখব, কেমন ছিল ফুটবল জাদুকরের ৮৬ বিশ্বকাপ।

মেক্সিকো এইটি সিক্স! ফুটবল শৈলী, বিতর্ক কিংবা অসামান্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা- কি ছিল না বিশ্বকাপের ১৩তম আসরে। অথচ এমন একটা আসর হওয়া নিয়েই ছিল সংশয়। অর্থনৈতিক মন্দার পর কলম্বিয়ানরা আয়োজনে অস্বীকৃতি জানালে, শেষ মুহূর্তে রাজি হয়েছিল মেক্সিকো। ভূমিকম্পের কারণে শঙ্কায় পড়েও শেষ পর্যন্ত মাঠে গড়ায় আসর। আর সেই আসরেই এক জাদুকরের উত্থান। এলেন, দেখলেন এবং জয় করলেন। কাঁপিয়ে দিলেন গোটা বিশ্বকে।

অবশ্য গ্রুপপর্বে ম্যারাডোনা ছিলেন না কারও মনোযোগে। আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি জ্বলে ওঠেন নক আউট পর্বে। তার অ্যাসিস্ট থেকে করা গোলে উরুগুয়েকে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় করে আলবিসেলেস্তারা।

তবে কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচটার পরই অমরত্বের সোপানে পা রাখেন দিয়েগো। প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড। প্রথমার্ধের নিষ্ফলা লড়াই শেষে বিরতি থেকে ফিরে পরপর ৫১ মিনিটে বহুল বিতর্কিত গোলটি করেন। হাত দিয়ে ইংল্যান্ডের জালে বল জড়ান আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি। কিন্তু গোলের মুহূর্তটা এড়িয়ে যায় রেফারির চোখ। ম্যাচ শেষে বিতর্কের ঝড় তোলে ওই গোলটা। যদিও পরবর্তীতে এটাকে ‘ঈশ্বরের হাত’ বলে দাবি করেন ম্যারাডোনা। তার ওই গোলের বিতর্কটা এখনো বয়ে বেড়াচ্ছে ফুটবল দুনিয়া।

৫৫ মিনিটে ম্যারাডোনার দ্বিতীয় গোলটাও হয়ে থাকে ইতিহাস। ইংল্যান্ডের মিডফিল্ডার ও ডিফেন্ডারদের নাকানি-চুবানি খাইয়ে তিনি যে গোলটা করেছেন সেটার বিশেষণ এক কথায় অবিশ্বাস্য। মধ্য মাঠে বল পেয়ে একক প্রচেষ্টায় সেটার সুন্দর পরিণতি দেন ম্যারাডোনা। এ গোলটাই ‘শতাব্দীর সেরা’ গোল হয়ে আছে।

সেমির লড়াইয়ে ২-০ ব্যবধানে বেলজিয়ামকে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নেয় আর্জেন্টিনা। ম্যাচে আর্জেন্টাইনদের পক্ষে দু’টো গোলই করেন ম্যারাডোনা।

ফাইনালে ৩-২ গোলে জার্মানদের হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয় আর্জেন্টিনা। আগের দুই ম্যাচে চার গোল করা ম্যারাডোনা গোল পাননি শিরোপার মঞ্চে। তবে আসর জুড়ে দ্যুতি ছড়ানোর পুরস্কার হিসেবে অবধারিতভাবেই টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের স্বীকৃতি পান ম্যারাডোনা।

এসএইচ-১৯/২৬/২০ (স্পোর্টস ডেস্ক)