সালাহ টপকে গেলেন রোনালদোকে

মাঝমাঠ থেকে লিভারপুলের অধিনায়ক জর্ডান হেন্ডারসনের নিখুঁত লং বল প্রায় আটকেই দিয়েছিলেন উলভস অধিনায়ক, সাবেক লিভারপুল ডিফেন্ডার কনর কোডি। বুক দিয়ে বলটা আয়ত্তে আনতে না আনতেই পেছনে ওত পেতে থাকা মোহাম্মদ সালাহর পায়ে চলে যায় বল। সেখান থেকে ঠান্ডা মাথায় দলকে এগিয়ে দেন এই মিসরীয় তারকা। গোলটি করে ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়েছেন লিভারপুল তারকা।

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে এটা ছিল সালাহর ৮৪তম গোল। ২০১৬-১৭ মৌসুমে রোমা থেকে লিভারপুলে যোগ দেওয়া এই ফরোয়ার্ড প্রথম মৌসুম থেকেই আছেন দুর্ধর্ষ ফর্মে। সেটারই প্রমাণ চার বছর যেতে না যেতেই লিগে ৮৪ গোল। গোলমেশিন সালাহর কার্যকারিতা যে কতটুকু, তা বোঝাতে ফুটবল পরিসংখ্যানবিদেরা একটা অবিশ্বাস্য তথ্য দিয়েছেন।

স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে পর্তুগিজ উইঙ্গার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোও ৮৪ গোল করেছিলেন। ২০০৩ সাল থেকে অর্ধযুগ ইউনাইটেডে কাটানো এই পর্তুগিজ উইঙ্গার খেলেছিলেন ১৯৬ ম্যাচ। কিন্তু রোনালদোর সমান গোল করতে সালাহ খেলেছেন মাত্র ১৩১ ম্যাচ। অর্থাৎ রোনালদোর চেয়ে একটি-দুটি নয়, ৬৫ ম্যাচ কম খেলে তাঁর সমান গোল করলেন সালাহ। সে হিসাবে রোনালদোকে টপকেই গিয়েছেন সালাহ। ভাবা যায়!

গোলটি আরেক রেকর্ডও এনে দিয়েছে সালাহকে। আগের রেকর্ডে তিনি রোনালদোকে টপকালে এ রেকর্ডে চলে এসেছেন মেসির কাতারে। ২০১৭ সালে লিভারপুলে যোগ দেওয়ার পর ঘরের মাঠে ৫২ গোল করেছেন সালাহ। লিভারপুলে সালাহ আসার পর থেকে এক মাঠে সবচেয়ে বেশি গোল করার রেকর্ডে শীর্ষে থাকা মেসির হাতছোঁয়া দূরত্বে চলে এসেছেন এই উইঙ্গার।

একই সময়ে বার্সেলোনার মাঠ ক্যাম্প ন্যুতে মেসির গোল ৬৩টি, বায়ার্নের ঘরের মাঠ অ্যালিয়াঞ্জ অ্যারেনায় পোলিশ স্ট্রাইকার রবার্ট লেফানডফস্কির গোল ৫৯টি। এ দুজন ছাড়া সালাহর সামনে আর কেউ নেই।

রোনালদোভক্তরা অবশ্য পালটা যুক্তি দিতেই পারেন। স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের অধীনে রোনালদোকে মূলত খেলানো হতো ৪-৪-২ ছকে একজন ওয়াইড মিডফিল্ডার হিসেবে। সে তুলনায় সালাহ ৪-৩-৩ ছকে রাইট উইঙ্গার হিসেবে খেলে যান নিয়মিত। কখনও কখনও আবার স্ট্রাইকার হিসেবেও তাঁকে খেলতে দেখা যায়। রোনালদোর চেয়ে প্রতিপক্ষের গোলপোস্টের অপেক্ষাকৃত কাছে থাকেন সালাহ, দলে গোল করার সুযোগও বেশি পান। আর তখনকার রোনালদো এখনকার মতো গোল করায়ও অত মনোযোগী ছিলেন না। এ কারণে গোল তো কম হবেই!

তবে যা-ই হোক, প্রিমিয়ার লিগে সেরা উইঙ্গারদের কাতারে সালাহ যে এর মধ্যেই চলে এসেছেন, এ নিয়ে অন্তত আর সন্দেহ নেই।

এসএইচ-০৯/০৭/২০ (স্পোর্টস ডেস্ক)