সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ১৬ বছর পর ফাইনালে ওঠার সুযোগ ছিল বাংলাদেশের। ফাইনাল খেলার স্বপ্ন শেষ পর্যন্ত অধরাই থাকলো। ম্যাচের ৮৭ মিনিট পর্যন্ত এগিয়ে থেকেও জিততে পারেনি বাংলাদেশ। শেষদিকে পেনাল্টি থেকে গোল পেয়ে ম্যাচ ড্র হয় ১-১ গোলে। আর তাতেই স্বপ্ন ভেঙে চুরমার লাল-সবুজ জার্সিধারীদের।
২০০৫ সালের পর সাফে আবারও ফাইনালের মঞ্চে উঠতে নেপালের বিপক্ষে জয়ের বিকল্প ছিল না বাংলাদেশের, বিপরীতে নেপালের দরকার ছিল ড্র। এমন সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়ে শেষ পর্যন্ত শেষ হাসি হাসল নেপাল। বিতর্কিত পেনাল্টি আর লাল কার্ডেই বিদায়ঘণ্টা বাজলো বাংলাদেশের।
ম্যাচ শুরুর ৯ মিনিটেই রেজার গোলে লিড পায় বাংলাদেশ। বাঁপ্রান্ত থেকে রাকিব বল নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন, নেপালের ডিফেন্ডার তাকে বাঁধা দিলে পড়ে যান। উজবেকিস্তানের রেফারি ফাউলের বাঁশি বাজান। জামাল ভূঁইয়ার ফ্রি কিকে মাথা ছুঁইয়ে গোল করেন সুমন রেজা। এরপর ১৩ মিনিটে সাদ উদ্দিনের দূরপাল্লার শট গোলপোস্টের বাইরে দিয়ে যায়।
ড্র করলেই ফাইনাল। তাই হাত গুটিয়ে বসে থাকেনি নেপাল। ১৫ মিনিটে সমতায় ফেরার সুযোগ নষ্ট করেন রোহিত চান্দ।
২২ মিনিটে আবারও বাংলার সম্ভাবনা। আবারও সুমন রেজা। নেপালের পোষ্টে শট স্ট্রাইকারের। কিন্তু তা রুখে দেন গোলরক্ষক কিরন কুমার। যদিও পাশেই আনমার্ক থাকা ইব্রাহিমের কাছে বল গেলে হতে পারতো ভিন্ন কিছু! এরপর সাদের প্রচেষ্টাও চলে গেছে অফ টার্গেটে।
৩২ মিনিটে সমতায় ফেরার সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন নেপাল উইঙ্গার আইয়ুস ঘালান। প্রথমার্ধের শেষ দিকে তার আরও একটি হেড লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে হতাশায় শেষ হয় ওদের প্রথমার্ধ।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই আক্রমনাত্মক নেপাল। গোল পেতেই হবে। তবে আবারও মিস ওদের ফরোয়ার্ডের। একই কাজ করেছেন সুমন রেজাও। কিরন কুমারকে একা পেয়েও পোস্টে বল রাখতে পারেননি তিনি।
৫৫ মিনিটে হঠাৎই কাপ্তান জামালকে তুলে নেন ব্রুজন। জায়গা পূরণ করেন সোহেল রানা। এরপর ইব্রাহিমের জায়গায় মতিনকে নামিয়ে আরও আক্রমনাত্মক খেলার চেষ্টায় লাল সবুজ। কিন্তু প্রচেষ্টাগুলো ছিল পোস্টের বাইরে।
নেপালের অনেক সুযোগ এদিন একাই রুখে দিয়েছেন আনিসুর রহমান জিকো। গোটা ম্যাচের চিত্রনাট্যে সুপার হিরো তিনিই। তবে নায়কও কদাচিৎ বনে যান খলনায়ক। ৭৮ মিনিটে ওর লাল কার্ডে ১০ জনের বাংলাদেশ।
এর আগে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সবশেষ ৪ আসরে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে আবারও ফাইনালের যাওয়ার হাতছানি ছিল জামাল ভূঁইয়াদের সামনে। নেপালকে হারাতে পারলেই ১৬ বছর পর সাফের ফাইনাল খরা কাটার সুযোগ ছিল বাংলাদেশের।
সব ভালো শুরুর শেষ পৃষ্ঠা সবসময় মধুর হয় না। অদৃষ্ট অনেক সময়ই নিয়ে যায় করুণ পরিণতির দিকে। ৮৮ মিনিটে ডি বক্সে বিশ্বনাথের অহেতুক ধাক্কার মাশুল বাংলাদেশের ফুটবলকে কতদিন দিতে হবে কে জানে!
এসএইচ-২৪/১৩/২১ (স্পোর্টস ডেস্ক)