সুজন কেনো ক্ষেপেছেন সাকিবের ওপর

সাকিব আল হাসান ইস্যুতে উত্তপ্ত দেশের ক্রিকেট। আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে তার থাকা না থাকা নিয়ে অনেক আগে থেকেই চলছিল সরগরম আলোচনা। এরই মধ্যে তাকে রেখেই স্কোয়াড ঘোষণা করার পর আবারও মানসিক ও শারীরিক বিপর্যস্ততার কথা বলে সরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দেন সাকিব। এদিকে, তার এমন আচরণে বেজায় অসন্তুষ্ট বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। দুইজনের পরস্পর বিরোধী বক্তব্যে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে, টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজনও প্রিয় শিষ্য সাকিবের ওপর ক্ষেপেছেন। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, দেশের ক্রিকেটের প্রয়োজনে সিনিয়র ক্রিকেটারদের না পাওয়াটা দুঃখজনক। সাকিব ফিরলে তার সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলা হবে। কারো জন্য বাংলাদেশের ক্রিকেট বসে থাকবে না।

সুজন বলেন, সাকিব না খেললে না খেলুক৷ তবে সেটা স্পষ্ট করুক।

অন্যদিকে, সব ফরম্যাটে খেলার জন্য লিখিত দিয়েও প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছেন ক্রিকেটাররা। শুধু সাকিব আল হাসান নন এই তালিকায় আছেন তামিম ইকবাল এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও! জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। সিনিয়র ক্রিকেটারদের এমন অপেশাদার সিদ্ধান্তে বোর্ড বিপাকে পড়ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এদিকে, সাকিব যদি দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে খেলতে না চায় তার জন্য লিখিত আবেদন করতে হবে বলে জানান পাপন।

সাকিব ইস্যুতে আর দোটানায় পড়তে চান না তিনি। গণমাধ্যমকে স্পষ্ট জানালেন, সাকিব যাই করুক লিখিত দিক।

এর আগে রোববার দুবাইয়ের উদ্দেশে দেশ ত্যাগ করেন টাইগার অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। অথচ আগামী ১১ মার্চ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তিনটি ওয়ানডে ও দুটি টেস্ট ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। তার আগে কেন তিনি দলের বাইরে সে প্রশ্নের জবাবে সাকিব গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, তিনি এখন খেলার অবস্থাতে নেই।

এদিকে সাকিব ইস্যুতে সোমবার গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন বিসিবি সভাপতি পাপন। সাকিব তাকে খেলবে জানিয়ে, বিশ্রামে যেতে চাওয়ায় অসন্তুষ্ট তিনি। তবে সাকিবকে দিতে চান পূর্ণ স্বাধীনতা। সেক্ষেত্রে টাইগার অলরাউন্ডারকে সব কিছু স্পষ্ট করতে হবে প্রথম থেকেই, কোনো সিরিজের মাঝখানে নয়। তবে মুখে এক কথা বলে, অন্যটা যাতে করতে না পারে সে জন্য তিনি সবকিছু চান লিখিত।

এ বিষয়ে পাপন বলেন, ‘সাকিব যাই করতে চায়, ওকে লিখিত দিতে হবে। কারণ আমাকে বলল খেলবে, সেটাতো আর থাকল না। জালাল ভাইকে বলেছে খেলবে না। আবার দেখা গেল খেলবে।’

এর আগে দুবাইয়ে যাওয়ার আগে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সাকিব আল হাসান বলেন, ‘আমি মানসিক ও শারীরিকভাবে যে অবস্থায় আছি, আমার মনে হয় না আমার পক্ষে এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা সম্ভব। এ কারণেই আমার মনে হয়, আমি যদি একটা বিরতি পাই, যদি ওই আগ্রহটা ফিরে পাই, তাহলে আমার জন্য খেলাটা সহজ হবে।’

তবে সাকিব কবে নাগাদ ফিরবেন সে বিষয়ে দেননি কোনো সঠিক উত্তর। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজে সাকিবের না থাকাটা এক প্রকার নিশ্চিতই বলা চলে। সাকিব বলেন, ‘হয়তো ১৫-২০ দিনের বিশ্রাম শেষে ক্রিকেটে আমার আগ্রহটা আসতে পারে। হয়তো দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে দলের সঙ্গে যোগ দিতে পারি।’

এ বিষয়ে পাপন বলেন, ‘সে ওয়ানডে খেলবে না, টেস্ট খেলবে। এতদিন ধরে যা হয়ে আসছে, ঠিক তার উল্টোটা। সাকিব এতদিন টেস্ট না খেলার কথা বলে আসছিল। এখন আবার বলছে ওয়ানডে খেলবে না। বিষয়টা পুরো উল্টো।’

এদিকে আগামী ১৮ মার্চ তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। এরপর ২০ ও ২৩ মার্চ সিরিজের বাকি দুই ওয়ানডেতে মাঠে নামবে টাইগাররা। এরপর দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৩১ মার্চ মাঠে নামবে মুমিনুল হকরা। এরপর ৮ এপ্রিল সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচ শেষে দেশের উদ্দেশে রওনা দেবেন তামিম ইকবালরা।

এসএইচ-০৩/০৮/২২ (স্পোর্টস ডেস্ক)