ইনিংস হারের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ!

চট্টগ্রাম টেস্টের পর ঢাকা টেস্টও ড্রয়ের দিকে এগোচ্ছে বলেই ধারণা করা হচ্ছিল। তবে চতুর্থ দিনের শেষ বিকেলে দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। নিশ্চিত ড্রয়ের দিকে থাকা টেস্টে এখন ইনিংস হারের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ। পঞ্চম তথা শেষ দিনে শুক্রবার  ৬ উইকেট হাতে নিয়ে ব্যাট করতে নামবে লিটন-মুশফিকরা।

চতুর্থ দিনে বৃহস্পতিবার ঢাকা টেস্টের প্রথম দুই সেশন কার্যত ম্যাড়ম্যাড়ে রূপ নেয়। ব্যাট হাতে বোলারদের শাসন করছিলেন দুই লঙ্কান ব্যাটার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ও দিনেশ চান্দিমাল। এই দুই ব্যাটারের ওপর ভর করে শেষ পর্যন্ত ৫০৬ রানে গিয়ে থামে সফরকারীরা। আর তাদের লিড দাঁড়ায় ১৪১ রানে। তখনো পর্যন্ত ম্যাচটি ড্রয়ের দিকেই ছিল। কারণ বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামার আগে চতুর্থ দিনে এক ঘণ্টারও কম ব্যাট করার সময় পেয়েছিল।

কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসেরই পুনরাবৃত্তি ঘটালেন বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা। স্কোরবোর্ডে মাত্র ২৩ রান যোগ করতেই চার চারটি উইকেট নেই স্বাগতিকদের। প্রথমে তামিম, এরপর নাজমুল হাসান শান্ত এবং মুমিনুলের পর সবশেষ ড্রেসিংরুমের পথ ধরলেন মাহমুদুল হাসান জয়ও।

প্রথম ইনিংসে শূন্য রানে আউট হয়েছিলেন তামিম, এবার দ্বিতীয় ইনিংসেও সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখলেন। আবারও ডাক মারলেন! আসিথা ফার্নান্দোর বলে স্লিপে দাঁড়ানো মেন্ডিসকে যেন ক্যাচ প্রাকটিচ করালেন তামিম। নিজের ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো দুই ইনিংসেই শূন্য রানে আউট হলেন এই ওপেনার। এর আগে বাংলাদেশি ওপেনারদের মধ্যে জাভেদ ওমর এবং মাহমুদুল হাসান জয়ও এমন লজ্জার রেকর্ড গড়েছিলেন।

তামিমের পর ব্যাট করতে নামা নাজমুল হাসান শান্তও বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না। রান আউটের ফাঁদে পড়ে মাত্র দুই রান করে ফিরে গেছেন।

এরপর হতাশ করলেন দলের কাণ্ডারি মুমিনুল হক। আগের ইনিংসে তাও ৯ রান করতে পেরেছিলেন। কিন্তু আজ ফিরলেন শূন্য রানে। যদিও রাজিথার বলে জোরাল আবেদনের পরও আম্পায়ার আউট দেননি। তবে শেষ পর্যন্ত রিভিউ নিয়ে সফল হন সফরকারীরা।

১৯ রানের মাথায় দুই উইকেট হারানোর পর দলীয় ২৩ রানে চতুর্থ উইকেট পড়ল বাংলাদেশের। আসিথা ফার্নান্দোর দ্বিতীয় শিকার হয়ে ২৭ বলে ১৫ রান করে ফিরে গেছেন ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়।

এর আগে, চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে হারের শঙ্কা বাড়ে বাংলাদেশের। লঙ্কানদের চেয়ে স্বাগতিকরা তখনো পিছিয়ে থাকে ১১৮ রানে। সেই মুহূর্তে ক্রিজে ছিলেন প্রথম ইনিংসে রেকর্ড জুটি গড়া মুশফিক ও লিটন দাস। এ দুইজনের ওপরই নির্ভর করছিল বাংলাদেশের ম্যাচের ভাগ্য।

এর আগে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঢাকা টেস্টে পাঁচ উইকেট শিকার করেছিলেন সাকিব আল হাসান। প্রায় চার বছর তথা দিনের হিসেবে ১৪১৫ দিন পর টেস্ট ক্রিকেটে পাঁচ উইকেটের দেখা পেয়েছেন সাকিব। এ নিয়ে টেস্টে ১৯তম বার পাঁচ উইকেট শিকার করেন তিনি। এখানেই শেষ নয়। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ঘরের মাঠে টেস্টে দেড়শ উইকেটের মাইলফলকও ছুঁলেন তিনি।

সর্বশেষ ২০১৮ সালের জুলাইতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তাদের মাঠে ফাইফারের দেখা পেয়েছিলেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। কিংস্টনের সেই ম্যাচে ৩৩ রানের বিনিময়েই ৬ উইকেট নিয়েছিলেন সাকিব।

এবার লঙ্কানদের বিপক্ষে ৫ উইকেট নিলেন সাকিব। ফাইফার পেতে ৪০ ওভার বোলিং করে ১১ মেডেন নিয়ে খরচ করেছেন ৯৬ রান।

এদিকে, শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে গেছে ৫০৬ রান করে। তাদের লিড ১৪১ রানের। আর তাই পিছিয়ে থেকেই চতুর্থ দিন শেষ বিকেলে ব্যাটিংয়ে নেমেছিল বাংলাদেশ।

এসএইচ-১৯/২৬/২২ (স্পোর্টস ডেস্ক)