১২ হাজার টাকার মোটরসাইকেল লিটারে যাবে ৯০ কিলোমিটার!

নেই কোনো কারিগরি জ্ঞান, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে নিম্ন মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াকালীন পরিবারে আর্থিক দীনতায় এগিয়ে যাওয়া হয়নি নাহিদের। ছোটবেলা থেকেই নতুন কিছুর প্রতি প্রচণ্ড আগ্রহী নাহিদ এক মাস দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে মেধা খাটিয়ে পুরাতন একটি বাইসাইকেলকে মাত্র ১২ হাজার টাকা খরচ করে বানিয়েছেন মোটরসাইকেল। আর গাড়িটি নিয়ে রীতিমতো হইচই পড়ে গেছে এলাকাজুড়ে। এদিকে আর্থিক ও কারিগরিসহ সকল প্রকার সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান।

জানা যায়, শেরপুর সদর উপজেলার কামারের চর ইউনিয়নের সন্ন্যাসীরচর গ্রামের আব্দুল মালেক ও নাজমুন্নাহার দম্পতির চার ছেলের মধ্যে সবার ছোট নাহিদ। সংসারে আর্থিক দীনতায় লেখাপড়া হয়ে না ওঠায় বাবার কাছ থেকে সামান্য কিছু আর্থিক সাহায্য নিয়ে বাড়ির পাশেই রাস্তার ধারে গড়ে তোলেন অটোরিকশা গ্যারেজ। অটোরিকশা মেরামতের পাশাপাশি নতুন কিছু তৈরির স্বপ্ন দেখেন অষ্টম শ্রেণি পাস নাহিদ। যেই ভাবনা সেই কাজ। গত এক মাসে অক্লান্ত পরিশ্রম করে একটি পুরোনো বাইসাইকেলকে মাত্র ১২ হাজার টাকা খরচ করে বানিয়েছেন মোটরসাইকেল।

নাহিদ জানান, ছোটবেলা থেকেই তার মোটরসাইকেল তৈরির ইচ্ছা ছিল। সেই ইচ্ছা থেকেই পুরোনো একটি বাইসাইকেল ও পুরোনো কিছু যন্ত্রাংশের সাহায্যে এক মাসের মধ্যে তৈরি করেছেন একটি মোটরসাইকেল। সাশ্রয়ী মোটরসাইকেলটি প্রতি লিটার পেট্রোলে চলতে পারে ৯০ কিলোমিটার পর্যন্ত।

নাহিদের এমন কর্মকাণ্ড দেখে খোদ পরিবারের সদস্যরাই হতভম্ব। তারা জানান, সাইকেলের টাকা দিয়ে মোটরসাইকেল এটা সত্যিই অবিশ্বাস্য। তাদের দাবি, সরকারি সহযোগিতা পেলে নাহিদ হয়তো আরও ভালো কিছু করতে পারবেন।

এলাকাবাসী জানান, দরিদ্র পরিবারের সন্তান নাহিদ। তার বাবা পেশায় একজন বাউল শিল্পী ও মা গৃহিণী। নিজের ভাবনা থেকেই জ্বালানিসাশ্রয়ী মোটরসাইকেল তৈরি করে নজর কেড়েছেন।

নাহিদের এমন উদ্যোগে খুশি এলাকার মানুষও। তাই নাহিদকে সার্বিকভাবে সহযোগিতার কথা জানান কামারের চর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান।

অষ্টম শ্রেণি পাস করা নাহিদ ছোট থেকেই খুব চঞ্চল। কিন্তু অর্থের অভাবে পড়াশোনা বন্ধের পর পরিবারের সদস্যরা বাড়ির পাশে অটোরিকশার গ্যারেজ দিয়ে দেন। সেখানে নাহিদ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, বাইসাইকেল মেরামতের কাজ করেন।

এসএইচ-১৭/১৪/২২ (আঞ্চলিক ডেস্ক)