১৯৬৬ বিশ্বকাপের নায়ক যখন কুকুর

ফিফার অষ্টম বিশ্বকাপটি স্মরণীয় হয়ে আছে একটা কুকুরের জন্য। বিশ্ব আসরের চ্যাম্পিয়ন দল কিংবা আয়োজন নিয়ে যতটা না আলোড়ন ছিল তার চেয়ে অনেক বেশি আলোচনার জন্ম দিয়েছিল পিকলস নামের একটি পোষা কুকুর। ঘটনাটি ১৯৬৬ বিশ্বকাপের। বলা হচ্ছে ১৯৬৬ বিশ্বকাপের আগে ইংল্যান্ড থেকে জুলে রিমে ট্রফি চুরি হওয়া এবং তা ফিরে পাওয়ার চমকপ্রদ গল্প।

যে ট্রফির জন্য বিশ্ব আসর, তারই হদিস নেই। যার জন্য চলবে মরনপণ লড়াই, সে সোনালি ট্রফি লাপাত্তা। বলছি, ১৯৬৬ ফিফা বিশ্বকাপের কথা। গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ শুরুর কদিন আগে চুরি হয়ে যায় জুলে রিমে ট্রফি। অবস্থা এমন যে বিশ্ব আসর আদৌ হবে কি না, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ও যে ট্রফি ছিল অক্ষত, স্বাভাবিক সময়ে ইংল্যান্ডের বুক থেকে তা হারিয়ে যায় চোখের পলকে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় এগিয়ে আসে ফিফা, তৈরি হয় জুলে রিমের রেপ্লিকা। নকল ট্রফি নিয়েই বিশ্বকাপ আয়োজনের প্রস্তুতি সারে ব্রিটিশরা। নিজেদের অহম রক্ষাই তখন সবচেয়ে বড় ইংরেজদের কাছে।

তবে, কপাল বেশ ভালো ছিল ইংল্যান্ডের। স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড, এমআই সিক্স যা করতে পারেনি, তা করে দেয় এক পোষা কুকুর, পিকলস। ডাস্টবিন থেকে কাগজ আর পলিথিনে মোড়ানো জুলে রিমেকে খুঁজে দেয় সে, বেঁচে যায় রানির সম্মান। এরপর ওই পুরো আসরে বিজয়ী ববি চার্ল্টনের দলের চেয়েও বড় তারকা ছিল এই পিকলস।

ট্রফি হারানো ছাড়াও ফিফার অষ্টম আসর আয়োজনে ভালোই বেগ পেতে হয় ইংল্যান্ডকে। আসর বয়কট করে বিশ্বকাপ খেলতে আসেনি আফ্রিকান দেশগুলো। পরে, এশিয়ানরাও হাঁটে সে পথে যদিও শেষ পর্যন্ত মত বদলায় তারা। কিন্তু জাপান-সাউথ কোরিয়াকে ছাপয়ে এ বিশ্বকাপের টিকিট পায় উত্তর কোরিয়া। এ আসরেই প্রথমবারের মতো সুযোগ পায় পর্তুগাল।

টানা তৃতীয় বিশ্ব শিরোপা জিততে লন্ডনে আসে পেলের ব্রাজিল। কিন্তু ১৬ দলের ১৫ জন একত্রিত হয়ে নামে সেলেসাও ঠেকাও মিশনে। প্রথম ম্যাচেই বুলিগেরিয়ানদের ট্যাকলে আসর থেকে ছিটকে যান কালো মানিক। আর ব্রাজিল বাদ পড়ে গ্রুপ পর্বে।

এ বিশ্বকাপের আরও একটা অদ্ভুত ঘটনা ঘটে আর্জেন্টিনা-ইংল্যান্ড ম্যাচে। স্বাগতিক কোচ আলবেসিলেস্তেদের ফাউলে বিরক্ত হয়ে গালি দেন এনিমেল বলে। মাঠে খেলোয়াড়রাও কম ছিলেন না। হট্টগোল থামাতে কয়েক দফায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রয়োজন হয় রেফারির।

তবে, এ আসরের সবচেয়ে বড় অঘটনের জন্ম হয় ফাইনালে। যেখানে বেকেনবাওয়ারের হট ফেভারিট জার্মানিকে ৪-২ গোলে হারিয়ে শিরোপা জিতে নেয় ইংল্যান্ড। যদিও, স্বাগতিকদের করা তৃতীয় গোলটাকে বিশ্ব আসরের বিতর্কিত গোলগুলোর শীর্ষেই রাখেন ফুটবল বোদ্ধারা।

এসএইচ-০৮/১৬/২২ (স্পোর্টস ডেস্ক)