রোমাঞ্চ ছড়িয়ে জিতে গেল দক্ষিণ আফ্রিকা

লো স্কোরিং ম্যাচ, তবুও রোমাঞ্চে ভরপুর ছিল ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচটি। যেখানে দাপট দেখিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার লুঙ্গি এনগিদি, এইডেন মারক্রাম, ডেভিড মিলার ও ভারতের সূর্যকুমার, আর্শদীপ সিংরা। বিরাট কোহলির ক্যাচ মিস আর রোহিতের রানআউট করার সুযোগ মিসে রোমাঞ্চকর ম্যাচে শেষ পর্যন্ত ৫ উইকেটে জিতেছে প্রোটিয়ারা। ভারতের ১৩৩ রানের জবাব তারা দিয়েছে ২ বল হাতে রেখে।

এ জয়ের ফলে ভারতকে টপকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার টুয়েলভের ২ নম্বর গ্রুপে শীর্ষে উঠল দক্ষিণ আফ্রিকা। ৪ পয়েন্ট করে আছে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে থাকা ভারত ও বাংলাদেশের। ৩ পয়েন্ট নিয়ে জিম্বাবুয়ের অবস্থান টেবিলের চারে। পাঁচে থাকা পাকিস্তানের পয়েন্ট ২।

রান তাড়া করতে নেমে ভারতের মতো ইনিংস বিপর্যয়ের শঙ্কা দেখা দেয় দক্ষিণ আফ্রিকারও। ২৪ রানে তারা হারায় কুইন্টন ডি কক, রাইলি রুশো ও টেম্বা বাভুমার উইকেট। বাংলাদেশের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করা রুশো আউট হন শূন্য রানে, ডি কক ১ ও টেম্বা ১০ রান করেন। টপঅর্ডারের দুটি উইকেটই নেন আর্শদীপ সিং। এরপর এইডেন মারক্রাম ও ডেভিড মিলারের ব্যাটে লড়াই চালায় প্রোটিয়ারা। দুজনে মিলে গড়েন ৭৬ রানের জুটি। এরপর মারক্রাম আউট হন হার্দিক পান্ডিয়ার বলে। ত্রিস্টান স্টাবস ৬ বলে করেন ৬।

শেষ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার জয়ের জন্য দরকার ছিল ৬ রান। প্রথম বলটি ডট নে ভুবনেশ্বর। পরের বলে নেয় এক রান। তৃতীয় বলে উইকেটকিপারের মাথায় ওপর দিয়ে চার হাঁকান মিলার। পরের বলে জয় নিশ্চিত করে প্রোটিয়ারা। মিলার শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৫২ রান।

শুরুতে দক্ষিণ আফ্রিকার পেসারদের বাউন্সের গোলা, আর শেষার্ধে সূর্যকুমার যাদবের নান্দনিক ব্যাটিং শৈলীতে ৯ উইকেটে ভারতের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৩৩। টস জিতে ব্যাট করতে নামা ভারতের ব্যাটারদের দিকে বাউন্স আর পেস মিলিয়ে রীতিমতো আগুনের গোলা ছুড়ছিলেন লুঙ্গি এনগিদি। তার সেই চাপ সামাল দিতে দিতে ৪৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে টিম ইন্ডিয়া। সেখান থেকে লড়াই চালান সূর্যকুমার যাদব।

দক্ষিণ আফ্রিকার করা প্রথম ৯ বলে এক রানও নিতে পারেনি ভারত। লোকেশ রাহুল ওয়েইন পারনেলের প্রথম ওভারে রানের খাতাই খুলতে পারেননি। ইনিংসের দশম বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ভারতের রানখরা কাটান রোহিত শর্মা। কাগিসো রাবার ওই ওভারে আর কোনো রান আসেনি। রোহিত শর্মা আউট হন পঞ্চম ওভারের দ্বিতীয় বলে। লুঙ্গি এনগিদির করা বলে তাকেই ক্যাচ দেন ভারত ক্যাপ্টেন। প্যাভিলিয়নে ফেরা রোহিত ১৪ বলে করেন ১৫ রান। একই ওভারের শেষ বলে বিদায় নেন রাহুলও। ১৪ বলে তিনি করেন মাত্র ৯ রান।

বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি বিরাট কোহলিও। ওয়ানডাউনে নামা এ ব্যাটারও এনগিদির শিকারে পরিণত হন। প্রোটিয়া পেসারের বাউন্সার ফাইন লেগে খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন কোহলি। ১১ বলে তিনি করেন ১২ রান। এরপর ম্যাচ ধরে ফেলেন সূর্যকুমার যাদব। অন্য প্রান্তে অবশ্য তাকে যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেননি দিনেশ কার্তিক। একদিকে সূর্যকুমার মারকাটারি ঢংয়ে খেলছিলেন, অন্যদিকে একের পর এক ডট দিয়ে অ্যাংকরিং করার চেষ্টা করেন হার্ডহিটার কার্তিক। তবে ১৫ বলে তাকে আউট হতে হয় ৬ রানের মাথায়। এবার শিকারি ওয়েইন পারনেল।

তার আগেই অবশ্য স্রোতের বিপরীতে গিয়ে ফিফটি তুলে নেন সূর্য। ৫০ রান করতে তার লাগে ৩০ বল। রবিচন্দ্রন অশ্বিনও খুব বেশিক্ষণ অ্যাংকরিং করতে পারেননি। তিনি ফেরেন ১১ বলে ৭ রান করে। ১৮তম ওভারের পঞ্চম বলে আউট হন সূর্য। তার ৪০ বলের ইনিংসে ছিল ৬টি চার ও ৩টি ছয়ের মার। শেষ দিকে ভুবনেশ্বর ৪ ও আর্শদীপ সিং ২ রান করেন। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে এনগিদি ৪টি, ওয়েইন ৩টি ও নর্কিয়া একটি উইকেট পান।

এসএইচ-১০/৩০/২২ (স্পোর্টস ডেস্ক)