বিশ্বকাপে টিকে রইলো নেদারল্যান্ডস-ইকুয়েডর

জিতলেই প্রথম দল হিসেবে কাতার বিশ্বকাপের শেষ ষোলো নিশ্চিত। এমন সমীকরণের ম্যাচে নেদারল্যান্ডসকে রুখে দিল ইকুয়েডর। অন্যদিকে এক ম্যাচ হাতে রেখেই বিদায় নিল স্বাগতিক কাতার।

আল রাইয়ানের খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে শুক্রবার ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচে ১-১ গোলে ড্র নিয়ে মাঠ ছেড়েছে দুই দল। প্রথমার্ধে আসরের দ্রুততম গোল করে ডাচদের এগিয়ে দেন কোডি হাকপো। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে গোলটি শোধ করে দেন ইকুয়েডরের এনের ভালেন্সিয়া।

এবারের আসরে নেদারল্যান্ডস ও ইকুয়েডর দুদলেরই দ্বিতীয় ম্যাচ। নিজেদের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক কাতারকে ২-০ গোলে হারিয়েছিল ইকুয়েডর। জয় দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করেছিল ডাচরাও। ২-০ গোলে আফ্রিকার চ্যাম্পিয়ন সেনেগালকে হারিয়েছিল তারা।

দুটি করে ম্যাচ খেলে নেদারল্যান্ডস ও ইকুয়েডর দুই দলেরই সংগ্রহ ৪ পয়েন্ট করে। দিনের আরেক ম্যাচে কাতারকে ৩-১ গোলে হারিয়ে দেওয়া সেনেগাল সমান ম্যাচে পেয়েছে ৩ পয়েন্ট। আর কাতার এখনো পয়েন্ট খাতা খুলতে পারেনি। ফলে তাদের বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে।

আক্রমণের পসরা সাজিয়ে ষষ্ঠ মিনিটেই এগিয়ে যায় নেদারল্যান্ডস। ডেভি ক্লাসেনের পাসে বল পেয়ে বুলেট গতির শটে জাল খুঁজে নেন হাকপো। এবারের আসরে এটাই দ্রুততম গোল।

পুরো ম্যাচে আধিপত্য করে খেলেছে ইকুয়েডর। গোলের উদ্দেশে তারা নিয়েছে ১৫টি শট। যার মধ্যে ৪টি ছিল অন টার্গেট। অন্যদিকে মাত্র ২টি শট নিয়েছে ডাচরা। তাছাড়া বল দখল, পাস কোথাও ইকুয়েডরকে দমিয়ে রাখতে পারেনি ভার্জিল ফন ডাইকরা।

এ সমীকরণটাই বলে দেয় ম্যাচে কতটা অসহায় ছিল নেদারল্যান্ডস। অথচ এ দল নিয়েই বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন দেখছেন তাদের কোচ লুইস ফন গাল।

ম্যাচের প্রথমার্ধে বল দখল, পাস কিংবা শট সবদিক থেকে ডাচদের তুলনায় এগিয়ে ছিল ইকুয়েডর। তবে তারা পিছিয়ে ছিল শুধু ম্যাচ শুরুর ৬ মিনিটে গাকপোর নেওয়া শটটি ঠেকাতে ব্যর্থ হয়ে। বাঁ পায়ে ক্লাসেনের টপ কর্নার নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে গাকপো পরাস্ত করেন ইকুয়েডরের গোলরক্ষক হার্নান গালিনদেজকে।

প্রথমার্ধে ডাচদের এই একটি শট ছাড়া উল্লেখ করার মতো আর কোনো পারফরম্যান্স চোখে পড়েনি। বরং প্রধমার্ধের যোগ করা সময়ে এস্তুপিনানের শটে সমতায় ফিরকে পারতো ইকুয়েডর। যদি ডি বক্সের বাইরে থেকে তার শট নেওয়ার আগে অফসাইড পজিশন থেকে সরে দাঁড়াতেন জ্যাকসন প্রোজো।

বিরতির পর আক্ষেপ মিটিয়ে ডাচদের জাল কাঁপান এনার ভ্যালেন্সিয়া। এ নিয়ে আসরে তার গোলসংখ্যা গিয়ে দাঁড়াল তিনে। এর আগে কাতারের বিপক্ষে তিনি জোড়া গোল করেন। গোলটি অবশ্য পেতে পারতেন এস্তুাপিনান। ডান প্রান্তে আক্রমণে উঠে ডি-বক্সে ঢুকে গোলের উদ্দেশে জোরালো শট নেন তিনি। তার নিচু শট জালে ঢোকার পথে বাধা পায় ডাচ গোলরক্ষক অ্যানদ্রিয়েস নোপার্টের গ্লাভসে।

তবে তিনি পুরোপুরি বলটি ক্লিয়ার করতে পারেননি। বল পেয়ে যান অরক্ষিত থাকা ভ্যালেন্সিয়া। এগিয়ে এসে ফাঁকা জালে বল জড়ান তিনি। ৫৯ মিনিটে আরও একটি গোল হজম করতে পারতো নেদারল্যান্ডস। তবে ভাগ্য সহায়ক হওয়ায় গঞ্জালো প্লাতার নেওয়া দুর্দান্ত শটটি ফিরে আসে বারে লেগে।

ম্যাচের বাকি সময়েও দেখা গেছে একই দৃশ্য। খলিফা স্টেডিয়ামে উপস্থিত দর্শকরা দেখেছে লাতিন আমেরিকার অপেক্ষাকৃত একটি দুর্বল দলের বিপক্ষে কতটা অসহায় ও শোচনীয় পরিস্থিতিতে পড়েছে ইউরোপের ফেবারিট নেদারল্যান্ডস। পুরো ম্যাচে দুর্দান্ত খেললেও, ইকুয়েডরকে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়।

ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ায় দুই ম্যাচ শেষে নেদারল্যান্ডস ও ইকুয়েডরের পয়েন্ট সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে সমান ৪-এ। শেষ ষোলোর টিকিট কাটতে তাদের অপেক্ষা করতে হবে শেষ ম্যাচ পর্যন্ত। ‘এ’ গ্রুপ থেকে প্রথম দুই ম্যাচ হেরে আসর থেকে বিদায় নিশ্চিত করেছে কাতার। আশা বেঁচে আছে কেবল সেনেগালের।

এসএইচ-০১/২৬/২২ (স্পোর্টস ডেস্ক)