বিশ্বকাপত নয় যেনো ভক্তদের অভিনব প্রতিবাদের মঞ্চ

‘ই’ গ্রুপে জার্মানি বনাম স্পেন ম্যাচ ছাপিয়ে এখন আলোচনায় কাতারের ভক্তদের অভিনব প্রতিবাদ। মেসুত ওজিলের সঙ্গে জার্মানদের দ্বিমুখী আচরণের ইতিহাস টেনে এদিন তারা মাঠে আসেন ওজিলের ছবি নিয়ে। সঙ্গে মুখ চেপে ধরে প্রত্যুত্তর দেন ডাই মানশাফটদের।

একটা ছবি যখন হাজারও শব্দের চেয়েও বেশি শক্তিশালী। ছবি যখন কথা বলে, নিরব থেকেও ছবিই যখন প্রতিবাদের ভাষা, খুলে দেয় ভণ্ডদের মুখোশ।

ইসলাম এবং কাতারের আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (ফিফা) আগেই ঘোষণা দিয়েছিল সমকামিতা সমর্থনে রেইনবো আর্মব্যান্ড পড়ে বিশ্বকাপে মাঠে নামতে পারবে না কোনো দল। তবে নাক উঁচু ইউরোপের দলগুলো বয়কটের ঘোষণা দিয়েছিল তা। যদিও শেষ পর্যন্ত ফিফা ছিল অনড়। তাইতো তা মেনে নিতে বাধ্য হয় তারা।

কিন্তু জাপান ম্যাচের আগে পুরো ঘটনা নেয় ভিন্ন মোড়। ম্যাচ শুরুর আগে মৌন প্রতিবাদ করে জার্মান দল। যদিও সেই ঘটনা আলোচনার চাইতে সমালোচনাই জন্ম দিয়েছিল বেশি। জাপানের বিপক্ষে ম্যাচ হেরে যা গিয়েছিল আরও উসকে।

অথচ ঘরই যাদের ঠিক নেই, তাদের এ ধরনের দ্বিমুখী আচরণ মেনে নিতে পারেনি ফুটবল সমর্থকরা। তাদের মতে জার্মানরাই যে চরম রেসিস্ট। যে ওজিল তাদের সব জিতিয়েছিল, ক্যারিয়ারের মধ্যগগণে শুধু মুসলমান হওয়ার কারণে সেই ওজিলের সঙ্গে ডাই মানশাফটদের আচরণ মেনে নিতে পারেননি ভক্তরা।

তাইতো স্পেনের বিপক্ষে ম্যাচে আল বায়াত স্টেডিয়ামে তারা আসে ওজিলের ছবি সঙ্গে নিয়ে। সঙ্গে ম্যাচ চলাকালীন নিজেদের মুখ চেপে ধরে প্রত্যুত্তর দেন জার্মানদের। সঙ্গে মনে করিয়ে দেন, আগে ঘর সামলে পরে আসুক অন্যের ভুল ধরতে।

তুরস্কের বংশোদ্ভূত ওজিলের জন্ম জার্মানিতে। তার স্ত্রী একজন তুর্কি নারী। তুরস্কের বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের সঙ্গে চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে ওজিলের। ওজিলের বিয়েতে সস্ত্রীক উপস্থিত ছিলেন এরদোগান। সেই সময় বিষয়টি ভালোভাবে নেননি জার্মানরা। গত বিশ্বকাপে ভালো পারফরম করতে পারেননি ওজিল। সেই সময় জার্মানির সাবেক তারকা ফুটবলারসহ অনেকেই ওজিলের সমালোচনা করে বলেছিলেন, ওজিল জার্মানির জন্য মন দিয়ে খেলেন না।

এরপর গত বছর নিজের দেশ জার্মানির হয়ে আর না খেলার ঘোষণা দেন সাবেক আর্সেনাল সুপারস্টার। সাড়ে তিন বছরের চুক্তিতে তুরস্কর ক্লাব ফেনারবাচে যোগ দেন এ অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার। সেই সময় ইস্তানবুলের একটি জনপ্রিয় গণমাধ্যমকে ওজিল বলেন, ‘আমি জার্মান জাতীয় দলের সফলতায় খুব খুশি হব। কিন্তু সে দেশের হয়ে আর কখনও খেলব না।’

এসএইচ-১০/২৮/২২ (স্পোর্টস ডেস্ক)