পরিবারের মনের অবস্থা ফাঁস করলেন মেসি

সৌদি আরবের বিপক্ষে হারের ধাক্কায় পরিবারের মনের অবস্থা কী হয়েছিল, তা ফাঁস করলেন আর্জেন্টাইন সুপারস্টার লিওনেল মেসি। সেইসঙ্গে মেক্সিকোর বিপক্ষে জয়ের পর তার পরিবারের উচ্ছ্বাসের কথাও জানান এলএমটেন।

মেসি ও তার স্ত্রী আন্তনেলা রোকুজ্জোর ৩ সন্তান। ২০১২ সালে জন্ম নেয়া থিয়াগো সবচেয়ে বড়। এরপর ২০১৫ ও ২০১৮ সালে মাতেও ও চিরোর জন্ম। সৌদি আরবের ম্যাচের পর মাতেও কাঁদতে কাঁদতে গ্যালারি ছেড়েছিল। বড় ভাই থিয়াগো সেই সময় মাতেওকে বুঝিয়েছিল, বাবার দল এখনো বিশ্বকাপের দৌড়ে টিকে রয়েছে। যদিও খুদে মাতেওর কান্না থামেনি। শেষ পর্যন্ত মেক্সিকো ম্যাচে ম্যাজিক দেখিয়ে মেসি আর্জেন্টিনা সমর্থকদের পাশাপাশি স্বস্তি ফেরান পরিবারের সদস্যদের মধ্যেও।

ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ের ৫১ নম্বর দল সৌদি আরব, অন্যদিকে আর্জেন্টিনার অবস্থান তৃতীয়। শক্তির তফাত তো র‍্যাঙ্কিংয়েই পরিষ্কার। খেলার প্রথমার্ধেই কেউ ঘুণাক্ষরেও ভাবেনি সৌদি আরব হারিয়ে দেবে বিশ্বকাপের অন্যতম হট ফেবারিট আর্জেন্টিনাকে। ম্যাচের মাত্র ১০ মিনিটের মাথাতেই লিওনেল মেসির সফল স্পটকিকে সৌদি আরবের বিপক্ষে লিড নিয়েছিল আর্জেন্টিনা। কিন্তু বিরতির পরই পাল্টে যায় চিত্র। টানা ৩৬ ম্যাচ হারের মুখ না দেখা দলটাকে সৌদি আরব হারিয়ে দেয় ২-১ ব্যবধানে।

মরুর বুকে যে দল বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম দাবিদার, সেই দল সৌদি আরবের বিপক্ষে হেরে যাওয়ায় মন ভেঙে যায় আর্জেন্টিনা সমর্থকদের। সেইসঙ্গে বিশ্বকাপে নকআউটে ওঠা নিয়ে আর্জেন্টিনা শিবিরে আশঙ্কার কালো মেঘ তৈরি হয়েছিল। পরিস্থিতি এমনই ছিল যে মেক্সিকোর বিপক্ষে হারলেই বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যেতেন মেসিরা। তবুও মেক্সিকোর বিপক্ষে প্রথমার্ধে একেবারে ছন্দে ছিল না আলবিসেলেস্তেরা।

তবে সেই পরিস্থিতিতে প্রতিবারের মতো এবারও আর্জেন্টিনার রক্ষাকর্তা হয়ে দাঁড়ান ৭ বারের ব্যালন ডি’ অর জয়ী তারকা। বক্সের বাইরে থেকে দুর্দান্ত শটে দলকে এগিয়ে দেন তিনি। তারপর গোল করেন এনজো। ফলাফল ২-০ ব্যবধান।

মেক্সিকোকে হারানোর পর মেসি বলেন, ‘সৌদি আরবের বিপক্ষে হেরে যাওয়ায় আর্জেন্টাইনদের মতো আমার পরিবারও অনেক কষ্ট পেয়েছে। আমার ৭ বছরের ছেলে মাতেও কাঁদতে কাঁদতে স্টেডিয়াম ছেড়েছিল। বড় ছেলে থিয়াগো আবার অঙ্ক কষে বোঝাচ্ছিল, কীভাবে নকআউটে যেতে পারবে আর্জেন্টিনা। দুটি ম্যাচে জিতলে সেটা সম্ভব। মেক্সিকোর বিপক্ষে জয়ে আমরা পরিবার এখন খুশি। কারণ, আমরা স্থিতিশীল জায়গায় আসতে পেরেছি। এবার আমাদের পারফরম্যান্স আমাদের ওপর নির্ভর করবে।’

মেসি আরও বলেন, ‘সৌদি আরবের বিপক্ষে হেরে সত্যি অস্বস্তির মধ্যে ছিলাম। আমরা এটা আশা করিনি। তাই বার বার আমাদের মনে হচ্ছিল মাঝে যেন কতগুলো দিন। সেই পরিস্থিতি নিজেদের দিকে ঘোরানোর আপ্রাণ চেষ্টায় ছিলাম। মেক্সিকোর বিপক্ষে ম্যাচটা যে সহজ হবে না, সেটা আমরা ভালোভাবেই জানতাম। জেতা ছাড়া আমাদের কাছে আর কোনো উপায় ছিল না। তাই এই ম্যাচে জয়ের পর মনে হচ্ছে, ঘাড় থেকে একটা ভার যেন নেমে গেল।’

বুধবার দিবাগত রাতে লিওনেল মেসিদের গ্রুপ পর্বের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ। পোল্যান্ডের বিপক্ষে আলবিসেলেস্তেদের সেই ম্যাচ বাঁচামরার।

এসএইচ-২১/২৮/২২ (স্পোর্টস ডেস্ক)