নির্ধারিত সময় পেরিয়ে অতিরিক্ত সময়েও সমতায় ছিল দুই দল। ম্যাচ গড়ায় ট্রাইবেকারে। তাতেও প্রথম পাঁচটি শটে সমতায় থাকে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৩ এর ফাইনাল খেলা ভারত ও কুয়েত। সাডেন ডেথে আসে ফাইনালের ফল। ভারতের বেঙ্গালুরুর কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত মঙ্গলবারের ফাইনাল ম্যাচ এমন উত্তেজনায় ভরা ছিল।
ট্রাইবেকারে ভারতের হয়ে ৬ষ্ঠ নিতে আসেন মহেশ সিং। গোল করতে ভুল করেননি এই উইঙ্গার। বিপরীতে কুয়েতের ৬ষ্ঠ শট নেন ডিফেন্ডার খালিদ ইব্রাহিম। তবে তার শট আটকে দিয়ে নায়ক বনে যান গুরপ্রীত। আর ভারতকে এনে দেন সাফের নবম শিরোপা।
টাইব্রেকারে ভারতের হয়ে প্রথম শট নেন সুনীল ছেত্রী। বল জালে জড়াতে ভুল করেননি তিনি। আর কাতারের মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর প্রথম শট ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। তাতে বেশ চাঙ্গা হয়ে ওঠেন ভারতের সমর্থকেরা। দ্বিতীয়, তৃতীয় শটে দুই দলই গোলের দেখা পায়।
টাইব্রেকারে ভারতের উদান্ত সিংহের চতুর্থ শটটি গোলবারের উপর দিয়ে চলে গেলে সমতায় ফেরার সুযোগ পায় কুয়েত। তাদের চতুর্থ ও পঞ্চম শট ব্যর্থ হয়নি। বিপরীতে ভারতের শুভাশিস বোসের পঞ্চম শটও জালের দেখা পায়। এরপর সাডেন ডেথে শিরোপার স্বাদ পায় স্বাগতিকরা।
ম্যাচের ১৫ মিনিটে এগিয়ে যায় কুয়েত। আল বাউসির ডানপ্রান্তের ক্রসে শাবাইব আলখালদি ফাঁকায় গোলকিপারের পাশ দিয়ে প্লেসিং করেন। এরপর ম্যাচে ফিরতে লড়ে যায় ভারত। ৩৮ মিনিটে সমতায় ফিরে ভারত। সুনীল ছেত্রীর ডিফেন্স চেরা পাসে বাঁ দিক থেকে সাহাল আব্দুল সামাদের ক্রসে লালিয়ানজুয়ালা চাংতের দারুণ প্লেসিয়ে স্কোরলাইন ১-১ হয়।
বিরতির পরও উত্তেজনা ছিল ম্যাচে। দুই দলই সুযোগ পায়। কিন্তু গোল করে এগিয়ে যেতে পারেনি।
অপর দিকে দক্ষিণ এশিয়ায় ফুটবল শ্রেষ্ঠ্যত্বের টুর্নামেন্ট সাফের ফাইনালে উঠতে না পারলেও টুর্নামেন্টের সেরা গোলরক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশের গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো।
টুর্নামেন্টের ফাইনাল শেষে আয়োজিত পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে টুর্নামেন্ট সেরা গোলরক্ষকের স্বীকৃতি পান জিকো। দলের সাথে দেশে দিরে আসায় নিজের হাতে পুরস্কার নিতে পারেননি তিনি। তার পক্ষে স্মারক পুরস্কারটি গ্রহণ করেছেন সাফের কম্পিটিশন ম্যানেজার আসিফ। তিনি বাংলাদেশে এসে জিকোকে সেটি বুঝিয়ে দেবেন বলে জানা গেছে।
এবার, হার দিয়ে শুরুর পরও দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ১৪ বছর পর সাফের সেমি ফাইনাল খেলে বাংলাদেশ। তবে, সেমিতে শক্তিশালী কুয়েতের কাছে হেরে আবারও স্বপ্নভঙ্গ হয় বাংলাদেশের। ২০০৫ সালের পর আর সাফের ফাইনাল খেলেনি বাংলাদেশ। আর, সাফের ট্রফি অধরা ২০০৩ সালের পর থেকেই। তবে, জিকোর নৈপুণ্যে অন্তত ব্যক্তিগত একটি পুরস্কার যুক্ত হলো বাংলাদেশের ফুটবলে।
গ্রুপ স্টেজ আর সেমি- সব মিলিয়ে বাংলাদেশের চার ম্যাচেই গোলপোস্ট সামলেছেন জিকো। ক্লিনশিট নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেননি একবারও; গোল খেয়েছেন পাঁচটি। তবে খুবই সাদামাটা এ পরিসংখ্যান পুরোপুরি ফুটিয়ে তুলতে পারছে না এবারের সাফে তার অবদানকে। বিশেষভাবে বলতে হবে যে, তার দৃঢ়তার সুবাদেই শক্তিশালী কুয়েতের বিপক্ষের সেমিফাইনাল অতিরিক্ত সময়ে নিতে সক্ষম হয়েছিল বাংলাদেশ।
প্রসঙ্গত, টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা ও সেরা খেলোয়াড় দুটিই জিতে নিয়েছেন ভারতের তারকা ফুটবলার সুনীল ছেত্রী। ফেয়ার প্লে পুরস্কার পেয়েছে নেপাল। সাফে ম্যাচ কমিশনারের দায়িত্ব পালন করা ভুটানের মিন্দু দর্জি ও ভারতের গৌতম করের বিচারে সেরা খেলোয়াড়, গোলরক্ষক ও ফেয়ার প্লে নির্বাচিত হয়েছে।
এসএইচ-০৩/০৫/২৩ (স্পোর্টস ডেস্ক)