বাফুফের দুঃসময়ে চলে যাচ্ছেন পল

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের বৃটিশ ট্যাকনিক্যাল ডাইরেক্টর পল স্মলি তার দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। খুব শীঘ্রই তিনি বাংলাদেশ ত্যাগ করবেন। আজ সকালে তার আবাসিক হোটেলে সাংবাদিকদের বাফুফের দায়িত্ব ছাড়ার বিষয়ে কথা বলেন।

মাস দু’য়েক আগে বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন বলেছিলেন, ‘কাজের পরিবেশ নেই বলে পল স্মলি থাকতে চায় না।’ এরপর বাফুফে সভাপতি তাকে রাখার জন্য নানা চেষ্টা করেছেন। বৈঠকের পর বৈঠক শেষে গতকাল পল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আজ সেটি আনুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন তিনি নিজেই।

পল স্মলির সঙ্গে বাফুফের চুক্তি রয়েছে আগামী বছর আগস্ট মাস পর্যন্ত। চুক্তির এক বছর আগেই চলে যাচ্ছেন পল স্মলি। এই বিষয়ে পলের মন্তব্য,‘ আমি গত প্রায় দেড় মাস যাবৎ সভাপতির সঙ্গে আলোচনা করছিলাম। কিছু বিষয় পরিবর্তনের জন্য। তিনি আমার পয়েন্টগুলো যৌক্তিক বললেও এটি স্থায়ীভাবে করতে সময় চেয়েছিলেন। সেই বিষয়গুলো পরিবর্তন না হওয়ায় আমি চলে যাচ্ছি। ’

বাফুফে ও বিভিন্ন মাধ্যমে জানা গিয়েছিল পল স্মলি আরো বেশি অর্থ দাবি করেছে। এই বিষয়টি সঠিক নয় বলে জানান পল,‘ আমি কখনোই বর্তমান চুক্তির চেয়ে অতিরিক্ত অর্থ দাবি করিনি। কাজের পরিবেশ ও ব্যাপকতা নিয়েই আলোচনা হয়েছে গত দেড় মাস।’

সভাপতির সঙ্গে আলোচনা করা কয়েকটি বিষয় নিয়ে তিনি বলেন,‘ বাফুফের বিভাগগুলো পুর্নগঠন করা প্রয়োজন। বিশেষ করে আমার ট্যাকনিক্যাল বিভাগে আরো বিশেষজ্ঞ লোক দরকার। সেখানে মাত্র দুই জন এক্সিকিউটিভ। ফিন্যান্স বিভাগও জোরদার করা প্রয়োজন।’

বাফুফে ছাড়ার পেছনে মূল কারণ হিসেবে তিনি সোহাগ কান্ডকেই আখ্যায়িত করেছেন, ‘ফিফা ৫০ পাতার একটি বিশাল রিপোর্ট দিয়েছে। সেই রিপোর্টে কারা কারা যুক্ত সবই বর্ণনা রয়েছে। ফিফা যে প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম-অসঙ্গতি রয়েছে সেই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমি থাকতে পারি না’ বলেন পল স্মলি।

ফিফা থেকে সোহাগ বহিষ্কার হওয়ার পর বাফুফে একটি তদন্ত কমিটি করেছে। সেই তদন্ত কমিটি এখনো রিপোর্ট দেয়নি। এ নিয়েও খানিকটা হতাশা প্রকাশ করেন পল, ‘ফিফার রিপোর্টে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে কোন চারজন জড়িত। বাফুফে তাদের বিপক্ষে এখনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি’।

২০১৬ সালে ট্যাকনিক্যাল এন্ড স্ট্র্যাটেজিক ডাইরেক্টর হিসেবে বাংলাদেশে এসেছিলেন পল স্মলি। ২০১৯ সালের পর তিনি বাংলাদেশ ছেড়ে যান। এরপর ২০২০ সালে কাজী সালাউদ্দিন পুনরায় বাফুফে সভাপতি নির্বাচিত হলে তিনি ট্যাকনিক্যাল ডাইরেক্টরের দায়িত্ব নেন। বাংলাদেশে অর্ধযুগ কাটিয়ে তার পর্যবেক্ষণ, ‘এখানে অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সম্ভাবনাগুলো কাজে লাগানোর প্রকৃত সময় এখন। সঠিক নির্দেশনা ও পরিকল্পনা থাকতে হবে। ’

বাফুফে সভাপতির ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত ছিলেন পল স্মলি। পল স্মলির বিদায়ে বাফুফে সভাপতিও ব্যথিত, ‘বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য এটি দুঃখজনক দিন। আমি তাকে রাখার সর্বাত্মক চেষ্টাই করেছি। সে ফেডারেশনের অপারেশগত কিছু পরিবর্তন চেয়েছিল। যা বাস্তবায়ন সময়সাপেক্ষ। সে কখনো তার নিজের আর্থিক বিষয় নিয়ে কিছু বলেনি। বাংলাদেশের ফুটবল তাকে মিস করবে।’

এসএ-০৩/১৫/২৩ (স্পোর্টস ডেস্ক)