বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্তা সংস্থা আইসিসি থেকে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। তবে শনিবার বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে ভারতের অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌর যে ধরনের অসংযত আচরণ করেছেন, তাতে তিনি শাস্তি পেতে যাচ্ছেন; এটা প্রায় নিশ্চিত।
এবার হারমানপ্রীতের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ভারতের ১৯৮৩ বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার মদন লাল। এমনকি ভারতীয় নারী দলের সাবেক অধিনায়ক আনজুম চোপড়াও হারমানপ্রীতের আচরণ নিয়ে সমালোচনা করেছেন।
শনিবার (২২ জুলাই) শের-এ বাংলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ও ভারতের নারীদের মধ্যকার তৃতীয় ওয়ানডেটি চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ছিল। তবে ক্রিকেটীয় রোমাঞ্চের দিনটিকে অখেলোয়াড়সুলভ আচরণে অস্বস্তিকর করে তোলেন হারমানপ্রীত।
ঘটনাটি মূলত ম্যাচের ৩৪তম ওভারের। লেগ বিফোর আউটের সিদ্ধান্ত দেওয়ার পর ফিল্ড আম্পায়ার তানভীর আহমেদের প্রতি অশোভন ও দৃষ্টিকটু আচরণ করেন তিনি।
প্রথমে আম্পায়ারের দিকে রাগান্বিত ভঙ্গিতে তাকে তাকিয়ে থাকতে দেখা যায়। এরপর রাগ চেপে রাখতে না পেরে সজোরে ব্যাট দিয়ে স্ট্যাম্প ভাঙেন ভারতীয় দলপতি। মাঠ ছাড়ার সময়ও আম্পায়ারের উদ্দেশে তাকে কিছু বলতে দেখা যায়। পরে পুরস্কার বিতরণীতে সরাসরি আম্পায়ারিং নিয়েই প্রশ্ন তোলেন।
শুধু তাই নয়, ম্যাচের পর বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের কটাক্ষ করতেও বিন্দুমাত্র পিছপা হননি তিনি।
ট্রফি নিয়ে ছবি তোলার সময়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার সুলতানার উদ্দেশে হারমানপ্রীত বলেন, শুধু তোমরা কেন, আম্পায়ার তোমাদের ম্যাচ টাই করিয়েছে। আম্পায়ারকেও ডাকো। একসঙ্গে ছবি তুলি।
এবার হারমানপ্রীতের এমন আচরণকে ‘পীড়াদায়ক’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটার মদন লাল। এক টুইটে তার (হারমানপ্রীত) শাস্তিও দাবি করেছেন বিশ্বকাপজয়ী এই ক্রিকেটার। তার (মদন লাল) ভাষায়, বাংলাদেশ মেয়েদের বিপক্ষে হারমানপ্রীতের আচরণ ছিল পীড়াদায়ক। সে খেলার চেয়ে বড় নয়। ভারতের ক্রিকেটের জন্য সে দুর্নাম বয়ে এনেছে। ওর বিরুদ্ধে বিসিসিআইয়ের কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
অন্যদিকে ভারতের হয়ে ১৫৭ ম্যাচ খেলা সাবেক অধিনায়ক আনজুম চোপড়াও হারমানপ্রীতের এমন আচরণের যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছেন না। তার দাবি, রাগ কমার পর ও যখন শান্ত হবে, আমি নিশ্চিত, অসন্তুষ্টি প্রকাশে যে ওর আরও সচেতন হওয়া দরকার, সেটা নিজেই বুঝবে। অসন্তুষ্টি প্রকাশে কোনো ক্ষতি নেই। কিন্তু কীভাবে আর কখন করবে, সেটা দেখতে হবে। কথা বলার সময় শব্দচয়নে ওর আরও যত্নশীল হওয়া উচিত।
আনজুমের ভাষ্যমতে, বাংলাদেশের মাটিতে প্রত্যাশা মতো খেলতে না পারার হতাশা থেকেও হারমানপ্রীত এমন আচরণ করে থাকতে পারেন। ভারতীয় দল যদি মনে করে যে কিছু সিদ্ধান্ত তাদের পক্ষে যায়নি, সেটা কি ভিন্নভাবে সামাল দেওয়া যেত না? কেন ম্যাচ–পরবর্তী পুরস্কার বিতরণীতে অধিনায়ককে এভাবে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করতে হলো? কীভাবে পরিস্থিতি আরও উত্তুঙ্গ হলো? ভারতীয় দলের হতাশার একটা কারণ হতে পারে নিজেদের মান অনুযায়ী খেলতে না পারা, কিন্তু সেটা ড্রেসিংরুমেই রাখতে পারত। এভাবে জনসমক্ষে প্রকাশ করা ঠিক হয়নি।
এসএ-০৪/২৪/২৩ (স্পোর্টস ডেস্ক)