আগামী ১৪ অক্টোবর বিশ্বকাপের হাইভোল্ডেজ ম্যাচে মুখোমুখি হবে ভারত-পাকিস্তান। আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে লড়বে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশ। কিন্তু এই ম্যাচের দিনক্ষণ যতই এগিয়ে আসছে, ক্রমেই বাড়ছে উত্তেজনা। মাঠের খেলা নিয়ে নানা আলোচনা তো আছেই, বাইরের পরিবেশও উত্তপ্ত হতে শুরু করেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘হিন্দুবিরোধী ও ভারতবিদ্বেষী’ মন্তব্যের অভিযোগের রেশ ধরে রোষানলের মুখে এরই মধ্যে ভারত ছেড়েছেন পাকিস্তানি এক নারী সঞ্চালক। এমনকি দেশটির সমর্থক ও সাংবাদিকেরাও এখনো ভারতে যাওয়ার ভিসা পাননি। সব মিলিয়ে সামনের কয়েক দিনে উত্তপ্ত পরিস্থিতির ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
এমনকি ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের ভেন্যু উড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও পেয়েছে মুম্বাই পুলিশ। এমন অবস্থায় যেকোনো ধরনের বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়াতে আগাম প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে বিশ্বকাপের আয়োজক ভারতের প্রশাসন।
আহমেদাবাদে গত ২০ বছরে ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি। তবে আগামী ১৪ অক্টোবর ভারত বনাম পাকিস্তানের মধ্যে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপ ম্যাচে এসেছে হামলার হুমকি। তাই সিদ্ধান্ত হয়েছে, নেওয়া হবে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা।
সোমবার (৯ অক্টোবর) আহমেদাবাদের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ম্যাচটি উপলক্ষে গুজরাট পুলিশসহ ১১ হাজারেরও বেশি নিরাপত্তাকর্মী আহমেদাবাদ এবং নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে নিয়োজিত থাকবেন।
জানা গেছে, ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ সামনে রেখে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল গান্ধীনগরে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হার্শ সানঘাভি, ডিজিপি বিকাস সাহাই, পুলিশ কমিশনার জিএস মালিক এবং অন্যান্য সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
বৈঠকের পর আহমেদাবাদের পুলিশ কমিশনার জিএস মালিক জানিয়েছেন, ম্যাচটি উপলক্ষে ১ লাখেরও বেশি দর্শকের চলাচল হবে। ই-মেইলে অজ্ঞাত ব্যক্তির দেওয়া হুমকির বিষয়গুলোকে মাথায় রেখে তাই নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘স্টেডিয়ামটিকে নিরাপদ রাখতে এবং ম্যাচ চলাকালে সাম্প্রদায়িকভাবে সংবেদনশীল এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে ৭ হাজারের বেশি পুলিশ সদস্যসহ আমরা ৪ হাজারের মতো হোম গার্ডদের নিয়োজিত করবো। এরা ছাড়াও আমরা তিনটি ‘হিট দল’ এবং এনএসজির একটি ড্রোন বিরোধী দল মোতায়েন করব। আমাদের বোমা সনাক্তকরণ এবং নিষ্ক্রিয়করণ স্কোয়াডের নয়টি দলও ব্যবহার করা হবে।’
অবশ্য এটুকুই শুধু নয়, ম্যাচের দিন আইজি, ডিআইজিসহ চারজন সিনিয়র আইপিএস অফিসার এবং ২১ জন ডিসিপি র্যাঙ্কের অফিসার সবকিছু তদারকি করবেন এবং নিরাপত্তারক্ষীদের যাবতীয় নির্দেশনা প্রদান করবেন। এসবের বাইরে নিরাপত্তারক্ষায় আরও বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন মালিক।
এদিকে সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, মুম্বাই পুলিশ সম্প্রতি অজ্ঞাত এক প্রেরকের কাছ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে আঘাত করার হুমকিসহ একটি মেইল পেয়েছে। যেখানে আহমেদাবাদ স্টেডিয়ামকে উড়িয়ে দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। যারা মেইলটি পাঠিয়েছে, তারা ৫০০ কোটি রূপির পাশাপাশি শীর্ষ সন্ত্রাসী লরেন্স বিষ্ণয়ের মুক্তিও দাবি করেছে। জিএস মালিক এসব হুমকি যাচাই-বাছাইয়ের পাশাপাশি যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেছেন।
এসএ-০৬/১০/১০(স্পোর্টস ডেস্ক)