২০০৩ বিশ্বকাপে সর্বশেষ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জিতেছিল ভারত। এরপর প্রায় দুই দশক কেটে গেলেও বিশ্বকাপের মঞ্চে কিউইদের বিপক্ষে জিততেই পারছিল না তারা। অবশেষে ঘরের মাঠে সেই আক্ষেপ ঘুচালো রোহিত শর্মার দল। বিরাট কোহলির দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ২০ বছরের সেই খরা কাটিয়ে দুর্দান্ত জয় তুলে নিলো ভারত। এতে চলমান বিশ্বকাপে টানা পাঁচ ম্যাচে জিতে সেমির পথেও আরেক ধাপ এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা।
রোববার (২২ অক্টোবর) ধর্মশালায় টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ৫০ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৭৩ রান তুলেছিল নিউজিল্যান্ড। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১৩০ রান করেছেন ড্যারিল মিচেল। ভারতের হয়ে ৫ উইকেট শিকার করে দলের সেরা বোলার মোহাম্মদ শামি। জবাবে খেলতে নেমে ৪৮ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ভারত। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৯৫ রান করেছেন ব্যাটিং জিনিয়াস কোহলি।
২৭৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে আগ্রাসী মেজাজে শুরু করেন ভারতের দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও শুভমান গিল। দলীয় ৭১ রানের মাথায় রোহিতকে সাজঘরে ফিরিয়ে উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন কিউই পেসার লকি ফার্গুসন। ব্যক্তিগত পঞ্চাশের আগে ৪৬ রান করেন ভারতীয় অধিনায়ক। আরেক ওপেনার গিল করেছেন ২৬ রান। এই রান করার পথে তিনি হাশিম আমলার ৪০ ইনিংসে দ্রুততম ২০০০ রানের রেকর্ড ৩৮ ইনিংসে নিজের করে নিয়েছেন তিনি।
এরপর শ্রেয়াস আইয়ার, লোকেশ রাহুলরা ভালো শুরু পেলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। শ্রেয়াস ৩৩ রান করে বিদায় নেওয়ার পর রাহুল ফেরেন ২৭ রান করে। এরপর দুই অঙ্ক ছোয়ার আগেই ফিরেছেন হার্ডহিটার সূর্যকুমার যাদবও। এতে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে দলীয় ১৯১ রানের মধ্যেই ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে ব্যাটিং করেছেন বিরাট কোহলি।
এই টপ অর্ডার ব্যাটারকে দারুণ সঙ্গ দেন রবীন্দ্র জাদেজা। ষষ্ঠ উইকেটে ৭৮ রানের জুটি গড়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন তারা। অবশ্য সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়ে সাজঘরে ফিরেছেন কোহলি। দলের জয়ে যখন ৫ রান দরকার, তখন ছক্কা হাঁকাতে নিয়ে ৯৫ রানে থেমেছেন তিনি। বাকি কাজটুকু মোহাম্মদ শামিকে সঙ্গে নিয়ে ১২ বল হাতে রেখেই ছুঁয়েছেন রবীন্দ্র জাদেজা।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ১৯ রানের মধ্যেই দুই ওপেনারকে হারায় কিউইরা। ডেভন কনওয়ে মোহাম্মদ সিরাজের বলে শূন্য হাতে বিদায়ের পর উইল ইয়াং মোহাম্মদ শামির বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন। বিদায়ের আগে ২৭ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ১৭ রান করেন এই ব্যাটার। এরপর সেখান থেকে রানের চাকা সচল রেখে দলকে বিপদমুক্ত করেন রাচিন রবীন্দ্র ও ড্যারেল মিচেল।
তৃতীয় উইকেটে তারা দুজনে ১৫৯ রানের জুটি গড়ে দলকে বড় সংগ্রহের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান। তবে শামির দ্বিতীয় শিকার হয়ে বিদায় নেন রবীন্দ্র। শুভমান গিলের হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায়ের আগে ৮৭ বলে ৭৫ রানের ইনিংস খেলেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। রবীন্দ্র আউট হবার পর ব্যর্থ হয়েছেন অধিনায়ক টম ল্যাথাম ও গ্লেন ফিলিপসরা। তাদের দ্রুত বিদায়ে মুহূর্তেই চাপে পড়ে কিউইরা।
তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে দলকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন মিচেল। মূলত তার ব্যাটে ভর করেই শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৭৩ রান করে নিউজিল্যান্ড। তার ১০০ বলে সেঞ্চুরি শেষ পর্যন্ত থেমেছে ১২৭ বলে ১৩০ রানে।
ভারতের হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন মোহাম্মদ শামি, তুলে নিয়েছেন ৫ উইকেট। কুলদ্বীপ যাদব ২টি এবং জসপ্রিত বুমরাহ ও মোহাম্মদ সিরাজ পান একটি করে উইকেট।
এসএ-০১/১০/২৩ (স্পোর্টস ডেস্ক)