স্কোরবোর্ডে ৩৬ রান তুলতেই টপ অর্ডারের দুই ব্যাটারকে হারিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। দারুণ বোলিংয়ে প্রথম পাওয়ার প্লেতে প্রোটিয়াদের সঙ্গে জম-জমাট লড়াইয়ের আভাস দিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে সময় যত গড়িয়েছে, ততই ম্যাচ থেকে ছিটকে গেছে সাকিবের দল। মুস্তাফিজ-হাসানদের রীতিমতো কচুকাটা করেছেন প্রোটিয়া ব্যাটাররা। বিশেষ করে ডি কক এদিন ব্যাট হাতে ঝড় তুলেন! এই উইকেটকিপার ব্যাটারের দেড়শোর্ধ্ব ইনিংসে ভর করে রানের পাহাড় গড়েছে প্রোটিয়ারা।
মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) ওয়াংখেড়েতে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৮২ রান তুলে দক্ষিণ আফ্রিকা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১৭৪ রান করেছেন ডি কক। বাংলাদেশের হয়ে ২ উইকেট শিকার করে ইনিংসের সেরা বোলার হাসান মাহমুদ।
নতুন বলে ভালোই শুরু করেছিল বাংলাদেশ। মুস্তাফিজুর রহমান প্রথম ওভারে একটা বাউন্ডারি হজম করলেও বাকি বলগুলো ভালোই করেছিলেন। অপর প্রান্তে শুরু থেকে স্পিন আক্রমণে যান সাকিব। বল তুলে দেন মেহেদি মিরাজের হাতে। নিজের প্রথম ওভারেই উইকেটের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন এই ডানহাতি অফ স্পিনার। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের পঞ্চম বলে হেনড্রিকসের ব্যাটের বাইরের দিকের কানায় লেগে বল চলে যায় প্রথম স্লিপে। কিন্তু বল এতটাই দ্রুত যায় যে তানজিদ তামিম হাত তোলার আগেই বল তার কাঁধে আঘাত হানে। ফলে প্রথম সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি বাংলাদেশ।
তারপরও প্রথম ব্রেকথ্রু পেতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি টাইগারদের। একবার জীবন পেয়েও বেশি দূর এগোতে পারেননি হেনড্রিকস। ইনিংসের সপ্তম ওভারের প্রথম বলে এই ওপেনারকে ফিরিয়ে প্রোটিয়া শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন শরিফুল। গুড লেন্থ থেকে খানিকটা ইন সুইং করা বল ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলে সরাসরি উইকেটে আঘাত হানে।
তিনে নেমে সুবিধা করতে পারেননি ফন ডার ডুসেন। মিরাজের স্টাম্পের ওপরে করা বল কিছুটা টার্ন করে ডুসেনের পায়ে আঘাত হানে। মিরাজের লেগ বিফোরের আবেদন ফিরিয়ে দেননি আম্পায়ার। ফলে ১ রান করেই বিদায় নিতে হয় ডুসেনকে।
দুই ব্যাটার দ্রুত ফিরলেও মার্করামকে সঙ্গে নিয়ে দলকে বড় সংগ্রহের পথেই রাখেন ডি কক। ৪৭ বলে ফিফটি করেন ডি কক। আর মার্করাম এই মাইলফলক ছুঁয়েছেন ৫৭ বলে। ফিফটি করেই রানের গতি বাড়ানোয় মনযোগ দেন মার্করাম। সেটিই কাল হলো তার। ৩১তম ওভারের চতুর্থ বলটি অফ স্টাম্পের বাইরে করেছিলেন সাকিব। সেটা ইনসাইড-আউট করে এক্সটা কভারের ওপর দিয়ে মারতে চেয়েছিলেন মার্করাম, ঠিকমতো টাইমিং না হওয়ায় লং অনে লিটন দাসের হাতে ধরা পড়েন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে প্রোটিয়া অধিনায়কের ব্যাট থেকে এসেছে ৬৯ বলে ৬০ রান।
টানা দুই সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে এবারের আসর শুরু করেছিলেন ডি কক। এরপর ইংল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে রান পাননি। তবে পঞ্চম ম্যাচে এসে ঠিকই আবার রানে ফিরলেন এই ওপেনার। ৪৭ বলে করেছিলেন প্রথম ৫০ রান। পরের ৫০ রান করতে বল খরচ করেছেন ৫৪ বল। সবমিলিয়ে তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন ১০১ বলে। সাজঘরে ফেরার আগে সেটাকে নিয়ে গেলেন ১৭৪ রানে। প্রথম প্রোটিয়া ব্যাটার হিসেবে এক আসরে তিন সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়লেন এই উইকেটকিপার ব্যাটার।
ডি কক যদি এই ইনিংসের নায়ক হয়ে থাকেন, তাহলে পার্শ-নায়কের ভূমিকায় ছিলেন হেনরিখ ক্লাসেন। ৯০ রানের ইনিংস খেলার পথে বাংলাদেশের বোলিং লাইনআপ রীতিমতো তছনছ করে দিয়েছেন। শেষদিকে ডেভিড মিলারও তার সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। সবমিলিয়ে রানের পাহাড় গড়ে প্রোটিয়ারা!
এসএ-০১/১০/২৪ (স্পোর্টস ডেস্ক)