পাকিস্তানের বিপক্ষে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় জানিয়েছিল সাকিব আল হাসান। তবে মাঠের লড়াইয়ে ব্যর্থতার ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে বাংলাদেশ দল। বিশ্বকাপে টানা হেরে চলা দুই দলের লড়াই নিয়ে তেমন উত্তাপ না থাকলেও ম্যাচটাকে দেখা হচ্ছিল দল দুটির ট্র্যাকে ফেরার ম্যাচ হিসেবে। একই সঙ্গে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে জায়গা পেতেও এই ম্যাচে বাংলাদেশের জয়ের বিকল্প নেই। তবে ব্যাটিংয়ে হতাশ করা টাইগাররা দুইশ রানের সংগ্রহ গড়ার পরেই অলআউট হয়ে গেছে।
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে চলমান বিশ্বকাপের ৩১তম ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। তবে নির্ধারিত সময়ের আগেই ৪৫.১ ওভারে ২০৪ রানে অলআউট হয়ে গেছে সাকিবের দল। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৬ রান করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বোলিংয়ে শাহিন শাহ আফ্রিদি ও মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র নেন ৩টি করে উইকেট।
এদিন ব্যাটিংয়ে নেমে রানের খাতা খোলার আগেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। প্রথম ওভারে শাহিন আফ্রিদির ১০০ তম শিকারে পরিণত হন তরুণ তানজিদ হাসান তামিম। শাহিনের ইনসুইংয়ের লাইন মিস করেন তানজিদ। বল তার পায়ে লাগলে লেগ বিফোরের আবেদন করেন শাহিন। আঙুল তুলে তানজিদ তামিমকে সাজঘরের রাস্তা দেখিয়ে দেন আম্পায়ার।
রানখরায় থাকা নাজমুল হোসেন শান্তও টেকেননি বেশিক্ষণ। শাহিন পরের ওভারে বল করতে এসে ফেরান ৪ রান করা শান্তকে। পা লক্ষ্য করে বল ফেলেছিলেন শাহিন। শান্ত অনসাইডে সজোরে শট খেলেন। কিন্তু ক্যাচ লুফে নেন উসামা মির। শেষ ছয় ম্যাচ মিলিয়ে ৪.৬৬ গড়ে মাত্র ২৮ রান করেছেন টাইগারদের সহঅধিনায়ক।
৫ ওভারে ১০ রানে দুই উইকেট হারানোর পর মুশফিকুর রহিমকে ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন দিয়ে পাঠানো হয়েছিল। ব্যর্থ তিনিও। হারিস রউফের ইনসুইং তার ব্যাটে চুমু দিয়ে জমা হয়েছে উইকেটকিপার রিজওয়ানের গ্লাভসে। বাংলাদেশের স্কোর তখন ৬ ওভারে মাত্র ২৩! ৫ রানেই শেষ হয়েছে মুশফিকের ইনিংস।
চতুর্থ উইকেট জুটিতে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে জুটি গড়েন লিটন। এদিন ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পেয়ে পাঁচে নেমেছেন মাহমুদউল্লাহ। আস্থার প্রতিদানও দিচ্ছেন ব্যাটে। তাদের জুটিতেই ১১তম ওভার শেষে দলীয় অর্ধশতক পূর্ণ করে টাইগাররা। এরপর ১৭তম ওভারে এই জুটি পূর্ণ করে ৫০ রান। ২১তম ওভারে শতরান পূর্ণ হয় বাংলাদেশের। কিন্তু ঠিক এর পরেই বিদায় নেন লিটন।
লিটন না পারলেও অর্ধশতক ,হাঁকিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। ৭০ বলে ৬ চার ও ১ ছয়ে ৫৬ রান করে শাহিনের বলে বোল্ড হয়ে যান তিনি। এরপর ব্যাট করতে নেমে একটা ছক্কা মেরেই ওসামা মীরের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন তাওহীদ হৃদয়।
সাকিব-মিরাজ জুটি বেঁধে দলকে ২০০ এর দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু সাকিব বিদায় নেন ১৮৫ রানে। বিশ্বকাপে এসে শর্ট বলে সংগ্রাম করতে হচ্ছে সাকিবকে। পাকিস্তানের বিপক্ষেও শর্ট বলে ঠিকঠাক খেলতে পারছিলেন না। তবে সময়ের সঙ্গে ছন্দ খুঁজে পাচ্ছিলেন টাইগার দলপতি। কিন্তু অর্ধশতকের কাছাকাছি পৌঁছে হারিস রউফের শর্ট বলটা ঠিকমতো পুল করতে পারলেন না। সোজা ক্যাচ তুলে ধরা পড়লেন আগা সালমানের হাতে। ৬৪ বলে ৪ চারে ৪৩ রান করে আউট হন টাইগার দলপতি।
৪৪ ওভারের প্রথম বলে মোহাম্মদ ওয়াসিমের দারুণ গতির বল তুলে মারতে চেয়েছিলেন মিরাজ। কিন্তু বলে-ব্যাটে হয়নি। ৩০ বলে ১ চার ও ১ ছয়ে ২৫ রান করেন মিরাজ। মিরাজের বিদায়ের পর আর বেশিক্ষণ টেকেনি বাংলাদেশ। শেষ তিন ব্যাটারকেই ফেরান মোহাম্মদ ওয়াসিম।
পাকিস্তানের পক্ষে সফলতম বোলার শাহিন আফ্রিদি। ৯ ওভারে এক মেডেনসহ মাত্র ২৩ রান দিয়ে ৩ উইকেট শিকার করেন তিনি। ৮.১ ওভারে ৩১ রান দিয়ে ৩ উইকেট শিকার করেন মোহাম্মদ ওয়াসিমও। হারিস রউফের শিকার হয়েছেন দুই টাইগার। বাকি দুটি গেছে ইফতেখার ও উসামা মীরের ঝুলিতে।
এসএ-০২/১০/৩১ (স্পোর্টস ডেস্ক)