কানাডার বিপক্ষে সেমিফাইনালে কেমন হবে আর্জেন্টিনার একাদশ

এমিলিয়ানো মার্টিনেজের দুর্দান্ত ফর্মের ওপর ভর করে সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনা। ইতিহাস গড়ার অপেক্ষায় দলটি। টানা দুইবার মহাদেশীয় শিরোপা এবং এক বিশ্বকাপ জেতার রেকর্ড নেই দক্ষিণ আমেরিকার কোনো দেশের। একমাত্র দেশ হিসেবে এই কৃতিত্ব আছে স্পেনের। ২০০৮ সালের ইউরো, ২০১০ বিশ্বকাপ এবং ২০১২ সালের ইউরো টানা জয় করেছিল দেশটি।

এবার আর্জেন্টিনার সামনে আছে সেই সুযোগ। ২০২১ সালে কোপা আমেরিকা আর ২০২২ সালে বিশ্বকাপ নিজেদের ঝুলিতে পুরেছে লিওনেল মেসি এন্ড কোং। এবার বাকি ২০২৪ সালের কোপা আমেরিকা। স্বপ্নের এই ট্রেবল জয়ের পথে আর্জেন্টিনার দরকার আর দুই জয়। যে পথে কাল প্রথম বাধা কানাডা। সেমিফাইনালে নিউ জার্সির মেটলাইফ স্টেডিয়ামে কাল ভোরে মাঠে নামবে বাংলাদেশ।

এই দুই ম্যাচ দিয়েই জাতীয় দলে ক্যারিয়ারের ইতি টানবেন আনহেল ডি মারিয়া। যার গোলে ২০২১ ফাইনাল জিতে ২৮ বছরের শিরোপাখরা ঘুচিয়েছিল আর্জেন্টিনা। পরে ফিনালিসিমা এবং বিশ্বকাপের ফাইনালেও পেয়েছিলেন গোল। সেই মহাতারকা ডি মারিয়া এবার বিদায়ের অপেক্ষায়। আগেই বলে দিয়েছিলেন, এবারের কোপাই তার জন্য শেষ।

সে হিসেবে আর্জেন্টিনায় আর দুই ম্যাচ খেলার সুযোগ আছে ফিদেও খ্যাত ডি মারিয়ার। কানাডার বিপক্ষে সেমিফাইনালের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তাই শুরুতেই তাকে দেখা যাবে। লিওনেল মেসিকেও খেলানোর কথা আগেই বলে দিয়েছিলেন স্কালোনি। সে হিসেবে আরও একবার মেসি-ডি মারিয়া জুটি দেখবেন ভক্তরা। সঙ্গে থাকতে পারেন হুলিয়ান আলভারেজ।

বদলি হিসেবেই লাউতারো মার্টিনেজের মাঠে সম্ভাবনা বেশি। এবারের আসরে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ গোলদাতা ইন্টার মিলানের এই স্ট্রাইকার। মেসির চলমান অফফর্ম পুষিয়ে দিচ্ছেন লাউতারো মার্টিনেজ। এখন পর্যন্ত আসরে চার গোল করেছেন এই স্ট্রাইকার। যার দুটি বদলি হিসেবে নেমেই করেছেন।

ইকুয়েডরের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচ শেষ হওয়ার পরেই আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কালোনক বলেছিলেন, দলের খেলায় তিনি সন্তুষ্ট নন। সেমিফাইনালের ম্যাচের আগে সবকিছু ঠিক করে নিতে চান তিনি।

আর্জেন্টিনার কোচ তাই ইকুয়েডরের ম্যাচের পর জেগে রইলেন পুরো রাত। রাত ৪টা অব্দি জেগে থেকে দেখেছেন ম্যাচের হাইলাইটস। সেখান থেকে বের করতে চেয়েছেন ইকুয়েডর ম্যাচের ভুলগুলো।

কানাডা ম্যাচে এসবের ভিত্তিতে বেশ কিছু সিদ্ধান্তও আসতে পারে। মাঝমাঠে আসতে পারে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন। এনজো ফার্নান্দেজের বদলে লিয়ান্দ্রো পারেদেসকে দেখার সম্ভাবনাই বেশি। আবার পরীক্ষিত তারকা জিওভান্নি লো সেলসোকেও দেখা যেতে পারে। স্কোয়াডে মূল লড়াই এই তিনজনকে নিয়ে।

কোয়ার্টার ফাইনালে রদ্রিগো ডি পল এবং অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার দুজনেই ছিলেন ছন্দে। তাদের সঙ্গে পারেদেসকে নিয়ে হতে পারে তিনজনের মাঝমাঠ।

রক্ষণে অবশ্য খুব একটা পরিবর্তনের আভাস নেই। নাহুয়েল মলিনা, নিকোলাস টালিয়াফিকো, ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো এবং লিসান্দ্রো মার্টিনেজের ওপর ভর করে হবে ফোর ম্যান ডিফেন্স। মলিনা গত ম্যাচে ভুগেছেন। তাই গনজালো মন্তিয়েলকে চাইলে স্কোয়াডে রাখতে পারেন স্কালোনি। যদিও সেই সম্ভাবনা অনেকটাই কম।

আর গোলবারের নিচে বরাবরের মতোই বিশ্বস্ত এমিলিয়ানো মার্টিনেজের জায়গা পাকা। সবমিলিয়ে শক্ত একটা স্কোয়াডই কানাডার বিপক্ষে সেমিফাইনালের জন্য পাচ্ছেন কোচ লিওনেল স্কালোনি।

চলতি আসরে নিজেদের উদ্বোধনী ম্যাচেই এই কানাডার মুখোমুখি হয়েছিল আর্জেন্টিনা। সেই ম্যাচে ২-০ গোলের জয় নিয়ে ফেরে তারা। সেমির বিগ ম্যাচের আগে তাই স্বাভাবিকভাবেই আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে আছে পুরো দল।

সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনার সম্ভাব্য একাদশ

গোলরক্ষক- এমিলিয়ানো মার্টিনেজ।
ডিফেন্ডার- নাহুয়েল মলিনা, ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো, লিসান্দ্রো মার্তিনেজ, নিকোলাস টালিয়াফিকো।
মিডফিল্ডার- লিয়ান্দ্রো পারেদেস/জিওভানি লো সেলসো/এনজো ফার্নান্দেজ, অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার, রদ্রিগো ডি পল।
ফরোয়ার্ড- লিওনেল মেসি, হুলিয়ান আলভারেজ, আনহেল ডি মারিয়া।

এসএ-০৯/০৯/২৪(স্পোর্টস ডেস্ক)