বাংলাদেশিদের সমস্যার আলোকে পরামর্শ

দক্ষিণ আফ্রিকায় আমাদের প্রতিনিয়ত যে সমস্যাগুলো পোহাতে হয় তা হলো; দোকান ডাকতি, অপহরণ, কৃষ্ণাঙ্গ বা অন্যদের হাতে খুন, ছিনতাই, পারমিট জটিলতা ইত্যাদি। কিছু সমস্যা এ দেশের সরকারি আইনের ভিত্তিতে হয়ে থাকে, যেমন পারমিট বা এসাইলাম সংক্রান্ত জটিলতা।

তবে এ ক্ষেত্রে অনেকেই বলে দ্রুত কাগজ বের করা যায় এবং ব্যাক ডেট দিয়েও নাকি পারমিট করতে পারে। আপনাদের বলি, এসব আসলে দালালদের মুখের মিষ্টি বাণী যা দিয়ে তাদের রুটিরুজি চালায়।

ইতিমধ্যে অনেক প্রবাসী এ প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়েছেন। কিন্তু এদের অনেকেই দেশে গিয়ে আর ফিরে আসতে পারেনি। এর মূল কারণ হচ্ছে দালাল তাদের পাসপোর্টে চুক্তিভিত্তিক দুই বা তিন মাসের জন্য একটি স্টিকার লাগিয়ে দেয় এতেই তাদের হাতে আমাদের কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে বাড়ি যাওয়ার স্বপ্ন দেখি। কিন্তু একবারও যাচাই করিনা আবার দেশ থেকে যথাসময়ে ফিরতে পারবো কিনা।

জেনে রাখা ভালো, আমরা যে প্রক্রিয়ায় পারমিট করে থাকি সেটি আপাতত বন্ধ।

দক্ষিণ আফ্রিকায় আমরা প্রতিনিয়ত যে সমস্যায় আতঙ্কিত হয়ে উঠেছি তার নাম ‘কিডন্যাপ’। আর এ শব্দের সঙ্গে এ দেশের কালো বা সাদা কেউ অতটা পরিচিত ছিলো না। কিছু বাংলাদেশি এবং পাকিস্তানি এ জঘন্য ঘৃণিত কাজে লিপ্ত। তাই আমাদের চলাফেরা ও কথাবার্তায় সতর্ক থাকতে হবে। আর যদি কাউকে সন্দেহ হয়, তার প্রতি বিশেষ নজর রাখতে হবে।

একা চলার অভ্যাস পরিহার করতে হবে। কারো মিষ্টি কথায় তুষ্ট হয়ে পাশে এনে বসাবেন না। পৃথিবীর যত দেশে আমরা বাংলাদেশিরা বসবাস করছি হলপ করে বলতে পারি, অপ্রত্যাশিত এবং নির্মম খুন-হত্যার স্বীকার দক্ষিণ আফ্রিকাই বেশি, যা খুবই দুঃখের ও হতাশার।

এ বিষয়ে আমাদের আরো কয়েকটি দিকে খেয়াল রাখতে হবে। এই দেশের কৃষ্ণাঙ্গদের আমরা অনেকে মানুষই মনে করি না। আমরা তো তাদের দেশে এসে তাদের সামনে ব্যবসা বানিজ্য করে নিজ দেশের ভাগ্য উন্নয়ন করছি, তাইনা! একটু ভাবুন আমাদের দেশে এভাবে কাউকে এমন সুযোগ করে দিতাম কি?

এসব হত্যাকাণ্ডগুলোর কয়েকটি কারণ যেমন গত কয়েকদিন আগে আমাদের দুই বাংলাদেশি ভাইকে নিউক্যাস্টেলে রাতের আঁধারে গলা কেটে জঘন্য কায়দায় হত্যা করেছে কৃষ্ণাঙ্গ সন্ত্রাসীরা। এর মূল কারণ হলো পণ্যের দরদাম ও বাজে ভাষায় কথা কাটাকাটি করা।

এ ছাড়াও মাসিজ স্টিক, পঞ্চাশ পয়সা, এক টাকা দামের সিগারেট, দুই-এক টাকার জন্য, এ দেশের নারীর সঙ্গে অবাধ সম্পর্ক ইত্যাদি কারনে অনেক সময় আচারণ খারাপ করে।

তবে আমাদেরকে সাবধান ও সচেতন হতে হবে যে এমন কোনো আচরণ করা যাবে না যাতে ওরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে।

এসএইচ-০৭/১১/১৯ (প্রবাস ডেস্ক)