ভালোবেসে বিয়ে করায় গাছে বেঁধে নির্যাতন

ঠাকুরগাঁওয়ে প্রভাবশালীর মেয়েকে ভালোবেসে বিয়ে করায় মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের শিকার হয়েছেন নাসিরুল (২২) নামের এক যুবক। স্ত্রীর বাবা-মার নির্যাতনে তিনি এখন হাসপাতালে। এ ঘটনায় এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার ভাঙবাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার জেরে শুক্রবার দুপুর ১২টায় সেলিনা নামে এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ।

রাণীশংকৈল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদ ইকবাল ঘটনার সত‌্যতা নিশ্চিত করেছেন। নাসিরুল ওই এলাকার খলিলুর ইসলামের ছেলে। আটক সেলিনা নাসিরুলের শাশুড়ি ও করিমুলের স্ত্রী।

এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে ওসি জানান, গরীব পরিবারের সন্তান নাসিরুলের সঙ্গে একই এলাকার করিমুলের মেয়ে কেয়ার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। দীর্ঘদিন সম্পর্কে থাকার পর তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। এক পর্যায়ে পরিবারকে না জানিয়ে তারা ভালোবেসে বিয়ে করে আত্নগোপনে থাকেন।

এদিকে, মেয়ের পরিবার থেকে ছেলের পরিবারকে তাদের মেয়েকে ফিরিয়ে দিতে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। এক সময় বিয়ে মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেন তারা। মেয়ের পরিবার তুলনামূলক ধন্যাট্য ও ক্ষমতাধর হওয়ায় ছেলের পরিবার ভয় পেয়ে ছেলেকে ফিরে আসার আকুতি জানায়। বিয়ে মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি পেয়ে নাসিরুল ও কেয়া পরিবারের কাছে ফিরে আসে।

এরপরে ২০ সেপ্টেম্বর বিকেলে বউয়ের সঙ্গে দেখা করতে তার বাসায় যান নাসিরুল। তখন কেয়ার বাবা-মা নাসিরুলকে গাছের সঙ্গে বেঁধে অমানবিক নির্যাতন করতে থাকেন। অত্যাচারের সময় তিনি চিৎকার করে কেঁদে কেঁদে ছেড়ে দেওয়ার আকুতি জানান। বার বার ক্ষমা চান। তবুও তাকে মারধর করতে থাকে মেয়ের পরিবার। শেষে গুরুতর আহত অবস্থায় পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে নাসিরুলকে। এরপর তাকে রাণীংশকৈল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি ভর্তি করা হয়।

রাণীশংকৈল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ফিরোজ আলম জানান, অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে সরাসরি দিনাজপুর মেডিক‌্যালে পাঠানো হয়েছে। সেখানে তার চিকিৎসা চলছে।

ওসি আরও জানান, এ ঘটনায় আজ দুপুরে মেয়ের মা সেলিনাকে আটক করা হয়েছে। এই বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

এসএইচ-২০/২৪/২১ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)