নামাজ শেষে হোটেলে ফিরে খেয়েই বেরিয়ে পড়লেন মাশরাফি-সাকিবরা

বাংলাদেশে আর নিউজিল্যান্ডের ম্যাচ দিবারাত্রির হওয়ায় মনে হয় ভালই হয়েছে। খেলার আগের দিন দেশের মত ঈদ উদযাপন করতে না পারলেও, বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় প্র্যাকটিসের আগে নামাজটা পড়তে পেরেছেন আর খানিকটা সময় ঘোরাঘুরির পাশাপাশি লন্ডনে আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুদের বাসায় যাবারও ফুসরত মিলেছে ।

কি ভাবছেন, খেলা তো কাল ৫ জুন বুধবার আর লন্ডনে আজ ৪ জুন (মঙ্গলবার), তাহলে কালকের দিবারাত্রির ম্যাচের সাথে আজকের ঈদের নামাজ পড়া আর পরিচিত স্বজনদের বাসায় খানিক ঘোরাঘুরির কি সম্পর্ক?

নাহ বিষয়টি মোটেও জটিল নয়, একদম সহজ। কালকের ম্যাচটি দিবারাত্রির (খেলা শুরু লন্ডন সময় বেলা দেড়টায়, বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায়)। তাই ম্যাচের আগের দিন মানে আজ বাংলাদেশ দল ওভালে ফ্লাড লাইটের আলোয় প্র্যাকটিস করার পরিকল্পনা করেছে। আর তাতেই বাংলাদেশ দল বেলা ১২টায় ঈদের নামাজ পড়ার সুযোগ পেয়েছে।

কালকের ম্যাচ দিবা রাত্রির না হলে নির্ঘাত বেলা ১২টায় মাশরাফি, তামিম, সাকিব, মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহরা তখন প্র্যাকটিসে থাকবেন। কাকডাকা ভোরে উঠে হয়ত ৮টা থেকে ৯টার জামাত ধরতে হতো।

সেটাই শেষ নয়, আজ সন্ধ্যায় প্র্যাকটিসের শিডিউল থাকায় ক্রিকেটাররা আছেন খানিক স্বস্তিতে ও দুলকি চালে। কেউ বেলা একটার একটু পরে নামাজ শেষে হোটেলে ফিরে দুপুরের খাবার খেয়ে বেরিয়েও গেছেন। সেই বেরিয়ে যাওয়াদের তালিকায় অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা আর প্রাণভোমরা সাকিব আল হাসানও আছেন।

লন্ডনের সেন্ট্রাল মস্কে ঈদে জামাত আদায় করে টিম হোটেলে (রিভার ব্যাংকের পার্ক প্লাজা হোটেল) ফিরে দুপুরের খাবার খেয়েই স্ত্রী, কন্যা ও ছেলেকে নিয়ে বেরিয়ে পড়েন টাইগার অধিনায়ক।

আর কালো পাঞ্জাবী-পায়জামা পরা সাকিবও স্থানীয় সময় পৌনে দুইটার দিকে ট্যাক্সিতে চেপে কোথায় যেন গেলেন। একই ভাবে সাদার ওপরে কাজ করা শেরওয়ানি স্টাইলের পাঞ্জাবি পরা সাব্বির রহমান রুম্মনও প্রায় কাছাকাছি সময় হোটেল ছেড়ে বাইরে গেলেন।

বোঝাই গেল, ঈদের দিন নিশ্চয়ই লন্ডনে নিকটাত্মীয় কিংবা বন্ধুবান্ধব আছেন- তাদের আমন্ত্রণ হয়তো উপেক্ষা করা সম্ভব হয়নি। আর প্র্যাকটিসও সন্ধ্যায়। কাজেই ততক্ষণে ঘুরেও আসা যাবে- এই ভেবে চলে যাওয়া।

বিশ্বকাপ অনেক বড় মিশন। কঠিন চ্যালেঞ্জ। চার বছরে আসে মাত্র একবার। হতে পারে বাংলাদেশ দলের অনেকেরই এটা শেষ বিশ্বকাপ। অধিনায়ক মাশরাফির যে শেষ বিশ্বকাপ, তাতে সন্দেহ নেই অতিবড় মাশরাফি ভক্তরও।

তাই পুরো দল সিরিয়াস। দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে ম্যাচের আগে ও পরে অধিনায়ক মাশরাফি বলেছিলেন,’ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ ছাড়াও আমাদের সামাজিক ও নাগরিক জীবনে ঈদ মানেই উৎসব-আনন্দ। তবে এবার আমরা ঈদটাকে একটু অন্যভাবে পালন করবো। যেখানে ধর্মীয় নিয়মকানুন ও রীতিমানা এবং খুশি-আনন্দ থাকলেও ঈদের খুশি ও আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে মূল কাজ ও মনোযোগ-মনোসংযোগ থেকে বিচ্যুৎ হওয়া যাবে না।’ কিন্তু বাস্তবতা হলো তিনিও নামাজ শেষে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে বের হলেন দুপুরে।

এদিকে শেষ খবর, লন্ডনের আকাশ ও আবহাওয়া তেমন ভাল না। সেই সকাল থেকেই কম বেশি কনকনে বাতাস, মেঘলা আকাশ আর ইলশে গুঁড়ি বৃষ্টি। দুপুরের পর থেকে তা বেড়েছে। ওভালের পিচ এবং মাঠের একটা অংশ পুরো সাদা কভারে ঢাকা। বলার অপেক্ষা রাখে না, ওভালে শেরে বাংলার মত একাডেমি বা পাশে ইনডোরে নয় মাঠের ভিতরই সেন্টার উইকেটেই নেট হয়।

কারণ, পুরো মাঠের পূর্ব থেকে পশ্চিমে পিচের ছড়াছড়ি। বাংলাদেশের মত পাঁচ, ছয় বা সাতটি পিচ নয়। আগের দিন কথা প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজন জানিয়েছেন, ওভালে একসঙ্গে ৩৫ থেকে ৪০টির মত পিচ আছে। পিচের সংখ্যার বর্ণনা দিতে গিয়ে সুজন জাগো নিউজকে জানান, ‘আমি নিজেই একসঙ্গে ২৯টি পিচ দেখে কিউরেটরকে জিজ্ঞেস করি তোমাদের সেন্টার উইকেট কয়টি? তিনি বলেছেন ৪০টির বেশী।’

দুপুরের পর থেকে আবহাওয়া প্রতিকূল থাকায় পিচ ঢেকে রাখা হয়েছে। সামনের দুই ঘন্টায় আবহাওয়ার উন্নতি না ঘটলে বাংলাদেশের ওভালের সেন্টার উইকেটে নেট করার সম্ভবনা কম বলেই মনে হচ্ছে।

এসএইচ-০৪/০৫/১৯ (স্পোর্টস ডেস্ক)