২০ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে নিউজিল্যান্ডে যান চাঁদপুরের সেলিম

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার মোজাম্মেল হক সেলিমের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। ছেলের মুত্যুর খবরে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন মা আমেনা বেগম। কাঁদতে কাঁদতে তার চোখের পানি শুকিয়ে গেছে। রোববার দুপুরে উপজেলার খাদের গাঁও ইউনিয়নের হুরমাহিশা গ্রামে মিয়াজী বাড়িতে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।

নিহত সেলিমের বড় ভাই শাহাদাত হোসেন মিজি বলেন, সেলিম সাড়ে তিন বছর আগে একটি প্রাইভেট মেডিকেল থেকে পড়াশোনা শেষ করে উচ্চ শিক্ষার জন্য নিউজল্যান্ডে গিয়েছিল। তিন ভাই মিলে মতলবের নারায়ণপুর শাখা অগ্রণী ব্যাংক থেকে প্রায় ২০ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে সেলিমকে বিদেশে পাঠাই। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে তার ইমু নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। পরবর্তীতে তার এক বন্ধুর কাছ থেকে জানতে পারি সেলিম সন্ত্রাসী হামলায় মারা গেছে।

নিহত সেলিমের মা আমেনা বেগম ছেলে হত্যার বিচার দাবি করে বলেন, সরকার যেন আমার ছেলের মরদেহ আমার কাছে ফিরিয়ে দেয়।

সেলিমের মেজো ভাই আব্দুল মালেক বলেন, সেলিমের মৃত্যুর খবর শুনে আমরা এখন দিশেহারা। কারণ তাকে নিয়ে আমাদের অনেক স্বপ্ন ছিল। তার মৃত্যুতে এখন সব ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। সেলিমকে বিদেশ পাঠাতে গিয়ে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছি আমরা।

নিহত সেলিমের মামা দেলোয়ার হোসেন বলেন, সেলিম তিনভাইয়ের মধ্যে ছোট। সে খুবই ভদ্র ও শান্ত প্রকৃতির ছেলে ছিল। নারায়ণপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করে সে ঢাকায় চলে যায়। সেখান থেকে এইচএসসি পাস করার পর সেলিম ঢাকার মিরপুর মার্কস মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়। সেখান থেকে ডেন্টাল বিষয়ে বিএসসি ইন ডেন্টিস্ট সম্পন্ন করে ২০১৫ সালে নিউজল্যান্ডে চলে যায়।

মতলব দক্ষিণ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল হোসেন বলেন, বিষয়টি আমরা জেনেছি এবং খোঁজ-খবর নিচ্ছি।

মতলব দক্ষিণ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম গিয়াসউদ্দিন বলেন, বিষয়টি জানার পর আমরা স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নুরুল আমিন রুহুলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তিনি বলেছেন এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার কথা হয়েছে।

বিএ-১৬/১৭-০৩ (আঞ্চলিক ডেস্ক)