আবরার হত্যায় জড়িতদের মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

মঙ্গলবার সচিবালয়ে সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ মন্তব্য করেন।

গত ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে শেরেবাংলা হলে তার রুম থেকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় মঙ্গলবার পর্যন্ত ছাত্রলীগের নেতাসহ (বহিষ্কৃত) ২০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

এ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আবরারের এ ঘটনার সাথে যারা জড়িত আজ আর কাল আমার মতে মৃত্যুদণ্ডই হওয়া উচিত। আদালত কী করবে জানি না। মৃত্যুদণ্ড হওয়া মানে কয়েকটা বাংলাদেশের মেধাবী কয়েকটা সন্তান চলে গেলে, হারিয়ে গেলে, দেশ তো ক্ষতিগ্রস্ত হলো। শুধু আবরারের জন্য নয়, যারা এ অপকর্মটি করেছে তাদের জন্য, তারাও তো মেধাবী ছাত্র। এমনকি ভ্যান চালায় পিতা এমনও তো আছে।’

যারা এদের সন্ত্রাসী বানিয়েছে বা মদদ দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে- জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, “ছাত্রলীগ ‘অ্যাজ এ হোল’ তো এ ঘটনার সাথে জড়িত নয়। এ ধরনের হত্যাকাণ্ড কতো ক্ষতিকর সরকার নিশ্চয়ই বিব্রত হয়েছে। রুলিং পার্টির ছাত্র সংগঠনের ব্যানারে হয়েছে, এটার সাথে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগকে জড়িত করা ঠিক নয়।

এ ধরনের ব্যাপার বিচ্ছিন্নভাবে ঘটনা যারা ঘটিয়েছে কেইস টু কেইস বিচারও হচ্ছে। গুটিকয়েকের জন্য গোটা পার্টিকে তো দায়ী করতে পারি না। সরকার ক্ষমতায় আছে আমাদের দায় আছে, এ ধরনের ঘটনায় সরকার ও দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। আমরা বিবেকের রায় থেকে ত্বরিত ব্যবস্থা নিয়েছি।’

আববার হত্যার ঘটনায় বুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, ‘দাবি তো সবই মেনে নেয়া হয়েছে, তাহলে এখন কেন আন্দোলন এটা প্রশ্ন জাগতে পারে। সেজন্য যারা আন্দোলকারী শিক্ষার্থীরা আছে, বিভিন্ন সংগঠন আছে, সবার কাছে অনুরোধ করব, যেহেতু সরকার অভিযুক্তদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নিয়েছে, যেহেতু তাদের দাবি মেনে নেয়া হয়েছে এবং এই অহেতুক আন্দোলন না করে পড়াশোনায় মনোনিবেশ করা দরকার। তাদের ক্যাম্পাসে নিজেদের লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করা প্রয়োজন।’

সিঙ্গাপুরে স্বাস্থ্য পরীক্ষার সময় সেখানে যাওয়া বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে দেখা হয়েছিল কি না- জানতে চাইলে কাদের বলেন, ‘দেখা হলে ভালো হতো। দেখা হয়নি। আমি যেদিন পৌঁছেছি তার আগের দিন তিনি চলে আসেন।’

মেজর হাফিজকে গ্রেফতার করা হলো, বিএনপির ক্ষেত্রে কী সরকার হার্ডলাইনে যাচ্ছে- এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘হার্ডলাইনে যাওয়ার পক্ষপাতি আমরা না। আমরাও কোনো সংঘাতে যেতে চাই না।’

বিএনপি প্রতিটি ব্যাপারে আন্দোলনের ইস্যু খুঁজছে মন্তব্য করে কাদের বলেন, ‘আবরার হত্যাকাণ্ডে আমরা ত্বরিত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মূল ঘটনার সাথে যারা জড়িত তারা গ্রেফতার হয়েছেন। আবরার হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিএনপির কোনো উদ্বেগ নেই, এটি নিয়ে তারা আন্দোলন করতে চান। তা না হলে তারা এখন কেন উসকানি দেবে? এখানে তাদের আন্দোলন ইস্যু তৈরির চেষ্টা করছে, উসকানি দিয়ে দেশে একটা বিশৃঙ্খলা তৈরি করা যায় কি-না।’

তাহলে এ চক্রান্তের অংশ হিসেবে বুয়েটের আন্দোলন করা হচ্ছে কি-না, জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘না সেভাবে আমি বলব না, সাধারণ শিক্ষার্থীদের অনেক আবেগ আছে সেন্টিমেন্ট আছে। আমি তাদের অনুরোধ করেছি পড়াশোনায় ফিরে যাওয়ার জন্য।’

বিএ-১০/১৫-১০ (ন্যাশনাল ডেস্ক)