চলছে ভোট, ঘটছে সংঘর্ষ

সকাল ৮টা থেকে রাজধানীর কেন্দ্রগুলোতে শুরু হয়েছে দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। শুরুতে ভোটার সংখ্যা কম ছিল। পোলিং এজেন্ট নিয়োগ, কেন্দ্রে প্রবেশে বাধাসহ নানা অভিযোগও এসেছে। অন্যদিকে বিচ্ছিন্ন কিছু সংঘর্ষের খবরও পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে কাউন্সিলর প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও মারধরের ঘটনাও ঘটছে। এমনকি সাংবাদিক মারধরের খবরও মিলেছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে আমাদের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট সোহেল রানা জানান, শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করার সময় রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জাফরাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ে এক সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। রক্তাক্ত অবস্থায় প্রথমে তাকে সিকদার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

আহত সাংবাদিক মোস্তাফিজুর রহমান সুমন অনলাইন নিউজ পোর্টাল আগামী নিউজে কর্মরত। তার বাড়ি সাতক্ষীরা। তিনি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সদস্য।

সকালে তেজগাঁওয়ের সিভিল এভিয়েশন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের দুই কাউন্সিলর আবদুল্লাহ আল মঞ্জু ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফ উদ্দিন কাঞ্চনের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে কেন্দ্রটি কিছুটা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফ উদ্দিন কাঞ্চনের মেয়ে নাজলী আশরাফ সঞ্চারী সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমার বাবা স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় মঞ্জু আঙ্কেলের ছেলেরা আমাকে মেরেছে। কেন্দ্র থেকে আমাদের সব এজেন্ট বের করে দেওয়া হয়েছে।’

কাউন্সিলর প্রার্থী কাঞ্চন বলেন, ‘আমাকেও মারধর করা হয়েছে। আমার সাত সমর্থক আহত। তাদের সোহরাওয়ার্দীসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আমার মেয়েকেও মারধর করা হয়েছে।’

গেন্ডারিয়া হাইস্কুলে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে বেশকিছু চেয়ার ভাঙচুর করা হয়। এই ওয়ার্ডে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়। পরে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন।

এছাড়া, মেন্ডারিয়ার মনিজা উচ্চ বিদ্যালয় ও ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। পরে সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা তাদের নিয়ন্ত্রণে আনেন।

বনশ্রী আইডিয়াল স্কুলের ধানের শীষের পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই কেন্দ্র পরিদর্শনে এসে বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আওয়াল দাবি করেন, তিনি যে দুই কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন সেখানে ধানের শীষের পোলিং এজেন্টদের মারধর করে বের করে দেওয়া হয়েছে।

তবে আওয়ামী লীগের পোলিং এজেন্টরা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সাংবাদিকদের কাজ করতে বাধা দেয় পুলিশ। দায়িত্বরত এএসআই দেলোয়ার সাংবাদিকদের প্রশ্ন করেন, ‘এখানে আপনাদের এতো কাজ কিসের?’

গেন্ডারিয়ার ফরিদাবাদ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রার্থী মিনুর সমর্থকরা বিদ্রোহী প্রার্থী মর্তুজা জামালের বুথ ভাংচুর করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

মিরপুর ১০ আদর্শ স্কুল সেন্টারে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এর অভিযোগ উঠেছে বিএনপির সমর্থকদের বিরুদ্ধে। ওই কেন্দ্রের বাইরে বুথেও আগুন দেওয়া হয়।

ভোট দেওয়াকে কেন্দ্র করে সরকারি বিজ্ঞান কলেজ কেন্দ্রে সকালে স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা। এরফলে কেন্দ্রটির আশপাশেও পরিবেশ কিছুক্ষণ উত্তপ্ত থাকে।

কাঁঠালবাগানের খান হাসান স্কুল কেন্দ্রে সকাল পৌনে ১০ টার দিকে বিএনপির কমিশনার প্রার্থী ২০-২৫ জন সমর্থক নিয়ে ভোট দিতে যান। তবে তাদের ধাওয়া দিয়ে এলাকাছাড়া করে আরেকটি পক্ষ। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এসএইচ-০৮/০১/২০ (ন্যাশনাল ডেস্ক, তথ্য সূত্র : সারাবাংলা)