ঝালকাঠিতে আইনজীবী হত্যায় ৫ জঙ্গির ফাঁসি বহাল

ফাইল ছবি

ঝালকাঠি আদালতের সাবেক সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ও জেলা জামায়াতের সাবেক আমির হায়দার হোসাইন হত্যা মামলায় নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) পাঁচ জঙ্গির ফাঁসির রায় বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।

এ মামলায় ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল শুনানি করে বিচারপতি সৌমেন্দ্র সরকার ও বিচারপতি শাহেদ নূর উদ্দিনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রায় দেন। রোববার এ রায়ের অপরারেটিভ পার্ট ঘোষণা করলেও সোমবার রায়ের পূর্ণাঙ্গ অংশ ঘোষণা শেষ করেন আদালত।

ফাঁসির আদেশ বহাল থাকা পাঁচ আসামি হলেন- বরগুনার বেল্লাল হোসেন ও আবু শাহাদাৎ মো. তানভীর ওরফে মেহেদী হাসান, খুলনার মুরাদ হোসেন, ঢাকার ছগির হোসেন ও আমীর হোসেন। আসামিদের মধ্যে বেল্লাল হোসেন পলাতক রয়েছেন, বাকিরা কারাগারে।

আদালতে আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন এসএম শাহাজান। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ।

পরে আদালত থেকে বেরিয়ে বশির আহমেদ জানান, আসামিদের বিরুদ্ধে আনা সাক্ষ্য-প্রমাণ ও পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনা করে হাইকোর্ট পাঁচ আসামিরই ফাঁসির আদেশ বহাল রেখেছেন। আসামিরা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আপিল করলে আপিল বিভাগে তা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তাদের সাজা স্থগিত থাকবে। আপিল বিভাগে নিষ্পত্তি হওয়ার পরেই তাদের সাজা কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরু হবে।

২০০৭ সালের ১১ এপ্রিল জেএমবি ক্যাডারদের গুলিতে নিহত হন হায়দার হোসাইন। তিনি ২০০৫ সালে জেএমবির আত্মঘাতী হামলায় নিহত ঝালকাঠি জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সোহেল আহম্মেদ এবং জগন্নাথ পাঁড়ে হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন। দুই বিচারক হত্যা মামলায় ২০০৬ সালের ২৯ মে শায়খ আবদুর রহমান, সিদ্দিকুল ইসলাম, জেএমবির সামরিক শাখার প্রধান আতাউর রহমানসহ সাতজনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছিলেন আদালত।

মামলা পরিচালনার সময়ই হায়দার হোসাইনকে হত্যার হুমকি দিয়েছিল জেএমবি। শায়খ আবদুর রহমানসহ সাত জঙ্গির ফাঁসির আদেশ কার্যকর হয় ২০০৭ সালের ২১ মার্চ। এর ২০ দিন পর হায়দার হোসাইনকে গুলি করে হত্যা করে জেএমবির ক্যাডাররা।

এ ঘটনায় হায়দার হোসাইনের ছেলে তারিক বিন হায়দার অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে ঝালকাঠি থানায় হত্যা মামলা করেন। তিন বছর তদন্ত শেষে ২০১০ সালের ১৭ জানুয়ারি জেএমবির পাঁচ ক্যাডার বরগুনার বেল্লাল হোসেন ও তানভীর ওরফে মেহেদী হাসান, খুলনার মুরাদ হোসেন, ঢাকার ছগির হোসেন ও আমীর হোসেনকে দোষী সাব্যস্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে সিআইডি।

পরে বিচার শেষে সাবেক এই পিপি হত্যা মামলায় ২০১৫ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ঝালকাঠির একটি আদালত পাঁচ আসামিকে ফাঁসির আদেশ দেন। পরে মামলাটি ডেথরেফারেন্স হিসেবে হাইকোর্টে আসে। এছাড়া আসামিদেও পক্ষ থেকেও আপিল করা হয়। ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি কওে হাইকোর্ট রায় দেন।

বিএ-০২/১০-০২ (আঞ্চলিক ডেস্ক)