আবারও ছুটবে ডেমু ট্রেন

আবার রেলওয়ে ট্র্যাকে (রেলপথ) ছুটবে ডিজেল-ইলেকট্রিক মাল্টিপল ইউনিট অর্থাৎ ডেমু ট্রেন। চীন থেকে আমদানি করা এসব ট্রেন দীর্ঘদিন অকেজো হয়ে পড়েছিল। বাংলাদেশের প্রকৌশলীরা নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডেমু ট্রেন সচল করার মাধ্যমে অসাধ্য সাধন করেছেন। কয়েকদিনের মধ্যে নির্দিষ্ট রুটে নামানো হবে সদ্য মেরামত করা ডেমু ট্রেন। দিনাজপুর রুটে চলবে দুটি ডেমু ট্রেন।

দিনাজপুর পার্বতীপুরে কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ কারখানার (কেলোকা) প্রধান নির্বাহী (সিএক্স) প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, দেশের প্রকৌশলীরা চীনের লুকিয়ে রাখা প্রযুক্তি হটিয়ে নিজেদের প্রযুক্তি ব্যবহার করে দিনাজপুরের পার্বতীপুর ডিজেল ওয়ার্কশপে সচল করেছে ডেমু ট্রেন। দেশি প্রযুক্তিতে ডেমু মেরামত আমাদের বিশাল অর্জন। একে বড় সাফল্য বলা যেতে পারে। এ প্রযুক্তিতে ট্রেন মেরামত করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হয়েছে। তবে এ ধরনের ডেমু মেরামতের জন্য আমাদের ডেডিকেটেড রেলওয়ে কারখানা প্রয়োজন।

সাড়ে ৬০০ কোটি টাকা খরচে ২০১৩ সালে বাংলাদেশ রেলে যুক্ত হয় ২০ সেট ডেমু ট্রেন। কিন্তু ৪ বছরও এর সেবা পায়নি মানুষ। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ৪ বছরের মাথায় অচল হতে শুরু করে ট্রেনগুলো। এগুলো সারাতে উৎপাদনকারী চীনা প্রতিষ্ঠান ক্রয়মূল্যের কাছাকাছি অর্থ দাবি করে। খরচের কথা বিবেচনায় মেরামত করা হয়না ট্রেনগুলো।

প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন পর দেশীয় প্রযুক্তিতে সচল করা হলো সেই ডেমু ট্রেনগুলো। শুধু ডেমু ট্রেনের খোলস রেখে সবকিছু পাল্টে দেয়া হয়েছে। সাশ্রয় হয়েছে কোটি কোটি টাকা। এরইমধ্যে সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে ট্রায়াল রান। মডিউল পাল্টে ডেমু ট্রেনে বসানো হয়েছে ইনভার্টার। দেখা গেছে, কোটি টাকার চীনা ব্যাটারি বাদ দিয়ে সুলভ মূল্যের ব্যাটারির সাহায্যেই দিব্যি স্বাভাবিক গতিতে ছুটে চলছে ডেমু ট্রেন।

তিনি বলেন, প্রযুক্তির আগাগোড়া প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে এই অসাধ্য সাধন সম্ভব হয়েছে। দীর্ঘদিন পর ডেমু সচল হওয়ায় রাস্তার দুপাশে ভিড় জমায় সাধারণ মানুষ। সফলভাবে শেষ হয় পার্বতীপুর থেকে লালমনিরহাট পর্যন্ত ট্রায়াল রান। অপেক্ষাকৃত স্বল্প দূরত্বে চলাচল উপযোগী দুইদিকে ইঞ্জিন, মাঝখানে বগি থাকায় এগুলো বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। চালু হলে জনগণ রেলের সুবিধা পাবে। যোগাযোগ মাধ্যম গতিশীল হবে। ডেমু এখন যাত্রী পরিবহনের জন্য প্রস্তুত।

এ প্রসঙ্গে ডেমু সচল করার দায়িত্বে থাকা কেলোকার একজন প্রকৌশলী বলেন, আগামী সপ্তাহে আমরা একটি গাড়ি ছেড়ে দেব যাত্রী পরিবহনের জন্য। তবে নতুনভাবে সংস্কার হয়ে আসা ডেমু আগের মতো যাত্রী পরিবহন করতে পারবে না। এটিতে সর্বোচ্চ এক হাজার যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে পারবে।

তিনি বলেন, আমরা সাতশ’ জনের বেশি যাত্রী নিয়ে পার্বতীপুর থেকে লালমনিরহাট পর্যন্ত সফল ট্রায়াল রান করেছি।

এসএইচ-১১/০৩/২২ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)