মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে ইউরোপে প্রবেশ করছেন বাংলাদেশিরা

ইউরোপে বৈধ-অবৈধ পথে পাড়ি জমানো নতুন কোন খবর না। তবে সমুদ্র পথে পাড়ি জমিয়ে অনেকে সফল হওয়ার কাহিনী দূর থেকে শোনেন। কিন্তু বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন।

মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও জীবনে স্বপ্নের হরিণ ধরতে মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে আফ্রিকার দেশ লিবিয়া থেকে ইউরোপে প্রবেশ করছেন বাংলাদেশিসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের অভিবাসীরা। মৌখিক প্রচারনায় দেখা যায় শিপ দিয়ে তারা ইউরোপের মানবাধিকার দেশ ইতালিতে পাড়ি জমান।

বাস্তবতা হলো শিপ নয় এ যেন মৃত্যুর এক ফন্দি নাম প্লাস্টিকের বোর্ড। প্রত্যক্ষদর্শী এমন অনেকেই আছেন ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে জীবন ঝুঁকি নিয়ে ইউরোপে প্রবেশ করেছেন। তাদের মতে সাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে প্রবেশ করা মানে অনেকটা মহাকাশ জয় করার মত। কারন মহাকাশে থেকে যেমন ফিরে আসার নিশ্চয়তা কম তেমনি সাগর পথে গন্তব্যে পৌঁছাতে না পারলে নিশ্চিত মৃত্যু। তবু যেন মানুষ ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় মৃত্যুর কাফন বুকে জড়িয়ে ভূমধ্যসাগর জয় করেন।

লিবিয়ার সাবেক রাষ্ট্র প্রধান কর্নেল গাদ্দাফির দেশ আফ্রিকা উপমহাদেশের অন্যতম অর্থনৈতিক শক্তিশালী দেশ লিবিয়া। সরেজমিনে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা জানান, গাদ্দাফির আমলে লিবিয়ান নাগরিকরা বেশ সুন্দর জীবন যাপন করেছে। এমন কথাও জানা যায়,গাদ্দাফি ভর্তুকি দিয়ে রাষ্ট্রের নাগরিকদের খাদ্য উৎপাদন করে খাদ্য নিশ্চিত করেছেন। এমনকি আফ্রিকার গরীব দেশের নাগরিকরা লিবিয়ায় এসে জীবনযাত্রার মান পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছেন। একাদিক প্রত্যক্ষদর্শী এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

লিবিয়া থেকে বৈধভাবে প্রবেশকারী বাংলাদেশি নাগরিকসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা ইউরোপের ইতালিকে ট্রানজিট হিসেবে বেছে নেয়। সুত্রমতে, ২০০০ সাল থেকে লিবিয়া হয়ে ইতালিতে পাড়ি জমান অভিবাসীরা। তবে বাংলাদেশিরা ২০০৩ সাল থেকে এ পথটা ইতালিতে প্রবেশে বেছে নেয়।

কিন্তু কালের পরিবর্তে এ পথটা এখন প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। যদিও লিবিয়া থেকে পাড়ি জমানো গেলেও ইতালির বর্তমান সরাষ্ট্রমন্ত্রী অবৈধ কোন অভিবাসীকে গ্রহন করছেনা। সাগর জয় করে ইতালিতে এসে পৌঁছলেও তাদেরকে আবার ফেরত পাঠানোর অনেক ঘটনা দৃশ্যমান রয়েছে। ফলে ভয়ে এখন আগের মত কেউ পাড়ি জমিয়ে ইতালি আসছেনা। এরমধ্যে গত সাত বছর ধরে ইতালির সিজনাল ভিসা বন্ধ করে দিয়েছে ইতালি সরকার।

মধ্যপ্রচ্যের অনেক দেশের নাগরিক সিজনাল ভিসায় ইতালিতে এসে কাজ করার সুযোগ পেলেও। বাংলাদেশকে ব্লাকলিস্টে ফেলে রেখেছে ইতালি সরকার। যার ফলে প্রায় সাত বছর ধরে কোন বাংলাদেশি অভিবাসী ইতালিতে বৈধভাবে প্রবেশ করতে পারছেনা। তাই ইতালির এই শ্রমবাজার নতুন করে পেতে সরকারকে শক্তভাবে উদ্যোগ নেয়া দরকার। তা না হলে বাংলদেশিদের জন্য সহজে ইতালি প্রবেশ করার কোন পথ আর খোলা রইলনা।

এসএইচ-০৭/০৭/১৯ (প্রবাস ডেস্ক)