পরিশ্রমী হিসেবে বাংলাদেশিদের বিশেষ মর্যাদা রয়েছে

মালয়েশিয়ায় প্রায় ৮ লাখেরও বেশি বাংলাদেশির বসবাস। নানা প্রয়োজনে আসতে হয় বাংলাদেশ দূতাবাসে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবাসীদের অবদানকে যথাযথ মূল্যায়ন করে সরকার সেবার আওতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ হাইকমিশন সুপরিসর স্থানে নিয়েছে এবং পাসপোর্টসহ অন্যান্য সেবা প্রদানের জন্য আমপাং এল আর টির পাশে আলাদা ৫ তলা ভবন নিয়ে সেবা দিচ্ছে।

যেখানে একসাথে ৩ হাজার লোকের বসার ব্যবস্থা রয়েছে। আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে পাসপোর্ট সেবা প্রদান করছে। বৃদ্ধি পেয়েছে অনলাইনে সেবা প্রদান এবং সঠিক তথ্যের প্রচারণা।

বিগত বছর গুলোর পরিক্রমায় দূতাবাসের কাজের মান লক্ষণীয়। বিভিন্ন সময় বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, এমপি, মানবাধিকার সংস্থা, সরকারের সচিব, সামরিক ও বেসামরিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা পরিদর্শন করেছেন এবং সার্বিকভাবে দূতাবাস প্রশংসা কুড়িয়েছে।

২০১৫ সালে বর্তমান হাইমকিশনার মহ. শহীদুল ইসলাম যোগদান করার পর বেশ কিছু মৌলিক কাজ হয়েছে যা মাইলফলক হিসেবে স্বীকৃত যেমন, বাংলাদেশকে লেবার সোর্স কান্ট্রির স্বীকৃতি দিয়েছে মালয়েশিয়া সরকার, উভয় দেশের মধ্যে জি-টু-জি প্লাস চুক্তি স্বাক্ষর, প্রধান ৬টি সেক্টরসহ সকল সেক্টরে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগ। রিহায়ারিং, আই কার্ড থ্রি প্লাস ওয়ান কর্মসূচি।

ডিজিটাল পদ্ধতিতে এটেস্টেশন সম্পন্ন করা। পাসপোর্ট সার্ভিসের জন্য আলাদা ভবন নেওয়া, বিপদগ্রস্ত দেশে ফিরে যেতে ইচ্ছুক প্রবাসীদের জন্য ব্যাক ফর গুড কর্মসূচি চালুর মাধ্যমে ইমিগ্রেশনের সাথে পরামর্শ করে ইপো পেরাক ও কুয়ান্তান ইমিগ্রেশনে অবৈধ বাংলাদেশি কর্মীদের নিয়ে যাবার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

অপেক্ষমানদের মধ্য থেকে যাদের ফ্লাইট নিকটে তাদের তালিকা প্রস্তুত করে এসব বাংলাদেশিদের নিয়ে ৪টি বাস রওয়ানা করে ইপু-পেরাক ও কোয়ান্তান ইমিগ্রেশন। জরুরি ফ্লাই করতে হবে এমন ২০০ জনকে ইপু-পেরাক ও কোয়ান্তান ইমিগ্রেশন থেকে স্পেশাল পাস সংগ্রহ করে দেয়া হয়েছে। অবৈধ শ্রমিকদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য ১৪ ডিসেম্বর থেকে কুয়ালালামপুর-ঢাকা রুটে ১৬টি অতিরিক্ত ফ্লাইট দিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।

একই সঙ্গে এ ১৬টি ফ্লাইটে বাংলাদেশ সরকার টিকিটপ্রতি ১২ হাজার টাকা করে ভর্তুকি দিয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশি কর্মীদের প্রতিটি টিকিটে বাংলাদেশ বিমান ২ হাজার টাকা ছাড় দিয়েছে। আর ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের তহবিল থেকে ভর্তুকি দেয়া হয় ১০ হাজার টাকা করে।

এ ছাড়া প্রতিমাসে দুটি করে ক্যাম্প পরিদর্শন করা হয়। ক্যাম্পে বাংলাদেশি কর্মীদের সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার সাথে সাথে দেশে প্রত্যাবর্তনে সরকারের পাশাপাশি জনহিতৈশীদের সহযোগিতায় দ্রুত দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয় বলে জানান মিশনের সংশ্লিষ্টরা।

মালয়েশিয়ায় বিদেশি কর্মীদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নতুন বীমার আওতায় বিদেশি কর্মী নিবন্ধিত হচ্ছেন। এর আওতায় দুই লাখেরও বেশি বাংলাদেশি কর্মী নিবন্ধিত হয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
এ প্রক্রিয়ায় কোম্পানি সকসোর অধীনে কর্মীদের নাম নিবন্ধন করছে। বাংলাদেশ ২য় স্থানে থাকলেও ইন্দোনেশিয়াকে ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে দেশটিতে কর্মরত বৈধ বাংলাদেশি কর্মীদের শতভাগ বীমার আওতায় নিয়ে আসতে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা নিরলস চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। নিবন্ধন নিশ্চিত করার জন্য নিয়োগকর্তা এবং সকোসোর সাথে নিয়মিত বৈঠক করে অগ্রগতি ফলো আপ করছেন দূতাবাসের সংশ্লিষ্টরা।

ফরেন অফিস কনসালটেশন হওয়া, সোকেস বাংলাদেশ, বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং বাংলাদেশে বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় অন্যতম দেশ হিসেবে মালয়েশিয়ার সাথে দ্বিপাক্ষিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের উন্নতি যে কোনো সময়ের তুলনায় অনেক উচ্চতায় অবস্থান করছে। হাইকমিশনের কাজের দক্ষতা এবং নাগরিকদের সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে দূতাবাসের কর্মযজ্ঞ মালয়েশিয়ান সরকারের কাছে বিশেষ অবস্থা অর্জন করেছে।

সুদূরপ্রসারী, লক্ষ্যাভিসারী, রেজাল্ট ওরিয়েন্টেড এবং ‘টিম ওয়ার্ক’ এর এবং ইতিবাচক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ‘ঢাকার চোখে’ মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে।

এসব বিবেচনায় মালয়েশিয়ার পারটুবুহান পেঙ্গুসাহা বুঙ্গান বুঙ্গানান (অ্যাসোসিয়েশন) ক্যামেরুন হাইল্যান্ড কর্তৃক ইতোমধ্যে দূতাবাস প্রশংসা কুড়িয়েছে। দেশের বাইরে এই প্রথম সেবাদানে বিদেশিদের সম্মান কুড়িয়েছে।

পাহাং, দারুল মাকমুর মালয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট লি পেংফো বলেন, দূতাবাসের সব কর্মকর্তার আন্তরিকতার কারণেই ক্যামেরুন হাইল্যান্ডে বসবাসরত বাংলাদেশিরা সহজেই পাসপোর্ট করতে পারছে বলে বাংলাদেশ দূতাবাসের সকল কর্মকর্তাকে সংগঠনের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। ধন্যবাদ জানিয়েছেন সেবাপ্রত্যাশী প্রবাসীরাও।

হাইকমিশনার মহ. শহীদুল ইসলাম বলেন, প্রবাসীদের নিয়েই আমার কাজ। দূতাবাস সবসময় প্রবাসীদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। সকলের সহযোগিতা ছাড়া কোনো কাজ করা সম্ভব নয়। সারাবিশ্বে পরিশ্রমী জাতি হিসেবে বাংলাদেশিদের বিশেষ মর্যাদা রয়েছে।

সাধারণ শ্রমিকদের প্রতি সম্মান জানিয়ে প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে হাইকমিশনার শহীদুল ইসলাম বলেন, শ্রমিকরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে বিষয়টি লক্ষ্য রাখার দায়িত্ব যেমন সরকারের, তেমনি সবার ওপরই কিছু না কিছু দায়িত্ব বর্তায়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের শ্রমিকরা অত্যন্ত পরিশ্রমী। আর মালয়েশিয়ায় কর্মরত অন্যান্য দেশের নাগরিকের তুলনায় এ দেশের আইন-কানুন, নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলার ব্যাপারে আলাদা অবস্থান তৈরি করেছে।

দূতাবাসে ডিজিটালাইজড পদ্ধতি ভিসা চালু হওয়ায় মালয়েশিয়ান নাগরিক ও ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশ ভ্রমণে আগ্রহ বেড়েছে ব্যাপক। গড়ে প্রতিদিন ১শ থেকে দেড়’শ ভিসা ইস্যু করা হচ্ছে বলে জানান কন্স্যুলার শাখার প্রথম সচিব মো. মাসুদ হোসেইন।

তিনি জানান, এক বছরে প্রায় ৬ হাজারেরর অধিক ভিসা ইস্যু করা হয়েছে। এর মধ্যে ব্যবসায়িক ভিসা ইস্যু করা হয়েছে প্রায় দুই হাজারেরও অধিক। সূত্র জানায়, দেশটিতে কর্মরত অবস্থায় বাংলাদেশিদের দুর্ঘটনা, মৃত্যু ও ইন্স্যুরেন্সের ক্ষতিপূরণসহ বকেয়া পাওনা আদায়ে দূতাবাসের সংশ্লিষ্টরা কাজ করছেন।

হাই কমিশনার মুহ. শহীদুল ইসলামের দক্ষ কূটনৈতিক তৎপরতায় মিশনের সক্রিয় আইনি সহায়তায় ২০১৯ সালে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন কোম্পানি থেকে ৩ কোটি ৪২ লাখ ১১ হাজার ৫৭৮ টাকার ক্ষতিপূরণ আদায় করতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ হাইকমিশন। এ ছাড়াও বকেয়া বিমার টাকা আদায়ের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানান মিশনের সংশ্লিষ্টরা।

গত আড়াই বছরে মালয়েশিয়া সরকার অবৈধ বিদেশিদের বৈধতার প্রকল্পে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ বাংলাদেশি কর্মী নিবন্ধিত হয়েছেন। নিবন্ধিতদের মধ্যে আড়াই লাখ কর্মী ভিসা পেয়েছেন। এ ছাড়াও বাংলাদেশে ফিরে যেতে ইচ্ছুক কিন্তু মালয়েশিয়ান আইনের কঠোরতা ও জেল জরিমানার ভয়ে দেশে ফিরতে পারছিলেন না তাদের জন্য ব্যাক ফর গুড কর্মসূচি চালু করা হয় যার আওতায় ৫০ হাজার বিপদগ্রস্ত বাংলাদেশি এ সুবিধা নিয়ে দেশে গেছেন।

নতুন কর্মসংস্থানের দ্বার খুলে দেয় জি-টু-জি-প্লাস, এই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশে থেকে এসেছেন দুই লাখের মতো কর্মী। বিগত যে কোনো নিয়োগের তুলনায় এই জি-টু-জি প্লাস প্রক্রিয়ার এমওইউ এর আওতায় কর্মীদের চাকরি, বেতন, আবাসন, চিকিৎসা নিশ্চিত করা হয়েছে।

বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার জরিপে দেখা গেছে যে, জি-টু-জি প্লাসের অধীন শতভাগ চাকরি পেয়েছে যেখানে ২০০৫-০৬ সালে চাকরি প্রাপ্তির হার ছিল ৩৩.৪ শতাংশ এবং অতিরিক্ত লোক আগমনের ফলে অমানবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল ফলে সে সময় মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল। দূতাবাস থেকে কঠোর মনিটর, পরিদর্শন ও নিয়ম পালনের ফলে এবার সে রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি।

হাই কমিশনার মহ. শহীদুল ইসলামের দিক-নির্দেশনায় কর্মকর্তারা প্রবাসীদের সেবা দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন বলে জানান, শ্রম শাখার কাউন্সিলর মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত সকল প্রবাসীদেরকে সুরক্ষা নেটের আওতায় আনার জন্য আমরা কাজ করছি। ফলে প্রত্যেক প্রবাসী যে কোন প্রয়োজনে তাৎক্ষণিক সেবা পাবেন।’

এ ছাড়া মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের রফতানি বৃদ্ধি ও মালয়েশিয়ার বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

এ বিষয়ে দূতাবাসের কাউন্সিলর (বাণিজ্যিক) মো. রাজিবুল আহসান এ প্রতিবেদককে বলেন, বাংলাদেশ এবং মালয়েশিয়ার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধির উদ্দেশ্যেই ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে মালয়েশিয়ার বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার সেরা গন্তব্য। সে বিষয়টি মালয়েশিয়ার ব্যবসায়ীদের বোঝানোর চেষ্টা চলছে।

এক প্রশ্নের জবাবে কাউন্সিলর মো. রাজিবুল আহসান বলেন, মালয়েশিয়া বাংলাদেশের রফতানি পণ্যের ভালো বাজার। মালয়েশিয়ান আসিয়ান বাণিজ্য অঞ্চলের একটি করিডোর হিসেবে ব্যবহার করে আসিয়ানভুক্ত অন্যান্য দেশে বাংলাদেশি পণ্যে ও রফতানি বাজার সম্প্রসারণ করার সুযোগ রয়েছে বলে তিনি জানান।

মালয়েশিয়ার ন্যাশনাল চেম্বার, অ্যাসোসিয়েটেড চাইনিজ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, মালয় চেম্বার অব কমার্স, ফেডারেশন অব মালয়েশিয়ান ম্যানুফ্যাকচার্স, মালয়েশিয়া রিটেইলার্স অ্যাসোসিয়েশন কুয়ালালামপুর, পারদাসামা, কুয়ালালামপুর সেলেঙ্গর ইন্ডিয়ান চেম্বার অ্যান্ড কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, জহুরবারু চাইনিজ চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রিজ, ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব জহুর মালয়েশিয়া, সারওয়াক চেম্বার অব কমার্স, পেনাং চেম্বার অব কমার্স, কুচিং চাইনিজ জেনারেল চেম্বার অব কমার্স, ফেডারেশন অব সাবা ইন্ডাস্ট্রিজ, কোটা কিনাবালু চাইনিজ চেম্বারসহ প্রায় সব জাতীয় ও প্রাদেশিক চেম্বারের নেতাদের সঙ্গে বিভিন্ন সময় এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

আলোচনায় বাংলাদেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সার্বিক সহযোগিতা দিতে সম্মত হন মালয়েশিয়ান ব্যবসায়ী নেতারা। এ ছাড়া মালয়েশিয়ার ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে ইকনোমিক জোনে বিনিয়োগে আগ্রহী।

বর্তমান সরকারের সময়ে মালয়েশিয়ার বাজারে বাংলাদেশের পণ্য রফতানিতে অভাবনীয় অগ্রগতি হয়েছে বলে জানান কমার্শিয়াল উইং প্রধান মো. রাজিবুল আহসান। তিনি বলেন, ২০০৯-১০ সময়ের তুলনায় ২০১৮-১৯ সালে মালয়েশিয়াতে বাংলাদেশের রফতানি বেড়ে ২৭৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশে মালয়েশিয়ান বিনিয়োগ গত বছরের ৬৭৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৯ সালে হয়েছে ৮১৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

জালান আম্পাং বেছারে খোলা হয়েছে পাসপোর্ট আবেদন, তথ্যসেবা, বিনা পয়সায় আবেদন ফর্ম পূরণসহ তাৎক্ষণিক সেবা প্রদানে চালু রয়েছে হটলাইন ও ওয়ানস্টট সার্ভিস।

সরেজমিনে দেখা গেছে, যাদের পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে তারা রি-ইস্যু পাসপোর্টের জন্য আবেদনের সঙ্গে তার ভিসার ফটোকপি সংযুক্ত করে যে ক্যাটাগরির ভিসা রয়েছে সে ক্যাটাগরিতে আবেদন করতে হবে।

সাধারণ শ্রমিক এবং স্টুডেন্টের ব্যাংক ড্রাফ্ট ১১৬ রিঙ্গিত এবং এর সঙ্গে যুক্ত করতে হবে ভিসা ফটোকপি। আর যারা প্রফেশনাল ভিসায় অথবা ট্যুরিস্ট ভিসায় দেশটিতে অবস্থান করছেন তাদের ৩৮৫ রিঙ্গিতের ব্যাংক ড্রাফ্ট করে আবেদন করতে হবে।

এ ছাড়া যাদের পাসপোর্ট হারিয়ে গেছে তাদের জন্য থানায় রিপোর্ট করে আবেদনের সঙ্গে জমা দিতে হবে।

এদিকে মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের (নতুন) রি-ইস্যু আবেদন গ্রহণ ও বিতরণ সকাল ৯টা থেকে ৫টা পর্যন্ত। দূতাবাসের জালান সুলতান ইয়াহিয়া পেট্রায় জন্ম নিবন্ধন, পরিচয়পত্র, প্রত্যয়ন, এলওআই, পারিবারিক সনদপত্র সত্যায়ন, আমমোক্তারনামা, ট্রাভেল পারমিট, মরদেহ সংক্রান্ত কেস আবেদন গ্রহণ, শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ, আইনগত সহায়তা এবং অন্যান্য কল্যাণমূলক ভিসা সংক্রান্ত আবেদন গ্রহণ সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এবং বিতরণ সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে বিকেল ৪টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।

বাণিজ্যিক কাগজপত্র সত্যায়ন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত। আবেদন গ্রহণ এবং বিতরণ একই দিন দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।

এ বিষয়ে দূতাবাসের পাসপোর্ট ও ভিসা শাখার প্রধান কাউন্সিলর মশিউর রহমান এ প্রতিবেদককে বলেন, হাই কমিশনার মুহ. শহীদুল ইসলামের দিক-নির্দেশনায় আমরা প্রবাসী/শ্রমিকদের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।

এ ছাড়া মালয়েশিয়ার জহুর বারু, পেনাং, মালাক্কা, সারওয়াক, ক্যামেরুন হাইলেন্ডসহ দূরের প্রদেশগুলোতে মোবাইল ক্যাম্পিংয়ের মাধ্যমে পাসপোর্ট আবেদন ও ডেলিভারি দেয়া হচ্ছে এবং বন্ধের দিন প্রতি মাসের শনি ও রোববার পাসপোর্ট সেবা দেয়া হচ্ছে। যাতে করে প্রবাসীদের পাসপোর্ট করতে এবং পাসপোর্ট পেতে অসুবিধা না হয়।

মশিউর রহমান বলেন, আগে যেখানে পাসপোর্ট সংক্রান্ত অথবা অন্য সমস্যা সমাধানের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে সিরিয়াল নিতে হত সেখানে এখন দেয়া হচ্ছে তাৎক্ষণিক সেবা। গড়ে প্রতিদিন ১২০০ এর অধিক সেবা প্রত্যাশীদের পাসপোর্ট সমস্যার সমাধান করা হচ্ছে।

পাসপোর্ট সেবার উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে মশিউর রহমান বলেন, ওয়ানস্টপ সার্ভিসের মাধ্যমে সঙ্গে সঙ্গে পাসপোর্ট ডেলিভারি দেয়া হচ্ছে। ২০১৯ সালে এক বছরে ১ লাখ ১৮ হাজার ৪৪৫ টি পাসপোর্ট আবেদনের বিপরিতে ১ লাখ ২৬ হাজার ৭১৪টি পাসপোর্ট বিতরণ করা হয়েছে।

পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় নতুন পাসপোর্ট করতে আসা জামিল হোসেন বলেন, ‘আমরা যেকোনো প্রয়োজনে সহজেই দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি এবং খুব দ্রুত সেবা পাচ্ছি। আগে চাইলেই কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব ছিল না। এখন পাসপোর্ট এবং ভিসার ব্যাপারে সহজেই কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়। আমরা দূতাবাসের উন্নত সেবা পাচ্ছি’।

প্রবাসী জুয়েল আহমদ এ প্রতিবেদককে বলেন, হাইকমিশনের বর্তমান সেবা পদ্ধতি সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। এ পদ্ধতি অব্যাহত থাকায় দালালদের দৌরাত্ম কমে এসেছে। তবে এখনও যারা দালালদের প্ররোচণায় হেনস্তা হচ্ছেন তাদেরকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।

এসএইচ-০৫/০১/২০ (প্রবাস ডেস্ক)